আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা লাশের ওপর দিয়ে করতে হবে: মামুনুল হক
Published: 21st, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের কোনো চেষ্টা বরদাশত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘এ দেশের তৌহিদি জনতা তাদের বিদায় করেছে, তাদের পুনর্বাসনের কোনো চেষ্টা বরদাশত করা হবে না। যদি দেশে আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে তা আমাদের লাশের ওপর দিয়ে করতে হবে।’
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটকে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই হুঁশিয়ারি দেন মামুনুল হক। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলা, গণহত্যা ও ভারতের মুসলমানদের ওপর আগ্রাসনের প্রতিবাদে এই সমাবেশ করা হয়।
এর আগে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে খেলাফত মজলিস। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বর্বর হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
হেফাজতের সমাবেশে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাব, তারা যেন গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহণ করে। আর ভারতকে বলব, যদি আওরঙ্গজেবের সমাধিস্থলে হাত দেওয়া হয়, তাহলে এ দেশের মুসলমানরা বসে থাকবে না। প্রয়োজনে আওরঙ্গজেবের সমাধিস্থলের দিকে লংমার্চ করা হবে।’
গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিসহ তিন দাবিতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশ। আজ ২১ মার্চ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক গণহত য
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)