টেকনাফে নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার
Published: 23rd, March 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ বিজিবি সদস্য মো. বিল্লাল হাসানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (২৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত বিল্লাল হাসান কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিরতলা গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। তিনি টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়িতে সিপাহী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এর আগে, শুক্রবার গভীর রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় টেকনাফে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যায়। এ সময় বিজিবির এক সদস্যসহ নিখোঁজ হন কয়েকজন রোহিঙ্গা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘গত শুক্রবার রাতে সমুদ্রপথে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম পাড়ায় নৌকাটি শনাক্ত করে বিজিবি। বিজিবি সদস্যরা নৌকাটি থামার সংকেত দেন। এ সময় উত্তাল সাগরে ঢেউয়ের তোড়ে নৌকাটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় ওই বিজিবি সদস্য নিখোঁজ হয়েছিলেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘ঘটনার পরপরই বিজিবি ও স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। নৌকাডুবির ঘটনায় ২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ বাকিদের উদ্ধারে এখনো অভিযান চলছে।’’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘‘নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে, রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনায় শিশুসহ চার রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এখনো বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।’’
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া এলাকায় সাগরে ভাসতে দেখেন বিজিবি সদস্যরা। পরে বিজিবি সদস্যরা নৌকাটি থামার সংকেত দেন এবং তাতে ওঠেন। এ সময় উত্তাল সাগরে ঢেউয়ের তোড়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
স্থানীয় জেলে ও বিজিবি সদস্যরা ২৫ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হন। উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের ভাষ্যমতে, ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে ৫০ জনের বেশি যাত্রী ছিল।
ঢাকা/তারেকুর/রাজীব
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ হপর র দ ব প সদস য ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব