সিলেটে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ইফতার মাহফিলে হামলা ও হট্টগোলের ঘটনার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলার আহ্বায়ক আক্তার হোসেন জামিন পেয়েছেন। গ্রেপ্তারের প্রায় ৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি আজ রোববার বেলা ২টার দিকে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালত থেকে জামিন পান। 

এর আগে আক্তারের জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ছগির আহমদ তার জামিন মঞ্জুর করেন বলে নিশ্চিত করেছেন শাহপরান থানার জিআরও শামীমা আক্তার।

আজ রোববার ভোরে সিলেট সদর উপজেলার হাউসা গ্রাম থেকে আক্তারকে গ্রেপ্তার করে মহানগরীর শাহপরান (রহ.

) থানা পুলিশ। আক্তারসহ ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে গতকাল শনিবার রাতে শাহপরান থানায় এনসিপি ইফতার মাহফিলে হামলা ও হট্রগোলের অভিযোগে মামলা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব ও লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান শান্ত। এতে ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। 

গতকাল নগরীর বালুচর এলাকার একটি কনভেনশন হলে এনসিপির ইফতার মাহফিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের দায়িত্বশীল কাউকে বক্তব্যের সুযোগ না দেওয়া নিয়ে হট্রগোল ও দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হন সাংবাদিকরা। এক পর্যায়ে তারা ইফতারের আগমুহূর্তে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ওইদিন রাতে শাহপরান থানায় মামলা করার পর আজ ভোর রাতে আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) সাইফুল ইসলাম সমকালকে জানিয়েছেন, আক্তার হোসেন জামিন পেয়েছেন। তাকে ভোর রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আক্তার সিলেটের মদন মোহন কলেজের ছাত্র ও হাউসা গ্রামের আব্দুল মুনিরের ছেলে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ হপর ন ইফত র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ