জামিন পেলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেটের আহ্বায়ক
Published: 23rd, March 2025 GMT
সিলেটে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ইফতার মাহফিলে হামলা ও হট্টগোলের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলা আহ্বায়ক আক্তার হোসেন জামিন পেয়েছেন। গ্রেপ্তারের প্রায় ৮ ঘণ্টার মাথায় তিনি আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালত থেকে জামিন নেন।
এর আগে আক্তারের জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ছগির আহমদ তার জামিন মঞ্জুর করেন বলে নিশ্চিত করেছেন শাহপরান থানার জিআরও শামীমা আক্তার।
আজ রোববার ভোরে সিলেট সদর উপজেলার হাউসা গ্রাম থেকে আক্তারকে গ্রেপ্তার করে মহানগরীর শাহপরান (রহ.
গতকাল নগরীর বালুচর এলাকার একটি কনভেনশন হলে এনসিপির ইফতার মাহফিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের দায়িত্বশীল কাউকে বক্তব্যের সুযোগ না দেওয়া নিয়ে হট্টগোল ও দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে বাঁধার মুখে পড়েন সাংবাদিকরা। একপর্যায়ে তারা ইফতারের আগ মুহূর্তে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ওইদিন রাতে শাহপরান থানায় মামলা করার পর ভোর রাতে আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) সাইফুল ইসলাম সমকালকে জানিয়েছেন আক্তার হোসেন জামিন পেয়েছেন। তাকে ভোর রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আক্তার সিলেটের মদন মোহন কলেজের ছাত্র ও হাউসা গ্রামের আব্দুল মুনিরের ছেলে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সমন বয়ক শ হপর ন ইফত র
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।
কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’
আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫