গণ–অভ্যুত্থানের ছাত্ররা এখন রাজনীতিতে আসছেন। সে জায়গায় কিছু ক্ষেত্রে ভুল হয়ে থাকলে দেশবাসীকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ টাওয়ারে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ কথা বলেন। এনসিপির ‘শ্রমিক উইং’–এর (শ্রমিক শাখা) আনুষ্ঠানিক যাত্রা উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

আরও পড়ুনহাসনাত আবদুল্লাহর স্ট্যাটাসকে শিষ্টাচারবর্জিত বললেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী২২ মার্চ ২০২৫

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়কারী বলেন, ‘একটি বিশাল বড় অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। আন্দোলন এবং পলিটিক্যাল জায়গা—দুটি আলাদা জায়গা। সে জায়গা থেকে এই গণ–অভ্যুত্থানের ছাত্ররা নিজেদের পলিটিক্যাল জায়গাটায় ট্রান্সফরমেশন করতেছে। সে জায়গাতে কিছু ক্ষেত্রে যদি ভুলত্রুটি হয়ে থাকে, দেশবাসীকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’ এ সময় এনসিপির নেতাদের মধ্যে কোনো দূরত্ব বা বোঝাপড়ার জায়গায় ঘাটতি নেই বলে দাবি করেন তিনি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘তারা (হাসনাত ও সারজিস) যে মিটিংটা করেছে, সেটা আমাদেরকে মিটিং করার পর অবগত করেছে।’ তাঁরা এখনো আলোচনার সুযোগও পাননি যে কী কথা হয়েছে। সেটা তাঁরা ফেসবুক স্ট্যাটাসের মধ্যে দেখেছেন। আজ তাঁদের একটি সভা আছে। একসঙ্গে বসে এ বিষয়ে সবার মধ্যে যতগুলো কনফিউশন (দ্বিধাদ্বন্দ্ব) রয়েছে, সেগুলো স্পষ্ট করা হবে।

এনসিপি ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে বলে মনে করেন না নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, এনসিপির প্রতি মানুষের প্রত্যাশা রয়েছে। সে কারণে মানুষ তাদের পরামর্শ দিয়ে থাকে।

এ সময় এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের প্রধান সমন্বয়কারী মাজহারুল ইসলাম ও যুগ্ম সমন্বয়কারী আলেয়া খাতুন বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুনসেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে হাসনাত ও সারজিসের ফেসবুক পোস্টে দলে অস্বস্তি-অসন্তোষ৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন স র দ দ ন প টওয় র সমন বয়ক র এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ