এবারের ঈদে এলিফ্যান্ট রোডের জুতার বাজারে বেচাকেনা কম। বিভিন্ন দোকানে ছাড় দিয়েও কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা মিলছে না।

আজ শনিবার এলিফ্যান্ট রোডের জুতার দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, জুতার দোকানে হাতে গোনা ক্রেতা এসেছেন। বেশির ভাগ বিক্রয়কেন্দ্রের দোকানিরা ক্রেতা আকৃষ্ট করতে ডাকাডাকি করছেন।

সত্তরের দশক থেকে শুরু হয় এলিফ্যান্ট রোডের জুতার ব্যবসা। আশির দশকে হয়ে ওঠে বেশ জনপ্রিয়। তবে এখন জৌলুশ হারিয়েছে অধিকাংশ জুতার দোকান। ঈদকে কেন্দ্র করে কমেছে বিক্রি। বেশির ভাগ নন-ব্র্যান্ড ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় জুতার বিকিকিনি বেশ মন্দা। তাঁদের ভাষ্য, গত বছরের রোজার শুরুর সময়ে ক্রেতার যে ভিড় চোখে পড়ত, এ বছর সেই তুলনায় অনেক কম।

সব মিলিয়ে এলিফ্যান্ট রোডে ব্র্যান্ড ও নন-ব্র্যান্ড মিলিয়ে অন্তত ২৫০-৩০০টি দোকান রয়েছে। এসব দোকানে ৩০০ টাকার চামড়ার জুতা থেকে শুরু করে ২৫০০ টাকার স্যান্ডেলও পাওয়া যায়। কেডস সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা, চামড়ার জুতা ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা, বুট ২ হাজার থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকায় পাওয়া যায়।

সরেজমিনে যা দেখা গেল

আজ দুপুরে এলিফ্যান্ট রোডের জুতার দোকানগুলোতে সরেজমিনে দেখা গেছে, তীব্র গরম ও রোজাকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের উপস্থিতি তুলনামূলক কম। বেশির ভাগ দোকানেই স্বল্পসংখ্যক ক্রেতা জুতা দেখছেন। এসব ছোট দোকানের বিক্রেতারা বলছেন, নন-ব্র্যান্ডের জুতার বিক্রি গত বছর ঈদের সময়ের তুলনায় কম। তাঁরা জানান, সন্ধ্যার পর ক্রেতার আনাগোনা বাড়ে, সঙ্গে বিক্রিও।

পাঁচ দশক ধরে এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসা করছে ফ্যালকন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়াতে ১০ শতাংশ মূল্যছাড় দিয়েছে। বিক্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জুনায়েদ প্রথম আলোকে জানান, গত বছরে ঈদের আগের শেষ ১০ দিনে প্রতিদিন দুই লাখ টাকার বেশি বেচাকেনা হতো। এ মৌসুমে প্রতিদিন এক লাখ টাকার মতো বেচাকেনা হচ্ছে।

রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবির হাসান। বন্ধুদের নিয়ে স্যান্ডেল কিনতে আসেন তিনি। আজ দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এলিফ্যান্ট রোডে দেশি–বিদেশি সব ধরনের জুতা পাওয়া যায়, দামও কিছুটা কম। তবে তিনি অভিযোগ করেন, বেশির ভাগ বিক্রেতা জুতার দাম বাড়িয়ে ছাড় দিচ্ছেন।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই বিভিন্ন দোকানে ক্রেতা বেড়েছে। বিক্রেতারা জানান, মূল্যছাড় দেওয়া জুতার চাহিদা বেশি। অনেকে জুতা পছন্দ করে দাম বলছেন অর্ধেকের কম।

রাজধানীর পরিবহন ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন ছোটবেলা থেকেই এলিফ্যান্ট রোডে জুতা কিনতে আসেন। তিনি আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ছেলেদের ভালো জুতা পাওয়া যায়। তাই দুই ছেলেকে নিয়ে জুতা কিনতে এসেছি। তবে গত বছর থেকে এ বছর দাম তুলনামূলক বেশি। তাই মূল্যছাড়ের দোকানে ঢুঁ মারছি।

রোজার শুরু থেকে বাটা, অ্যাপেক্স, ওরিয়ন ও বে-এর মতো ব্র্যান্ডের বিক্রয়কেন্দ্রগুলো ভালো ব্যবসা করছে। তবে ব্র্যান্ড নয়, এমন বিক্রয়কেন্দ্রের বিক্রেতারা বলছেন, গত বছরের চেয়ে এ বছরে বিক্রি অনেক কমেছে। নন-ব্র্যান্ডের জুতার দোকান দিপালী সুজের বিক্রয়কর্মী শাকিল হোসেন জানান, প্রতিবছর ২০ রোজার পর থেকে কেনাকাটার ধুম পড়ে যায়। এবার সেই তুলনায় বিক্রি অনেক কম।

এলিফ্যান্ট রোডের জুতার ব্র্যান্ড লোটোর শাখা ব্যবস্থাপক ওয়াইজ কুরুনী প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের তুলনায় জুতা বিক্রি এ বছর ২৫ শতাংশ বেড়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ফ য ন ট র ড র জ ত র ব ব ক রয়ক ন দ র নন ব র য ন ড প রথম আল ক গত বছর র বলছ ন ব যবস এ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

তেহরানে ইন্টারনেট বন্ধ করল সরকার, স্টারলিংক চালু করলেন মাস্ক

ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে ইরান সরকার যখন রাজধানী তেহরানে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ঘোষণা করেছে, তখন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক সেখানে স্টারলিংক স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেছেন বলে জানিয়েছেন।

শনিবার সকালে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে এক পোস্টে মাস্ক লিখেন, “The beams are on,” অর্থাৎ “সংযোগ চালু হয়েছে।”

এর আগে শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলের হামলায় পারমাণবিক স্থাপনার ক্ষতি হওয়ার পর ইরান সরকার রাজধানী তেহরানে ইন্টারনেট সেবা অস্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে। ইরানের যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় দেশটির সাধারণ মানুষ আন্তর্জাতিক সংবাদ ও তথ্যের উৎস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় স্টারলিংকের মাধ্যমে বিকল্প ইন্টারনেট সংযোগ চালু করেন ইলন মাস্ক।

উল্লেখ্য, স্টারলিংক হলো স্পেসএক্সের মালিকানাধীন একটি স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা, যা পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সরবরাহ করতে সক্ষম। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল ও ওয়াশিংটন টাইমস

সম্পর্কিত নিবন্ধ