পুঠিয়ায় ঈদগাহে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা, আহত ৬
Published: 31st, March 2025 GMT
রাজশাহীর পুঠিয়ায় ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে চলে যাওয়া এক স্কুলশিক্ষক ঈদের নামাজ পড়তে বাড়ি ফিরলে ঈদগাহেই তাঁর ওপর হামলা হয়। ওই শিক্ষকের অভিযোগ, তাঁকে নাগালে না পেয়ে হামলাকারীরা তাঁর পক্ষের লোকজনের চারটি বাড়ি ও একটি দোকানঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন। এ ছাড়া তাঁর পক্ষের চারজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া অপরপক্ষের আরও দুজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নন্দনপুর গ্রামে।
এই শিক্ষকের নাম এ এস এম মনোয়ার হোসেন (৪৬)। তিনি নন্দনপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তাঁর অভিযোগ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য আনারুল ইসলাম ওরফে জুম্মা হাজির দুই ছেলের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছে। তবে আনারুলের দাবি, তাঁর ছেলেই প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকাবাসী তাঁদের ধাওয়া করেছে। এ হামলায় আহত হয়েছেন মনোয়ার হোসেনের বড় ভাই জাকির হোসেন (৫২), চাচা মকবুল হোসেন (৫৫), মকবুল হোসেনের আত্মীয় ফজলুল হক (৬০) ও ফজলুল হকের ভাতিজা মোহাম্মদ রকসি (৩৫)।
হামলাকারীরা মনোয়ার হোসেনের বাড়ি ছাড়াও রাশেদুল ইসলাম, গোলাম কিবরিয়া ও মকবুল হোসেনের বাড়ি ভাঙচুর করেছে। তারা মকবুল হোসেনের বাড়িতে লুটপাট করেছে এবং নন্দনপুর বাজারে রাশেদুল ইসলামের সিমেন্টের দোকান ভাঙচুর করেছে। এ ছাড়া তারা মকবুল হোসেনের বাড়িতে লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একসময় নন্দনপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন বিএনপি নেতা আনারুল ইসলাম ওরফে জুম্মা হাজির ভাই। তাঁকে আওয়ামী লীগের সময়ে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয় সহকারী প্রধান শিক্ষক এ এস এম মনোয়ার হোসেনকে। তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর মনোয়ার হোসেন আত্মগোপনে চলে যান। ঈদ উদ্যাপন করার জন্য রোববার বাড়ি ফেরেন মনোয়ার। রাতেই বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। সকালে নামাজ পড়তে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বিএনপির লোকজন তাঁর ওপরে হামলার চেষ্টা করেন।
এই হামলা থেকে বাঁচতে পারলেও মনোয়ার হোসেনের লোকজন আহত হন এবং তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। শিক্ষক মনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, তিনি কোনোরকমে বাড়িতে পালিয়ে ছিলেন, কিন্তু বাড়ির জানালা-দরজা ভাঙচুর করা হয়েছে। তাঁর সমর্থকদের মারধর করা হয়েছে। মনোয়ার দাবি করেন, বরাবরই তাঁর পরিবার বিএনপির রাজনীতি করে। বিএনপি নেতা আনারুল তাঁর চাচাতো ভাই। মনোয়ার জানান, তিনি বিএনপি পরিবারের সন্তান। কিন্তু আওয়ামী লীগের সময়ে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে তাঁকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে যোগ দিতে হয়েছে।
এদিকে আনারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ঈদের নামাজ পড়তে গিয়ে দেখেন সব আওয়ামী লীগের লোক এক জায়গায় হয়েছে। তাঁরা তো এখন কেউ আর আওয়ামী লীগের কথা স্বীকার করছেন না। তাঁরা রাতারাতি বিএনপি হয়ে গেছেন আবার। তাঁরা (আওয়ামী লীগের লোকজন) হামলা করার জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা করছিল। আগেই বলাবলি করছিল ঈদগাহেই আজ কিছু একটা হবে।
আনারুল আরও বলেন, তিনি নামাজ শেষ করে কোলাকুলি করছিলেন। তখনই হামলার ঘটনা ঘটে। ওরা (মনোয়ার হোসেনের লোকজন) প্রথমে তাঁর (আনারুল ইসলাম) ছেলে তামিমকে উসকানিমূলক কথা বলেন। তারপর আরেক ছেলে হামিদের মাথায় বাড়ি দেয়। ভাতিজা রাফিদ ইসলাম মুন্নাকেও মারধর করে। এরপর এলাকার লোকজন তাঁদের তাড়ানি দিয়েছে। একটা দোকান ভাঙচুর করেছে। তবে কারও বাড়িঘর ভাঙচুর করার কথা শুনেননি বলে জানান আনারুল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নন্দনপুরের ঘটনাটি বিএনপি নেতা আনারুল ইসলাম উরফে জুম্মা হাজির পারিবারিক ঘটনা। এটা দীর্ঘদিনের বিরোধের জের। ওখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বাড়িঘর দোকানপাট ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে কবির হোসেন বলেন, সেখানে হালকা-পাতলা একটা ঝামেলা হয়েছে। এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মকব ল হ স ন র র ল কজন মন য় র করছ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে গণপিটুনিতে ডাকাত নিহত
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের দক্ষিণ লক্ষণখোলা এলাকায় গণপিটুনিতে অজ্ঞাত ডাকাত দলের সদস্য (৩৩) নিহত হয়েছে। গতকাল সোমবার ভোরে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডাকাত সদস্য নিহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২জনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলো সোহান(৩০) ও সানী(২৫)। গত রোববার গভীর রাতে বন্দরের দক্ষিণ লক্ষণখোলা মাদ্রসা স্ট্যান্ডে জ্বালানী তেলের দোকান আহাম্মেদ ট্রেডার্সে ডাকাতির সময় জনতার হাতে ধরা পড়ে এক ডাকাত গণপিটুনিতে গুরুত্র আহত হলে পুলিশ খবর পেয়ে আহত ডাকাতকে বন্দর উপজেলা স্ব্যস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দিলে সেখানে সে মারা যায়। জ্বালানী তেলের দোকানের কর্মচারী সানী জানান, তারা দোকানে ঘুমিয়ে ছিলেন। গভীর রাতে ৬জনের ডাকাত দল এসে দোকানের তালা ভেঙ্গে দোকানে ডুকে তাদের মারধর করে। এ সময় তারা ডাক চিৎকার দিলে এলাকাবাসী জড়ো হলে ডাকাতরা পালানোর সময় ২জনকে জনতা ধরে ফেলে এ সময় তাদের গণপিটুনি দেয়ার সময় একজন কৌশলে পালিয়ে গেলেও একজন জনতার গণপিটুনিতে গুত্বর আহত হয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে আহত ডাকাতকে হাসপতালে নিয়ে চিকিৎসা দিলে ডাকাত সদস্য চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ব্যপারে বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি ডাকাতি নাকি চুরি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আর দোকানের মালিক সোহান ও কর্মচারী সানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তবে ডাকাতের পরিচয় সনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ব্যপারে ঘটনাস্থলে আসা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বলেন, সার্ভর সমস্যার কারণে তাৎক্ষনিক পরিচয় সনাক্ত যায়নি। আমরা নিহতের আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করেছি। ঢাকায় নিয়ে তা পরীক্ষা করে পরিচয় সনাক্ত করা হবে।
আরো পড়ুন
সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কমিটি গঠন
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জাসাস’র ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন
মোগরাপাড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা বাবুর
৮নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন
রূপগঞ্জে স্ত্রীর মামলায় ভুয়া পুলিশ অফিসার গ্রেপ্তার
রূপগঞ্জে মামুন হত্যাকান্ডের ঘটনায় পরিবারের সংবাদ সম্মেলন
সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিলে দিনে দুপুরে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই
আড়াইহাজারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কমিটি গঠন
২৩১/১ বঙ্গবন্ধু সড়ক (৬ষ্ঠ তলা, লিফটের ৫)
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবন, নারায়ণগঞ্জ
নির্বাহী সম্পাদক: মোশতাক আহমেদ (শাওন)
ফোন:+৮৮০১৯৩৩-৩৭৭৭২৪
ইমেইল : [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ বা ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
© ২০২৫ | সকল স্বত্ব নারায়ণগঞ্জ টাইমস কর্তৃক সংরক্ষিত | উন্নয়নে ইমিথমেকারস.কম