লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় মোবাইল চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে শ্রমিক দলের এক নেতা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

গতকাল সোমবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

নিহত মো. রাজু (৩৫) সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। তিনি সবুজের গোঁজা এলাকার সফিক উল্যা সবুজের ছেলে।

এ ঘটনায় আটক চারজনের মধ্যে দুজনের নাম জানিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন- সবুজের গোঁজা এলাকার মো.

হারুনের ছেলে কবির হোসেন এবং একই এলাকার নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী রেখা বেগম। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ রাত ৮টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার (৩০ মার্চ) রাত আড়াইটার দিকে সবুজের গোঁজা এলাকায় কাজল কোম্পানির ইটভাটার সামনে রাজুকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে, তিনি কবির হোসেনের বাড়িতে ঢুকে মোবাইল চুরি করতে গিয়েছিলেন। এ সময় স্থানীয়রা তাকে মারধর করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত রাজুর পরিবার দাবি করেছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। রাজুর মা নেহার বেগম, ভাই ওহিদ হোসেন, বোন জেসমিন বেগম ও মেয়ে রুবি আক্তার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন যে, রাতে রাজুর মোবাইল ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেলে তিনি তার ভাতিজা কবিরের ঘরে চার্জ দিতে যান। এ সময় কবির লোকজন ডেকে এনে রাজুকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। রাজুর শরীরে টেঁটা ও ইট দিয়ে আঘাত করা হয়, যা তার মৃত্যুর কারণ হয়েছে।

চররুহিতা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘রাজু চুরির সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে।’

সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, রাজুকে চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। কবির ও রেখাকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হবে। আটক অপর দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: লক ষ ম প র প ট য় হত য সব জ র

এছাড়াও পড়ুন:

রাকসু নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ, প্রার্থী হলে করাতে হবে ডোপ টেস্ট

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশিত হয়েছে। নির্বাচনে প্রার্থী হলে ডোপ টেস্ট করাতে হবে এবং রিপোর্ট পজিটিভ হলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হবে।

এ ছাড়া কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কেউ নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙলে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং প্রার্থিতা বাতিল বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার কিংবা রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী সব দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রাকসুর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এ আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়। আচরণবিধিতে মনোনয়নপত্র, প্রার্থীদের ডোপ টেস্টের বাধ্যবাধকতা, নির্বাচনে প্রচারণা, ছাত্র ও ছাত্রীদের হলে প্রবেশের নিয়মাবলি ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তির বিধান বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, দাখিল ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, প্রার্থী নিজে বা তাঁর মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনো ধরনের মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না। প্রার্থীকে সশরীর উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে হবে। ডোপ টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ না হলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হবে।

নির্বাচনে যানবাহন ব্যবহারের বিধিনিষেধের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমাদান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার বা নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, ব্যান্ড পার্টি ইত্যাদি নিয়ে শোভাযাত্রা, শোডাউন বা মিছিল করা যাবে না। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে বা ভোটকেন্দ্র থেকে ভোটারদের আনা-নেওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনের দিন প্রার্থী, ভোটার, শিক্ষার্থীরা ভোটকেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে নিজ উদ্যোগে বাইসাইকেল ও রিকশা ব্যবহার করতে পারবে।

আচরণবিধিতে নির্বাচনী সভা, সমাবেশ ও শোভাযাত্রার বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে ভোট গ্রহণের ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত সব ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবে। প্রচারণার সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। প্রার্থী ও ভোটার ব্যতীত অন্য কেউ কোনোভাবেই কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচারণা চালাতে পারবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় শুধু সাদা-কালো পোস্টার ব্যবহার করা যাবে। এ ক্ষেত্রে পোস্টারের আকার অনধিক ৬০*৪৫ সেন্টিমিটারের বেশি হবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ভবনের দেয়ালে নির্বাচনসংক্রান্ত লেখা ও পোস্টার লাগানো যাবে না।

কোনো প্রার্থী কিংবা তাঁর সমর্থকেরা অপর কোনো প্রার্থী বা তাঁর সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচারে কোনো বাধা সৃষ্টি (যেমন পোস্টার লাগাতে না দেওয়া, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, পোস্টারের ওপর পোস্টার লাগানো, সভা ও মিছিলে বাধা, মাইক কেড়ে নেওয়া ইত্যাদি) করা যাবে না। একাডেমিক ভবনের অভ্যন্তরে মিছিল বা সমাবেশ এবং শ্রেণিকক্ষের অভ্যন্তরে কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠেয় সভার স্থান ও সময় সম্পর্কে প্রক্টরকে আগে থেকে জানিয়ে অনুমতি নিতে হবে। প্রার্থী পরিচিতি সভা ছাড়া অন্য কোনো সভায় মাইক ব্যবহার করা যাবে না। আবাসিক হলের অভ্যন্তরে কোনো মিছিল করা যাবে না। নির্বাচনের দিনে ভোটার এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যতীত ক্যাম্পাসে অন্য সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে ছাত্রদের আবাসিক হলে ছাত্রী এবং ছাত্রীদের আবাসিক হলে ছাত্র সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে পরিচিতি সভায় প্রবেশ করতে পারবে বলে আচরণবিধিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ভোটাররা নিজ নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করবে। প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার ইস্যু করা পরিচয়পত্র দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট হলের রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে গণমাধ্যমকর্মীরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ