পরাজিত শক্তি নিউ ইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে: রিজভী
Published: 2nd, April 2025 GMT
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, পরাজিত শক্তি নিউ ইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি অবৈধ টাকার মালিক। তারা অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে।
বুধবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ অভিযোগ করেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশে উগ্রবাদের উত্থান ঘটেনি। বরং, বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোঁবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্ম পালন করছে, কথা বলতে পারছে। মানুষ নির্ভয়ে ঈদ পালন করেছেন, ফ্যাসিবাদের দৌরাত্ম্য ছিল না। বিগত দিনে কেউ স্বস্তিতে ঈদ উদযাপন করতে পারেনি। হাসিনার আমলে তা সম্ভব ছিল না।
বিএনপির এ নেতা বলেন, বিশ্বব্যাপী অপতথ্য ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা। শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে যে নাটক করেছে, সেটা বিশ্ববাসী দেখেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে এটা তার রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এক জন সাবেক আইজিপির বইয়েও তা উঠে এসেছে। আওয়ামী লীগ বসে নেই, কালো টাকা খরচ করছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে। আওয়ামী লীগ অবৈধ টাকা অর্জন করে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। আওয়ামী লীগ অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড করছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে যেভাবে মুগ্ধ -ফাইয়াজদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, সে বিষয়ে তার কোনো বক্তব্যে অনুশোচনা নেই। অস্থিরতা তৈরি করতে দেশকে ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারা। প্রশাসনের চারদিকে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, কিছু উপদেষ্টা বিএনপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন কিছু উপদেষ্টা। এক জন উপদেষ্টা ২০০৭ সালেও বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। তিনি এবারও তা করছেন। মেহেরপুরে পেয়াঁজের দাম না পেয়ে এক জন কৃষক আত্মহত্যা করেছে। উপদেষ্টারা সেগুলো নিয়ে কথা বলছে না। তারা সিন্ডিকেট ভেঙে দিলে কৃষক পণ্যের ন্যায্য দাম পেত।
গত দুই দিনে সড়কে ২০-২৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন, উল্লেখ তিনি বলেন, প্রশাসন শক্তভাবে কাজ করলে এত লোক সড়কে প্রাণ হারাত না।
প্রবীণ এ রাজনীতিক আরো বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করা জরুরি। সরকারের জবাবদিহিতা থাকা দরকার। নিজের কাজ বাদ দিয়ে কতিপয় উপদেষ্টা বিএনপির বদনাম করছেন, এটা দুরভিসন্ধিমূলক।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে জানান রুহুল কবির রিজভী।
অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচিত সরকার হচ্ছে বৈধ সরকার। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ স্পষ্ট না করলে ধোঁয়াশা তৈরি হবে।
ঢাকা/মামুন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র ব উপদ ষ ট আওয় ম করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।