বাংলাদেশের মতো এত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কোথাও নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 5th, April 2025 GMT
বাংলাদেশের মতো এত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কোথাও নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাষ্টমী স্নানোৎসব পরিদর্শনে এসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সব সময় আছে। এখানে যত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে, তা কোথাও নেই। আপনারা আশপাশে দেখেন, কোথায় কত কী ঘটে। আমাদের এখানে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সব ভাইবোনেরা একসঙ্গে আছে। সবাই একসঙ্গে কাজ করছে।’
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, স্নান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস—সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করছে। এখানে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কোনো ভেদাভেদ নেই। এখানে সবাই বাংলাদেশি। বাংলাদেশি হিসেবেই তাঁরা সবাই এখানে এসেছেন। এখানে পুণ্যস্নান করে সবাই যাতে পুণ্য থাকতে পারেন, সেই প্রত্যাশা করেন তিনি।
দেশের নিরাপত্তা নিয়ে গুজব ছড়ানো–সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘কোন ইউটিউব চ্যানেল কোথায় কী বলল, অনেকে আছে, মিথ্যা সংবাদ দিলে লোকজন বেশি দেখবে, সে পয়সাটা বেশি পাবে। এ জন্য অনেকে অনেক উদ্দেশ্যে কাজ করে। বিদেশি মিডিয়া, যাদের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক, তারাও অনেক সময় চায় একটি মিথ্যা সংবাদ দিতে। আপনারা সত্য সংবাদ তুলে ধরে তাদের মিথ্যা সংবাদের কাউন্টার দেবেন। তাহলেই তাদের মুখে চুনকালি পড়বে। আমি আশা করব, আপনারা সত্য সংবাদ দেবেন। আমাদের যদি কোনো ভুল থাকে, আপনারা বলেন, কিন্তু কোনো মিথ্যা সংবাদ দেবেন না। এ জন্য আপনাদের আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আরও বলেন, পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে কীভাবে এখানে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা যায়, সেটি দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এটা পর্যটনকেন্দ্র থেকে বেশি পুণ্যভূমি। পর্যটনকেন্দ্র হলে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য যাতে নষ্ট না হয়, সে বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’
এ সময় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, ঢাকা রেঞ্জ পুলিশর ডিআইজি আওলাদ হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আলমগীর হোসেন, বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পাপমোচনের বাসনায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাষ্টমী স্নানোৎসবে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল নামে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৮ মিনিটে স্নানোৎসবের লগ্ন শুরু হয়েছে। স্নানের লগ্ন শেষ হবে আজ দিবাগত রাত ১২টা ৫১ মিনিটে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন আসলেই ধর্মকে ব্যবহারের চেষ্টা দেখা যায় : সালাহউদ্দিন আহমেদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা লক্ষ্য করি নির্বাচন এলেই একটি রাজনৈতিক দল তারা রাজনৈতিক স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করে জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চায়।
যারা ফিৎনা তৈরি করে বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায় তাদের কাছ থেকে আমাদেরকে সাবধান হতে হবে। রাজনৈতিক কারণে কেউ বক্তব্য দিতেই পারে, সেটাকে স্বাগত জানাই।
তবে কেউ যেন আমাদের দ্বীনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে। শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে আজমতে সাহাবা মহাসম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এখানে বয়ান করার যোগ্যতা আমার নেই। আমি এখানে এসেছি বিশিষ্ট আলেম যারা এখানে এসেছেন তাদের বক্তব্য শোনার জন্য। যারা ইসলামকে নিয়ে রাজনীতি করেনা তারা এখানে আছে।
যারা দীনকে আগে এবং দুনিয়াকে পরে মনে করেন, তারাই এখানে আছেন। একারণে আমি এখানে এসেছি। বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ মানুষ মুসলমান। আমরা মদিনার ইসলামকে বিশ্বাস করি। আমরা আমাদের নবীর (সাঃ) ইসলামকে বিশ্বাস করি। আমরা মওদুদির ইসলামে বিশ্বাস করি না।
তিনি বলেন, হাসিনার সরকার ইসলাম বিদ্বেষী ছিল, মুসলিম বিদ্বেষী ছিল। তারা আলেমদের নির্যাতন করেছে। আল্লাহর হুকুমে কীভাবে তাদের রাজনীতির অবসান হয়েছে আমরা তার সাক্ষী।
আমরা যেন এমন ভাবে রাজনীতি করি যার মাধ্যমে আওয়ামী অপরাজনীতি বিলুপ্ত হয়। বাংলাদেশে আদর্শিক রাজনীতি কয়েম করবো আমরা।
জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির জুনায়েদ আল হাবীব আল, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানসহ হেফাজতে ইসলাম ও বিএনপির নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।