শুটিংয়ে আমরা কেঁদেছি, এখন দর্শকরা সিনেমা দেখে কাঁদছেন: এম রাহিম
Published: 6th, April 2025 GMT
সিনেমা হলে ঈদের সিনেমা চলছে রমরমিয়ে। দর্শক পছন্দের সিনেমা দেখতে এসে টিকিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন কিংবা অন্যটি দেখে বাড়ি ফিরছেন। এ কারণে মন খারাপ হচ্ছে অনেকের।
তবে ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জংলি’ সিনেমাটি দর্শকদের মাঝে গল্প নিয়ে বেশ প্রশংসিত হচ্ছে। সিনেমাটি দেখে অনেকেই আবেগ ধরে রাখতে পাচ্ছেন না সে কথা বলছেন প্রকাশ্যেই।
এবার সিনেমাটির পরিচালক এম রাহিম জানালেন সিনেমাটি নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে পরিচালক লিখেছেন,শুটিংয়ের সময় কাউকে বুঝতে দেইনি যে আমি বুকের ভেতর কী নিয়ে শ্যুট করেছি। একটা সময় আর নিজেকে ধরে রাখতে পারতাম না, কখনো কখনো আড়ালে গিয়ে একা কান্না করতাম। এডিটের সময় কান্না করেছি, ডাবিংয়ের সময় করেছি, বিজিএম যখন করেছি, তখন করেছি। ফাইনাল সাউন্ড মিক্সের সময় যখন আউটপুট নিবো; তখন এডিটর, মিউজিক ডিরেক্টর, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারসহ ওখানে উপস্থিত এমন কেউ নেই যে কান্না করেনি।
পরিচালক আরও যুক্ত করেছেন, আর এখন দর্শকের রিঅ্যাকশন দেখে চোখ দিয়ে কখন পানি পড়ছে- বুঝতেই পারিনা। তবে এই কান্না হচ্ছে আত্মতৃপ্তির কান্না। এই কান্না হচ্ছে মায়ার কান্না, প্রাপ্তির কান্না, দর্শকদের ভালোবাসার কান্না।
পরিচালকের স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে যোগাযোগ করা হয় তার সঙ্গে। প্রশ্ন রাখা হয় জংলি সিনেমায় কি শুধুই কান্নার? উত্তরে এম রাহিম বলেন, একেবারেই না। আগেও বলেছি এই গল্পে ভায়োলেন্স, অ্যাকশন ও রোমান্স সব আছে। সঙ্গে আছেন সুন্দর একটি গল্প। যে গল্পটি মানুষদের ভালো লাগছে। তারা রিলেট করতে পারছে। গল্পটি তাদের আবেগে নক করতে পারছে। দর্শক রিঅ্যাকশন দিচ্ছে তারা দেশ ৩০ মিনিট কান্না করছেন। এটা কিন্তু গল্পের ভেতরে প্রবেশর কারণে ঘটছে। শুটিংয়ের সময় আমরাও ওই দৃশ্যগুলো নেওয়র সময় কেঁদেছি। এখন হলে দর্শকরা কাঁদছে। এটিই জংলির সাফল্য।
এম রাহিম পরিচালিত ‘জংলি’ সিনেমায় সিয়াম আহমেদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন শবনম বুবলী, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, দিলারা জামান, শহীদুজ্জামান সেলিম এবং রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ র স ন ম এম র হ ম র সময় ক পর চ ল
এছাড়াও পড়ুন:
লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান
১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।
কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!
দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।
কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।
আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।
অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।
এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।
একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।
বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান