সহায়তাসংক্রান্ত বাজেটে কাটছাঁটের ফলে গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন মৃত্যুহার বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এ মৃত্যুহার কমাতে বছরের পর বছর ধরে চলমান অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়েছে বলেও জানায় বিশ্ব সংস্থাটি।

আজ সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ (ডব্লিউএইচও) জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০০০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী মাতৃমৃত্যুর হার ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। মূলত প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবাগুলো আরও ভালোভাবে হাতের নাগালে আসায় এটি সম্ভব হয়েছে।

কিন্তু এই চিত্র এখন পাল্টে যেতে পারে। জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর ওই প্রতিবেদনে যুক্ত এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও নির্দিষ্ট কোনো সহায়তাসংক্রান্ত বাজেটে কাটছাঁটের কথা উল্লেখ করেনি। তবে মার্কিন সরকারের বিদেশি সহায়তা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) মাধ্যমে তহবিল বন্ধ করার পরিপ্রেক্ষিতে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

ব্রিটেনসহ অন্যান্য দাতা দেশগুলোও সহায়তাসংক্রান্ত বাজেট কমানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।

ডব্লিউএইচওর ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজের সহকারী মহাপরিচালক ড.

ব্রুস অ্যালওয়ার্ড বলেন, ‘প্রধান বার্তাগুলোর একটি হলো, তহবিলে কাটছাঁটের বিষয়টি কেবল (মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসের) অগ্রগতিকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে না, বরং এ ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে পড়তে পারি।’

ব্রুস অ্যালওয়ার্ড আরও বলেন, এই কাটছাঁটের কারণে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর ‘মহামারির মতো প্রভাব’ পড়েছে। ‘আরও কাঠামোগত ও বড় ধরনের প্রভাব’ পড়তে পারে।

ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, এই কাটছাঁটের ফলে অনেক দেশে মাতৃ, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো ইতিমধ্যেই ব্যাহত হচ্ছে। এসব খাতে কর্মীর সংখ্যা কমছে, সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং চিকিৎসার সরবরাহশৃঙ্খল ব্যাহত হচ্ছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ম্যালেরিয়া এবং এইচআইভি চিকিৎসার মতো অন্যান্য ক্ষেত্রেও এই কাটছাঁট মাতৃস্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলবে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সহায়তাসংক্রান্ত বাজেটে কাটছাঁট করার আগেও মাতৃমৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল কিছু দেশ। এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি ২০১৬ সাল থেকে ধীর হয়ে গেছে।

সাম্প্রতিক অগ্রগতি সত্ত্বেও ২০২৩ সালে প্রতিরোধযোগ্য ও চিকিৎসাযোগ্য সমস্যা নিয়ে প্রতি দুই মিনিটে প্রায় একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে। সে বছর এমন মৃত্যু প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার জনে পৌঁছেছিল।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা

অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।

সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।

স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হুতিদের হামলায় সৌদি যুবরাজের লোহিত সাগর বন্দর পরিকল্পনা কি ভেস্তে যাবে
  • গাজায় নৃশংসতা চালিয়ে ইসরায়েল কি পশ্চিমা বিশ্বেও একঘরে হয়ে যাচ্ছে
  • স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থেকে মুক্তি পাকেতার
  • কলকাতায় বাংলাদেশি অভিনেত্রী গ্রেপ্তার , দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমের
  • কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী
  • ওভালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে ভারত, একাদশে চার পরিবর্তন
  • কর্মস্থলে অনুপস্থিত, পাঁচ প্রকৌশলী ও এক স্থপতি বরখাস্ত
  • গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
  • দলবদলের বাজারে চেলসিই রাজা, শীর্ষ দশে আর কারা