উত্তরার সিনেমা হলে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ
Published: 8th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের শিল্পী সমাজের একাংশ। সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর একটি আধুনিক প্রেক্ষাগৃহে ছিল শিহাব শাহীন পরিচালিত ‘দাগি’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী। এই আয়োজনে উপস্থিত অভিনয়শিল্পী, সংগীতশিল্পী, নির্মাতা, প্রযোজক ও সাংবাদিকরা এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে মৌন প্রতিবাদে অংশ নেন।
ফিলিস্তিন গণহত্যার প্রতিবাদে ৭ এপ্রিল সারা বিশ্বে ডাকা হয় ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক’। এতে সমর্থন জানান এ দেশের সাধারণ মানুষ। পূর্ব পরিকল্পিত হওয়ায় একইদিনে অনুষ্ঠিত হয় দাগি সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী। তবে শিল্পী ও সাংবাদিক সমাজের একাংশ সেই প্রতিবাদকে সমর্থন করতে ভোলেননি। আয়োজনেই গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে অংশ নিয়েছেন বিশেষ প্রদর্শনীতে।
এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন দাগি সিনেমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মহেন্দ্র সোনি, ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল। অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তারিক আনাম খান, শহীদুজ্জামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, ইন্তেখাব দিনার, বিজরী বরকতুল্লাহ, আফরান নিশো, তমা মির্জা, সুমন আনোয়ার, সুষমা সরকার, রাশেদ মামুন অপু, এ কে আজাদ সেতু, সোহেল মন্ডল, নির্মাতা শরাফ আহমেদ জীবন, রায়হান রাফী, জাহিদ প্রীতমসহ অনেকে। সংগীতশিল্পী সাজিদ সরকার, মাশা ইসলামও সামিল ছিলেন প্রতিবাদে।
নীরবতা পালন শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে কথা বলেন দাগি সিনেমার সংশ্লিষ্টরা এবং এর পরেই শুরু হয় বিশেষ প্রদর্শনী। সিনেমা দেখে রায়হান রাফী জানান, দাগি পরিবার নিয়ে দেখার মতো সিনেমা। শরাফ আহমেদ জীবন বলেন, ‘দাগি হৃদয়ে দাগ কেটে গেছে। সিনেমার ঢং অনুযায়ী এখানে আফরান নিশো সবচেয়ে মানানসই। এই চরিত্রে অন্য কেউ হলে হতো না।’
সংগীতশিল্পী মাশা ইসলাম উচ্ছ্বাস নিয়ে জানান, গল্পের সঙ্গে গানগুলো সুন্দরভাবে মিলে গেছে। তিনি বলেন, ‘সবার সঙ্গে বড় পর্দায় নিজের গাওয়া গান শুনতে ও দেখতে ভালো তো লাগেই। তবে সবচেয়ে ভালো লেগেছে গানের ব্যবহার। গল্পের সঙ্গে একদম মিলে গেছে।’
বরবাদ সিনেমার প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি ও নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয় উপস্থিত ছিলেন দাগির বিশেষ প্রদর্শনীতে। তারা এর ভূয়সী প্রশংসা করেন। নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয় বলেন, ‘খুবই সুন্দর গল্প এবং নির্মাণের সিনেমা দাগি। শিহাব শাহীন ভাই এবং আফরান নিশো ভাইকে নিয়ে আমার কিছু বলার নাই। আমি সিনেমাটা খুব উপভোগ করেছি।’
প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমিও সিনেমাটি দেখে তাঁর মুগ্ধতার কথা জানান। বলেন, ‘চমৎকার নির্মাণের সিনেমা দাগি।’ বিশেষ প্রদর্শনীসহ চতুর্থবারের মতো দাগি দেখলেন নির্মাতা জাহিদ প্রীতম আর দ্বিতীয়বারের মতো দেখলেন নৃত্যশিল্পী হৃদি শেখ। দুজনেই এই সিনেমা এবং সিনেমার মূল চরিত্র আফরান নিশোর প্রশংসা করেন। হৃদি শেখ জানান, সিনেমাটি দেখে মনে হয়েছে তাঁর মায়েরও দেখা উচিৎ দাগি।
রাজধানীর সিনেপ্লেক্সসহ দেশের আরও কিছু প্রেক্ষাগৃহে মহাসমারোহে চলছে দাগি। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুক্তির দিন থেকেই দর্শকদের উপচেপড়া ভিড় সিনেমাটি দেখতে। দাগি দেখে সাধারণ দর্শকরা নানা মন্তব্য করছেন, যা দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করছে নির্মাতা শিহাব শাহীনকে। জানালেন, প্রায়ই দেখছেন কে কী বলছে সিনেমাটি দেখে। শো হাউজফুল হবার খবর তাঁকে আনন্দিত করে তুলছে।
অন্যদিকে, দর্শকদের এই ভালোলাগা আরও আশা জাগাচ্ছে প্রযোজকদের। বিশেষ প্রদর্শনীতে আরও নতুন কিছু পাওয়ার আশ্বাস দেন এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মহেন্দ্র সোনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফর ন ন শ ঈদ র স ন ম আফর ন ন শ উপস থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।
সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।