বাংলাদেশের কিশোর–কিশোরীদের অনলাইন নিরাপত্তা বাড়াতে নিজেদের ফ্যামিলি পেয়ারিং টুলে একাধিক নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক। নতুন এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে অভিভাবকেরা নিজেদের সন্তানদের টিকটক অ্যাপ ব্যবহার কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে টিকটক।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফ্যামিলি পেয়ারিং টুলে যুক্ত হওয়া নতুন সুবিধাগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘টাইম অ্যাওয়ে’ , যার মাধ্যমে অভিভাবকেরা নির্দিষ্ট সময়ে সন্তানদের টিকটক ব্যবহার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ রাখতে পারবেন। এ ছাড়া সন্তানদের টিকটক অ্যাকাউন্টের কার্যক্রমও দেখতে পারবেন তাঁরা। ফলে সন্তানেরা টিকটকে কোন কোন অ্যাকাউন্ট অনুসরণ করছে বা কোন কোন ব্যক্তি তাদের অ্যাকাউন্ট অনুসরণ করছে, তা জানা যাবে।

নতুন সুবিধা চালুর বিষয়ে টিকটক জানিয়েছে, টিকটক সব সময় নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। ফ্যামিলি পেয়ারিংয়ের নতুন সুবিধাগুলো ডিজিটাল জগতে কিশোর–কিশোরীদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়তে সহায়তা করবে। নিরাপদ ও ইতিবাচক অনলাইন পরিবেশ নিশ্চিত করতে টিকটক সব সময় সচেষ্ট।

নতুন সুবিধাগুলোর পাশাপাশি শিগগিরই ‘প্রোঅ্যাকটিভ রিপোর্টিং অ্যালার্ট’ ও ‘উইন্ড–ডাউন’ নামের নতুন সুবিধা চালু করা হবে বলে জানিয়েছে টিকটক। সুবিধাগুলো চালু হলে ফ্যামিলি পেয়ারিং টুল ব্যবহার না করলেও সব অভিভাবক সন্তানদের টিকটক ভিডিও রিপোর্ট করার তালিকা দেখতে পারবেন। পাশাপাশি রাত ১০টার পর কিশোর–কিশোরীরা টিকটক ব্যবহার করলে পর্দাজুড়ে রিমাইন্ডার প্রদর্শন করবে টিকটক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নত ন স ব ধ ব যবহ র প রব ন

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ভাই-ভাবি-ভাতিজার হামলায় আহত হয়ে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত মনির হোসেন উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। মনির পেশার দিনমজুর ছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এবং সাত ও দেড় বছর বয়সী দুটি ছেলে আছে।

নিহতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মনিরের বড় ভাই বাবুল মিয়ার (৫৫) স্ত্রী জুবায়দা বেগম (৪৫) একটি মাটির চুলা নিয়ে মনিরের বসতঘরের দরজার সামনে রান্না বসান। মাটির চুলার ধোঁয়া বসতঘরে প্রবেশ করলে মনির আপত্তি জানান। এতে বাবুলের স্ত্রী উচ্চস্বরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। মনির প্রতিবাদ করলে বাবুল মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া (১৫) এগিয়ে এসে চাচা মনিরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শাওন দা নিয়ে মনিরকে মারতে এগিয়ে এলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় বড় ভাই বাবুল, সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৩) ও ছেলে ইমন (২৬) এবং শাওন লাঠি ও কাঠ দিয়ে মনিরকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইট দিয়ে মনিরের মাথায় আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন মনিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে শহরের বেসরকারি সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মনিরের মৃত্যু হয়।

হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সাতটার দিকে ইসিজি পরীক্ষায় কোনো স্পন্দন না পাওয়ায় ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করি।’

নিহত ব্যক্তির স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, ‘বসতঘরের সামনে মাটির চুলা এনে রান্না শুরু করেন বাবুল ভাইয়ের স্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বকবক করছিলেন। আমার স্বামী পাল্টা কথা বলেন। এতে ভাতিজা শাওন দা নিয়ে স্বামীকে মারতে এগিয়ে আসে। স্বামীর বড় ভাই বাবুল ছেলেরে বলেছে, “ওরে ধর বেশি করে বাইরা।” তখন বাকিরা লাঠি, কাঠ ও ইট দিয়ে মারধর করে। শাওন আগেও স্বামীকে মারতে এসেছিল।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটির চুলার ধোঁয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়ার উৎপত্তি। নিরীহ ছেলেটাকে একা পেয়ে তারা সবাই মারধর করে মেরে ফেলেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাবুল মিয়াসহ অন্যদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সদর থানা-পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম রকীব উর রাজা ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সদর থানার কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ