মধ্যরাতে মিরপুর ১ নম্বরে দুই পক্ষের গোলাগুলি, আহত ৩
Published: 16th, April 2025 GMT
রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের ঈদগাহ মাঠের কাছে গতকাল মঙ্গলবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন ওরফে রকি (২৫) নামের এক যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল দিবাগত রাত ১২ টার দিকে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সদস্যসচিব সাজ্জাদুল মিরাজের অনুসারী জহিরের সঙ্গে মিরপুর ১ নম্বর ঈদগাহ মাঠ এলাকার একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রধান ডুকু রুবেলের এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এর কিছুক্ষণ পর ডুক্কু রুবেল তাঁর দলবল নিয়ে ঈদগাহ মাঠ এলাকায় থাকা যুবদল নেতা সাজ্জাদুল মিরাজের ওপর হামলা করেন। এ নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া বন্দুক যুদ্ধ বাঁধে। আধঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের তিনজন আহত হন। তাদের মধ্যে ডুক্কু রুবেলের সহযোগী সাজ্জাদ হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁর হাতে ও পেটে গুলি লাগে। পরে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।
হাসপাতালে সাজ্জাদের বন্ধু হাসিবুল শান্ত দাবি করেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সাজ্জাদসহ তিন বন্ধু মিরপুর ১ নম্বর সেকশনে ঈদগাহ মাঠের পাশে চায়ের দোকানে চা খেতে যাচ্ছিলেন। সেখানে যুবদল নেতা সাজ্জাদুল মিরাজের কার্যালয় রয়েছে। সাজ্জাদুলের কার্যালয়ের সামনে গন্ডগোল চলছিল। সেখানে অজ্ঞাত এক ব্যাক্তি এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। এ সময় তারা দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে সাজ্জাদের পিঠে গুলি লাগে। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে নেওয়া হয়। সাজ্জাদের বাসা মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের নিউ সি ব্লকে।
আজ সকালে যোগাযোগ করা হলে শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঈদগাহ মাঠের পাশে যুবদল নেতা সাজ্জাদুলের কার্যালয়ে সব সময় নেতা কর্মীদের ভিড় থাকে। গতকাল রাতে তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জহিরের সঙ্গে সন্ত্রাসী ডুকু রুবেলের কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। ডুকু রুবেল ঈদগাহ মাঠ এলাকায় একটি সন্ত্রাসী দল নিয়ন্ত্রণ করে। যুবদল নেতা সাজ্জাদুল এখন এলাকার আধিপত্য ও ইন্টারনেট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, আহত সাজ্জাদ ডুকু রুবেলের সহযোগী। যুবদল নেতা সাজ্জাদুলের দুই সহযোগী গুলিবিদ্ধ হন। তারা কোন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তা জানা যায়নি। সিসিটিভির ফুটেজ নিয়ে সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। এখন তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কোনো পক্ষই থানায় মামলা করেননি।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে যুবদল নেতা সাজ্জাদুল মিরাজ আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে আমার দলের নেতা জহির আওয়ামী লীগের এক নেতাকে ধরতে গিয়েছিল। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পক্ষ থেকেই তাদের ধরতে বলা হয়েছিল। ডিবির কেউ না আসায় জহির নিজেই আওয়ামী লীগের নেতাকে ধরতে যান। তখন বিএনপির একটি পক্ষের লোকজন জহিরকে বাধা দেয়ে। তখন তারা বন্দুক দিয়ে গুলি ছোড়ে এবং চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকে। এতে আমার সাত নেতা–কর্মী আহত হন। তিন পথচারীও আহত হন।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঈদগ হ ম ঠ য বদল ন ত গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে নতুন করে শুরু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।