মিরপুরে ফুটপাত দখলমুক্তে ডিএনসিসির টানা তিন দিনের অভিযান
Published: 16th, April 2025 GMT
ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করতে মিরপুরে তিন দিন টানা অভিযান চালাবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। আগামী সপ্তাহে মিরপুর ১ নম্বর থেকে ১৩ নম্বর পর্যন্ত এলাকাজুড়ে দিন-রাত চলবে এ অভিযান।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে মিরপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক গণশুনানিতে এ তথ্য জানান ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
তিনি বলেন, “একদিন অভিযান চালিয়ে বসে থাকব না। ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে আর ব্যবসা চলবে না। বৈধ ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হবে, সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।”
গণশুনানিতে তিনি আরো বলেন, ‘‘আগামী মাসের মধ্যে মিরপুরের প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধে অভিযান চালানো হবে। এ ছাড়া, হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধে নাগরিকদের সুবিধার্থে আয়োজন করা হবে ট্যাক্স মেলা। সেখান থেকে রিবেটও পাবেন করদাতারা।’’
নাগরিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক বলেন, “ট্রেড লাইসেন্স এখন অনলাইনে হচ্ছে। ঘরে বসেই করা যাচ্ছে, ঘুষ লাগে না। জন্ম নিবন্ধনকেও পুরোপুরি অনলাইনে আনতে কাজ চলছে।”
মশা ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আরো জোরদারের আশ্বাস দিয়ে তিনি জানান, প্রতিটি এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের নাম ও মোবাইল নম্বর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। কাজ না করলে সরাসরি অভিযোগ করা যাবে, প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিএনসিসির ৪ নম্বর অঞ্চলের গণশুনানিতে ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন। স্থানীয়রা মশার উৎপাত, ফুটপাত বেদখল, স্ট্রিট লাইট বন্ধ, জলাবদ্ধতা, অটোরিকশার দৌরাত্ম্যসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন।
ঢাকা/আসাদ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এনস স ফ টপ ত
এছাড়াও পড়ুন:
প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য
প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।
ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।
আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছেপ্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।
স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।
তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩