বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর স্পষ্ট অবস্থান জানানো সরকারের দায়িত্ব বলে মনে করেন তাঁর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর। তিনি বলেন, ‘এখনো প্রত্যাশা করি, ইলিয়াস আলী আছে এবং একদিন ফেরত আসবে। সেই প্রত্যাশা যেন সঠিক হয়।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর।

বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর সন্ধানে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইলিয়াস আলী গুম প্রতিরোধ কমিটি। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

দোয়া মাহফিলে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সাত–আট মাস অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে, গুম কমিশনে আমরা আমাদের অভিযোগ দাখিল করেছি। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাইনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য, কথাবার্তা, বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের খবর বের হচ্ছে—এর মধ্যে কোনটি সঠিক বুঝতে পারি না। একটা ইতিবাচকভাবে খবর প্রকাশ করার হয় আবার নেতিবাচকভাবে খবর প্রকাশ করা হয়।’

তাহসিনা রুশদীর বলেন, ‘সম্প্রতি একটি খবর গুম কমিশন থেকে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে বলা হয়েছে যে বাংলাদেশের এক শরও বেশি লোক ভারতের কারাগারে বন্দী আছে। এটা সাম্প্রতিক খবর। আমরা আসলে সত্যি কনফিউজড। আমরা ১৩ বছর ধরে প্রতিবছর গুম দিবস পালন করছি। এটা নিয়ে কথা বলতে বলতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। আমরা চাই ভবিষ্যতে যাতে এমন দিবস আবার পালন করতে না হয়।’

ইলিয়াস আলীর স্ত্রী বলেন, ‘আমরা বর্তমান সরকারের কাছে সুস্পষ্টভাবে জানতে চাই, আপনারা আপনাদের গুম কমিশন, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল—যেটাই গঠন করে থাকেন না কেন, গুমের বিষয়ে আপনারা কী করেছেন, সেটা স্পষ্ট করুন।’

এম ইলিয়াস আলীর ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ১৩ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন ইলিয়াস আলী। বিএনপির অভিযোগ, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে ‘গুম’ করেছে। ওই সময় ইলিয়াস আলীর সন্ধানের দাবিতে টানা এক সপ্তাহ হরতাল পালিত হয় তাঁর উপজেলা সিলেটের বিশ্বনাথে। হরতাল চলাকালে পুলিশের সংঘর্ষে ছাত্রদল ও যুবদলের তিন কর্মী নিহত হন।

আরও পড়ুনইলিয়াস আলী নিখোঁজের ১৩ বছর আজ, সিলেটে বিএনপির নানা কর্মসূচি৭ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

‘নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বহাল থাকবে’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে এক কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা

একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অসুবিধা দেখা দেবে না বলে আমরা আশা করি।” 

তিনি আরো বলেন, “নির্বাচন হবে ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ও উৎসবমুখর। এ জন্য পুলিশ ও প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।” 

নিরাপত্তা ইস্যু—কার্গো অগ্নিকাণ্ড, অস্ত্র চুরির ঘটনা থেকে শুরু করে অস্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিরোধী পক্ষ এসব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেও উপদেষ্টা জানান, তদন্ত চলছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অতীতের নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা কিছু বিতর্কিত ওসিদের পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে স্বীকার করলেও জানান, সীমাবদ্ধতার কারণে সবাইকে একযোগে বদলি করা সম্ভব হচ্ছে না। 

“যারা পরপর তিনটি নির্বাচনে দায়িত্বে ছিলেন, তাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে,” বলেন তিনি।

আলোচনায় উস্কানিমূলক বক্তব্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাজনৈতিক প্রচারণা এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কেও প্রশ্ন ওঠে। 

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে এবং কেউ আইনের বাইরে গেলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ