জর্ডানে দুটি ম্যাচ খেলবে নারী ফুটবল দল
Published: 17th, April 2025 GMT
মিয়ানমারে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের আগে শক্তিশালী দলের সঙ্গে ম্যাচ খেলার সুযোগ খুঁজছিল বাফুফে। সেই সুযোগ করে দিচ্ছে জর্ডান।
ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশকে নিয়ে তারা একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করছে। যেখানে বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ খেলবে। প্রতিপক্ষ দুই দলই ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। জর্ডান ৭৪, ইন্দোনেশিয়া ৯৪ আর বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৩–এ। জর্ডানের রাজধানী আম্মানে খেলা হবে।
বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার আজ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘জর্ডানে আমাদের প্রথম ম্যাচ ৩১ মে, দ্বিতীয় ম্যাচ ৩ জুন। কোনো ফাইনাল নেই। ২৯ মে থেকে অফিশিয়াল সফর, তবে কোচের চাওয়া অনুযায়ী ২৭ মে দল পাঠানো হবে। এশিয়ান কাপের জন্য (জুন-জুলাই) শক্তিশালী দলের সঙ্গে খেলতে চেয়েছিলাম আমরা। যাতে দলের ভালো–মন্দ বোঝা যায়। কোচও বুঝতে পারেন সবকিছু। ফলে জর্ডানে খেলার সুযোগ পাওয়া আমাদের জন্য ভালো খবর।’
আরও পড়ুনমানুষ ‘রসিকতা’ করলেও এই দল নিয়েই আশা দেখছেন পিটার বাটলার২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী করা ১৮ নারী খেলোয়াড়ের মধ্যে ১০ জন এখন ভুটানে। সেখানকার স্থানীয় লিগে তাঁরা খেলবেন। সাবিনা খাতুন, রুপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা, সানজিদা আক্তাদের জর্ডান সফরের জন্য ডাকা হবে কি না, প্রশ্ন করা হলে মাহফুজা বলেন, ‘এটা টেকনিক্যাল বিষয়, কোচ ঠিক করবেন। টিম কীভাবে সাজাবেন তিনি দেখবেন। এ ব্যাপারে আমি কোনো হস্তক্ষেপ করব না।’
মাহফুজা জানিয়েছেন, বিদ্রোহ করা ১৮ জনের মধ্যে ঢাকায় থাকা ৮ জনের সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাফুফে। ভুটানের যাওয়া ১০ জন ফিরলে তাঁদের সঙ্গে চুক্তি করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাতারাতি তারকা হলে দীর্ঘ সময় দর্শকের মনে থাকা কঠিন: রিচি
রিচি সোলায়মান। ছোটপর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী এখন অনেকটাই আড়ালে। আজ বিশ্ব বাবা দিবস উপলক্ষে প্রকাশ হয়েছে বিশেষ গানচিত্র ‘বাবা শুনতে কী পাও’। এতে অভিনয় করেছেন রিচি সোলায়মান। এই গানচিত্র এবং সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন মীর সামী
আপনার অভিনীত গানচিত্র ‘বাবা শুনতে কী পাও’ নিয়ে কিছু বলুন?
‘বাবা শুনতে কি পাও’ শিরোনামের এই বিশেষ গানটি তৈরি করেছেন প্রান্তিক সুর। তাতে কণ্ঠ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী গজল ঘরানার শিল্পী শিরিন চৌধুরী। গানটির কথাও লিখেছেন শিল্পী নিজে। গানচিত্রে একটি সুন্দর সামাজিক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিয়ের পর একটা মেয়ের স্বপ্ন যেন মরে না যায় এবং শুধু মানুষটাকে নয়, তার স্বপ্নকেও ভালোবাসার সংবেদনশীল এবং হৃদয়স্পর্শী বাবার অনুরোধের বার্তা থাকছে এতে। গানের কথার সূত্র ধরে গল্পনির্ভর ভিডিওটিতে বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত আর মেয়ের ভূমিকায় আমি। অনেকদিন পর হায়াত চাচার সঙ্গে কাজ করলাম।
এই কাজটির সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে?
কিছুদিন আগে নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী আমায় গানচিত্রটিতে অভিনয়ের জন্য বললেন। যখন শুনলাম এই গানে বাবার ভূমিকায় অভিনয় কবেন আবুল হায়াত চাচা; ঠিক তখনই রাজি হয়েছি। কারণ, আমি হায়াত চাচার পরিচালনায় অনেক নাটকে তাঁর মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। তাই ভাবলাম বাবা দিবসের এই কাজটি আমাদের আরও একটি ডকুমেন্টেশন হয়ে থাক। আমাদের এই কাজে একজন মেয়ের দৃষ্টিভঙ্গিতে বাবাকে ঘিরে তার স্মৃতি, ভালোবাসা আর না বলা কথাগুলো উঠে এসেছে। কাজটি করার সময় আমার বাবার কথা খুব মনে পড়ছিল। একজন বাবার অবদান যে কত বিশাল, সেটি অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না–এই গানচিত্রে সেটিই তুলে ধরা হয়েছে।
আপনাকে এখন টিভি নাটকে খুব কম দেখা যায়। ইচ্ছা করেই দূরে সরে আছেন?
আমি এখন পরিবার আর নিজের সময়কে প্রাধান্য দিচ্ছি। পাশাপাশি কাজের মানের প্রতিও সবসময় সংবেদনশীল ছিলাম। নাটকের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে কখনও বিশ্বাসী ছিলাম না। এখন তো অনেক সময় দেখা যায় গল্প বা চরিত্রের গভীরতা কম, কাজগুলো অনেকটাই ‘কনটেন্ট ভিউ’ নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। আমি চাই, যখন কাজ করি, সেটি যেন দর্শকের মনে থাকে। তাই শুরু থেকে এখনও বেছে বেছেই কাজ করছি।
এখন নাটকে ‘ভিউ’ ও ‘ট্রেন্ড’ অনুসারে শিল্পী নির্বাচন হয় বলে অভিযোগ আছে...
এটি ঠিক যে এখন ‘ভিউ’ একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন হলো– দীর্ঘ মেয়াদে এই দর্শক আসলে কাদের মনে রাখে? আমার মনে হয়, একটি শিল্পমাধ্যমে যখন কেবল সংখ্যা দিয়ে শিল্পী বা কাজের মান বিচার হয়, তখন সেখানে অন্তর্নিহিত শিল্পবোধ অনেকটা হারিয়ে যায়। আমি বিশ্বাস করি অভিনেতা বা অভিনেত্রী হিসেবে আমাদের প্রথম দায় নিজের চরিত্রের প্রতি। ‘ভিউ’ দিয়ে নয়, শিল্পের গভীরতা দিয়ে একজন শিল্পীকে বিচার করা উচিত।
বর্তমান সময়ে ওটিটি মাধ্যমের প্রসারে নাটকের গুণগত মানে কী প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন?
ওটিটি একটা বড় প্ল্যাটফর্ম। নতুন গল্প আর নতুন নির্মাতাদের সুযোগ এনে দিয়েছে। এখানেও একটি সিন্ডিকেট তৈরি হচ্ছে। যারা আগে টিভিতে প্রভাবশালী ছিলেন, এখন তারা ওটিটিতেও আধিপত্য রাখছেন। এটি শিল্পের জন্য মোটেই ভালো নয়। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও অনেক শিল্পী সুযোগ পাচ্ছেন না। আমি বলব, ওটিটি হোক কিংবা টিভি–প্রতিভা ও গল্পকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত, ‘চেনা মুখ’ বা ‘সেলিব্রেটি প্যাকেজ’কে নয়।
যে সিন্ডিকেটের কথা বললেন, তা কী ভাঙা যায় না?
অবশ্যই যায়। যারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করবেন, তারাই এখন সেই দলের হয়ে যাচ্ছে। ফলে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? আমি যখন নিয়মিত কাজ করেছি, সেই সময় কিন্তু সবাই যার যার যোগ্যতা দিয়ে কাজ করেছেন। এখন পরিচয়ের ভিত্তিতে হচ্ছে। ফলে ধীরে ধীরে আমাদের নাট্যাঙ্গনের শিল্পটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ওটিটির কাজে আগ্রহ অনুভব করেন?
অবশ্যই। যদি ভালো গল্প আর শক্তিশালী চরিত্র পাই, আমি ওটিটিতেও কাজ করতে চাই। অশ্লীলতা বা অহেতুক সাহসী দৃশ্যের নামে যদি গল্পের গুরুত্ব হারিয়ে যায়, তাহলে সেটি আমাকে টানে না। শিল্পমান থাকলেই আমি আগ্রহী।
বর্তমান প্রজন্মের নতুন অভিনেত্রীদের সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
নতুনদের মধ্যে অনেকেই খুব ভালো করছেন। আমি তাদের একটা কথাই বলি, নিজেকে সময় দিন, নিজেকে গড়ুন। রাতারাতি তারকা হওয়া যায়। দীর্ঘ সময় দর্শকের মনে থাকা কঠিন। টিকে থাকার জন্য শুধু সৌন্দর্য নয়, কাজের প্রতি নিষ্ঠা, অধ্যবসায় ও আত্মসমালোচনাও জরুরি।