গাইবান্ধায় দাখিল পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনে সহায়তা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে একটি মাদ্রাসা কেন্দ্রের  সচিবসহ ২১ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার শহরের খানকা শরিফ এলাকার সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই শিক্ষকদের পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে সরানোর পাশাপাশি বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ আল হাসান।

বৃহস্পতিবার ওই কেন্দ্রে গণিত বিষয়ের পরীক্ষা চলছিল। সেখানে পাশাপাশি বসা পরীক্ষার্থীদের একই সেটের বহু নির্বাচনী (এমসিকিউ) প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। 

সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে ইউএনও মাহমুদ আল হাসান কেন্দ্র পরিদর্শন করে এর সত্যতা পান। পরে মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব শরিফ আবু  ইউসুফসহ পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ২১ শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া যাচাই করে ৪৭ পরীক্ষার্থীকে তাদের নির্ধারিত সেটের উত্তরপত্র পূরণ করানো হয়। মোবাইল ফোন রাখার অপরাধে বহিষ্কার করা হয় একজন পরীক্ষার্থীকে।

‎এ বিষয়ে কেন্দ্র সচিব শরিফ আবু ইউসুফ জানান, কেন্দ্রের সব কক্ষে এমন হয়নি। আমার একার পক্ষে সব কক্ষে নজরদারি করা সম্ভব হয়নি। এমসিকিউ পূরণে কিছু কিছু কক্ষে অনিয়ম হয়েছে।

‎ইউএনও মাহমুদ আল হাসান শুক্রবার দুপুরে জানান, দুই বছর আগে আমার এক সহকর্মী জানিয়েছিলেন, এই মাদ্রাসায় পরীক্ষা চলার সময় প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৪ থেকে ৫ জন এমসিকিউ ফরম পূরণ করে। বাকিরা খালি ফরমে নাম লিখেই চলে যায়। তবে ফলাফলে দেখা যেত, তারা সবাই ভালো করেছে। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি আমার নজরে ছিল। আমার ধারণা ছিল, এ বছরও তারা কোনো না কোনো অসদুপায় অবলম্বন করবে। এ কারণে পরীক্ষা শুরুর পর সুমাইয়া জান্নাত নামের একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে সেখানে পাঠানো হয়। তিনি ১০ মিনিট পরই ফোন দিয়ে জানান, কেন্দ্রের অধিকাংশ কক্ষের পরীক্ষার্থী সারিবদ্ধভাবে এক লাইনের সবাই ‘ক’ সেট, আবার অন্য লাইনের সবাই ‘খ’ সেটের প্রশ্নপত্র পেয়েছে। অথচ একই সারিতে সবাই একই সেট পাওয়ার নিয়ম নেই।

ইউএনও আরও বলেন, এর পর পরীক্ষা শেষে সব কক্ষের উত্তরপত্র যাচাই করা হয়। সেখানে সত্যতা মেলায় উপজেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই শিক্ষকদের পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাদের জায়গায় অন্য শিক্ষকদের দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডকে জানানো হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এসএসস পর ক ষ র থ শ ক ষকদ র র পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ
  • দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিলেন ইউএনও
  • রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ, লুট হওয়া বই ফেরত পেল পাঠাগার কর্তৃপক্ষ
  • মুদি দোকানে যৌন উত্তেজক ঔষধ, জরিমানা