অসদুপায় অবলম্বনে সহায়তায় কেন্দ্রের ২১ শিক্ষককে অব্যাহতি
Published: 18th, April 2025 GMT
গাইবান্ধায় দাখিল পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনে সহায়তা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে একটি মাদ্রাসা কেন্দ্রের সচিবসহ ২১ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার শহরের খানকা শরিফ এলাকার সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই শিক্ষকদের পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে সরানোর পাশাপাশি বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ আল হাসান।
বৃহস্পতিবার ওই কেন্দ্রে গণিত বিষয়ের পরীক্ষা চলছিল। সেখানে পাশাপাশি বসা পরীক্ষার্থীদের একই সেটের বহু নির্বাচনী (এমসিকিউ) প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়।
সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে ইউএনও মাহমুদ আল হাসান কেন্দ্র পরিদর্শন করে এর সত্যতা পান। পরে মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব শরিফ আবু ইউসুফসহ পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ২১ শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া যাচাই করে ৪৭ পরীক্ষার্থীকে তাদের নির্ধারিত সেটের উত্তরপত্র পূরণ করানো হয়। মোবাইল ফোন রাখার অপরাধে বহিষ্কার করা হয় একজন পরীক্ষার্থীকে।
এ বিষয়ে কেন্দ্র সচিব শরিফ আবু ইউসুফ জানান, কেন্দ্রের সব কক্ষে এমন হয়নি। আমার একার পক্ষে সব কক্ষে নজরদারি করা সম্ভব হয়নি। এমসিকিউ পূরণে কিছু কিছু কক্ষে অনিয়ম হয়েছে।
ইউএনও মাহমুদ আল হাসান শুক্রবার দুপুরে জানান, দুই বছর আগে আমার এক সহকর্মী জানিয়েছিলেন, এই মাদ্রাসায় পরীক্ষা চলার সময় প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৪ থেকে ৫ জন এমসিকিউ ফরম পূরণ করে। বাকিরা খালি ফরমে নাম লিখেই চলে যায়। তবে ফলাফলে দেখা যেত, তারা সবাই ভালো করেছে। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি আমার নজরে ছিল। আমার ধারণা ছিল, এ বছরও তারা কোনো না কোনো অসদুপায় অবলম্বন করবে। এ কারণে পরীক্ষা শুরুর পর সুমাইয়া জান্নাত নামের একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে সেখানে পাঠানো হয়। তিনি ১০ মিনিট পরই ফোন দিয়ে জানান, কেন্দ্রের অধিকাংশ কক্ষের পরীক্ষার্থী সারিবদ্ধভাবে এক লাইনের সবাই ‘ক’ সেট, আবার অন্য লাইনের সবাই ‘খ’ সেটের প্রশ্নপত্র পেয়েছে। অথচ একই সারিতে সবাই একই সেট পাওয়ার নিয়ম নেই।
ইউএনও আরও বলেন, এর পর পরীক্ষা শেষে সব কক্ষের উত্তরপত্র যাচাই করা হয়। সেখানে সত্যতা মেলায় উপজেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই শিক্ষকদের পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাদের জায়গায় অন্য শিক্ষকদের দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডকে জানানো হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এসএসস পর ক ষ র থ শ ক ষকদ র র পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী
অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।
আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগেগতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।
ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’
সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।
আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে