৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট
Published: 19th, April 2025 GMT
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সর্বনিম্ন গতি ২০ এমবিপিএস করার প্রস্তাব করেছে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এখন থেকে তারা ৫০০ টাকায় ৫ এমবিপিএস থেকে বাড়িয়ে ১০ এমবিপিএস গতির সেবা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার রাজধানীর বিটিআরসি ভবনে ইন্টারনেট সেবার মান নিয়ে এক সেমিনারে এই ঘোষণা দেয় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডটার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি)।
এ সময় সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেটের মানসম্মত সেবা দেওয়ার বিষয়ে মোবাইল অপারেটরদের আহ্বান জানানো হয়।
টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ (টিআরএনবি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দ্রুতই সর্বনিম্ন গতি হিসেবে ২০ এমবিপিএসের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। এজন্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রোভাইডারদের অ্যাকটিভ শেয়ারিংসহ প্রয়োজনীয় পলিসি সাপোর্ট দিতে নীতি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তৈয়্যব বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ইন্টারনেট ক্রয়ক্ষমতায় পিছিয়ে রয়েছে। এই খাতের ব্যবসায়ীদের ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে গুনগত মান বাড়াতে হবে।
টেলিযোগাযোগ খাতে বড় ধরনের সংষ্কার করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, লাইসেন্সিং ক্যাটাগরি কমিয়ে তিনটিতে নিয়ে আসা হবে। ডিজিটাল সেবাকে প্রাধান্য দেওয়া দিয়ে নেটওয়ার্ক টপোলজিতে পরিবর্তন আনা হবে। একই সঙ্গে টেলিযোগাযোগ খাতে রাজনৈতিক প্রভাব ছেঁটে ফেলা হবে। টেলিযোগাযোগ আইন ২০০১ আইনে পরিবর্তন আনা হবে, যাতে করে ইন্টারনেট সেবা বন্ধের সুযোগ চিরতরে বন্ধ দেওয়া যায়। কারণ ইন্টারনেট বন্ধে ফ্রিল্যান্সাররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিনিয়োগে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আর ইন্টারনেট বন্ধ হবে না- এটা বিনিয়োগকারীদের জানাতে হবে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডটার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ব্রডব্যান্ডে আইআইজি থেকে দাম কমানোর সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। সে কারণে জনগণের কাছে সেবা পৌঁছাতে পারছি না।
আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঞা বলেন, কেন একটিভ শেয়ারিং হচ্ছে না জানি না। প্রতিমাসে আইএসপিরা একশ’ কোটি টাকা লোকসান দেয়।
ফাইবার এট হোমের চেয়ারম্যান মঈনুল হক সিদ্দিকী বলেন, ইন্টারনেট এখন লাইফ লাইন। ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এজন্য নীতিমালা তৈরি হোক।
গত ৮ মাসে ১৭ শতাংশ ইন্টারনেটের দাম কমানো হয়েছে হয়েছে বলে দাবি করে এমটব মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকার বলেন, বিটিআরসির একটি কস্ট মডেলিং করা উচিত, তাহলে আমরা বুঝতে পারবো আমরা কত কম দামে সেবা দেবো। ইন্টারনেটের গ্রাহক কিন্ত বাড়েনি। এক্ষেত্রে গুনগত কনটেন্ট একটি ইস্যু।
টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মোস্তফা মামুন হোসেন বলেন, মোবাইল অপারেটরেরা লাভ করছে। বিদেশের তুলনায় বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরদের লাভের শতাংশ অনেক বেশি।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, আমাদের লক্ষ্য ঠিক করা উচিত যে, আগামী ৩ বছর বা ৫ বছরে ইন্টারনেট কোথায় নিয়ে যেতে চাই।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব রডব য ন ড
এছাড়াও পড়ুন:
ডিজিটাল খাতে বাজেটের প্রভাব কেমন
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, বাজেট গতানুগতিক। দেশের ইন্টারনেট খাতের জন্য বিশেষ কিছু নেই। মাঝারি ও ছোট আইএসপিদের জন্য বাজেটে তেমন কোনো সুখবর নেই। আগে যা ছিল, এখনও তা-ই আছে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী যারা আছেন, তারা শতভাগ দেশি উদ্যোক্তা। তবে করপোরেট গ্রাহকের জন্য ইন্টারনেট সেবা দেয়, তারা
কিছুটা সুবিচার পেতে পারেন।
কারণ, সব ধরনের করপোরেট প্রতিষ্ঠান অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) কেটে রেখে বিল পরিশোধ করে। এআইটি ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করায় স্বল্প সংখ্যক আইএসপি কিছুটা সুবিচার পেতে পারে। সরকার ইন্টারনেটের দাম কমাতে চায়। কিন্তু ভ্যাট, ট্যাক্সে হাত দেবে না; ইকুইপমেন্টের মধ্যেও হাত দেবে না। ফলে কোনো লাভ হবে না। ভ্যাট, ট্যাক্সে হাত না দিলে ইন্টারনেটের দাম কমবে না।
শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বাজেট প্রসঙ্গে বলেন, আমি মনে করি, ভোক্তা পর্যায়ে স্মার্টফোন খাতে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। উৎপাদন পর্যায়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট নির্মাতার লাভের পরিমাণ কিছুটা কমে যেতে পারে। তবে সেটিও খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারক প্রায় ৩০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করে এবং ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে এত বেশি ব্যয় হয় না। ধারণা করছি, ব্যবসায়িক পর্যায়েও এর কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ওভার দ্য টপ প্ল্যাটফর্ম (ওটিটি) পরিষেবায় আরোপ করা হয়েছে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক। এতে চরকি, নেটফ্লিক, বঙ্গ ছাড়াও কয়েকটি ওটিটিতে সিনেমা ও সিরিজ ছাড়াও ভালো মানের কনটেন্ট দেখতে দর্শকের ব্যয় বাড়বে। বর্তমানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর দিতে হয়।
সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করছেন, ওটিটি পরিষেবার ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দূরদৃষ্টিহীন সিদ্ধান্ত। দেশের উদীয়মান ডিজিটাল অর্থনীতি ও উদ্ভাবনী শিল্পের বিকাশ ব্যাহত করবে। সিদ্ধান্তটি একদিকে যেমন দর্শকের ব্যয় বাড়াবে, অন্যদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বড় ধরনের বাধা হবে। সরকারের উচিত, দ্রুত সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা এবং ডিজিটাল অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সহায়ক নীতিমালা গ্রহণ করা।