প্রতিটি আইফোনের ওপর একটি লেবেলে লেখা থাকে—যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্যালিফোর্নিয়ায় নকশা করা।’ কিন্তু সেগুলো কোথায় তৈরি? এই আইফোনগুলো তৈরি হয়ে আসে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরের দেশ চীন থেকে। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ২২ কোটি আইফোন বিক্রি করে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল। সেগুলোর ১০টির মধ্যে ৯টিই চীনে তৈরি।

জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই চীনের ওপর চড়াও হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি মাসে দেশটি থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি। যদিও মুঠোফোন, কম্পিউটার ও কিছু প্রযুক্তি পণ্যকে এই শুল্কের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। তবে তা বেশি দিনের জন্য শুল্কমুক্ত থাকবে না।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুটি অর্থনীতির দেশ। তাদের একে অপরের ওপর নির্ভরশীলতার সম্পর্ক রয়েছে। তবে ট্রাম্পের হতবাক করে দেওয়া শুল্ক আরোপের পর রাতারাতি সেই সম্পর্কের ওপর বড় আঘাত এসেছে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকির মুখে পড়েছে অ্যাপলও।

অর্থনীতিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম নিক্কি এশিয়ার হিসাবে, ২০২৪ সালের আইফোনের শীর্ষ ১৮৭টি সরবরাহকারীর ১৪০টিরই চীনে কারখানা ছিল।চীনে যেভাবে শুরু অ্যাপলের যাত্রা

কম্পিউটার বিক্রির জন্য গত শতকের নব্বইয়ের দশকে চীনের বাজারে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে প্রবেশ করে অ্যাপল। ১৯৯৭ সালের দিকে প্রতিষ্ঠানটি যখন প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার মুখে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল, তখন চীনের বাজারে নতুন জীবন ফিরে পায় তারা।

২০০১ সালে সাংহাইভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে চীনে ব্যবসা শুরু করে অ্যাপল। তখন তারা দেশটিতে নানা পণ্য উৎপাদন শুরু করে। পরে আইপড ও আইফোন তৈরির জন্য চীনে তাইওয়ানভিত্তিক ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন প্রতিষ্ঠান ফক্সকনের সঙ্গে অংশীদারত্বে যায় অ্যাপল।

২০০৮ সালে বেইজিংয়ে প্রথম নিজেদের পণ্যের দোকান খোলে অ্যাপল। শহরটিতে সে বছর অলিম্পিকের আয়োজন করা হয়েছিল। পশ্চিমের সঙ্গে তখন চীনের সম্পর্কও সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল। এরপর শিগগিরই চীনে ৫০টি দোকান খুলে ফেলে অ্যাপল। দেশটিতে প্রতিষ্ঠানটির পণ্যের জনপ্রিয়তা এতটাই বেড়ে যায় যে দোকানগুলোর বাইরে ক্রেতাদের লাইন লেগে থাকত।

বেইজিংয়ে একটি অ্যাপলের স্টোর.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য পল র ওপর আইফ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন

সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।

প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট। 

ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”

স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান

সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”

ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”

জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।

ডা. জয়নব

তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ