সব শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। দেশে আট কোটি শ্রমজীবী মানুষ আছেন। তার মধ্যে ৮৫ শতাংশ বা ৭ কোটি শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা নেই। শ্রমবিষয়ক সংস্কার কমিটি এই শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিতের সুপারিশ করেছে।

কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে বিশেষ সুপারিশ করেছে কমিশন। সেগুলো হলো, শ্রম আইনে মহিলা শব্দের পরিবর্তে নারী শব্দ ব্যবহার এবং কর্মক্ষেত্রে তুই/তুমি সম্বোধন বন্ধ করা।

আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্রম সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এরপর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সুপারিশ সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের শ্রমিকদের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের সুপারিশ করেছে কমিশন। লক্ষ্য হলো, কোনো শ্রমিক যেন তার চেয়ে কম মজুরি না পান, তা নিশ্চিত করা। সেই সঙ্গে শ্রমিকদের নিবন্ধন থেকে শুরু করে পরিচয়পত্র দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক শ্রমিক আন্দোলনে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা করা হয়েছে, সেসব মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করারও কথাও বলেছে কমিশন।

শ্রমিকদের সংগঠন করার অধিকার নিশ্চিত এবং তাঁদের দর-কষাকষি করার প্রক্রিয়া যেন আরও সহজ হয়, তা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি দূর করতে ২০০৯ সালের হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে কমিশন। সেই সঙ্গে নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করার কথা বলা হয়েছে, যে সুপারিশ অন্যান্য কমিশনও করেছে।

শ্রমিকদের কল্যাণে সর্বজনীন তহবিল করার সুপারিশ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শ্রম আদালতসহ আপিল বিভাগের সর্বক্ষেত্রে যেন বাংলা প্রচলন করা হয়, তা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী-পুরুষের সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম। গত সরকারের মন্ত্রীরা বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন, এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার পলাতক মন্ত্রীদের ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এরপর যে সরকার ক্ষমতায় আসবে, তাদেরও নৈতিক দায়িত্ব হবে, এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন–২০২৫’–এ যোগ দিতে আজ সোমবার সন্ধ্যা সাতটার বিমানে কাতার যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ শফিকুল আলম।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিআইএলএস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর র স প র শ কর র স প র শ কর ছ র র স প র শ কর ন শ চ ত কর র ম হ ম মদ সরক র র আইন

এছাড়াও পড়ুন:

যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা

চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।

জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”

একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”  

আরো পড়ুন:

বধূবেশে অভিষেক কন্যা

জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট

মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।” 

কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।” 

সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়। 

পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না। 

এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিরাজ–কৃষ্ণাতে ম্যাচে ফিরল ভারত
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা