‘ক্রিকেটের বাইবেল’ উইজডেনের বর্ষসেরা বুমরা ও মান্ধানা
Published: 22nd, April 2025 GMT
ক্রিকেটের বাইবেলখ্যাত উইজডেনের চোখে ২০২৫ সালের সেরা পুরুষ ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন ভারতের ফাস্ট বোলার যশপ্রীত বুমরা। যে স্বীকৃতির আনুষ্ঠানিক নাম উইজডেনস লিডিং ক্রিকেটার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। মেয়েদের লিডিং ক্রিকেটার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড হয়েছেন ভারতেরই আরেক তারকা স্মৃতি মান্ধানা। মঙ্গলবার প্রকাশিত উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমানাকের সর্বশেষ সংস্করণে এটা জানানো হয়।
গত বছর টেস্ট ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে ২০-এর কম গড়ে ২০০ উইকেট নেন বুমরা। উইজডেন সম্পাদক লরেন্স বুথের চোখে, ‘খুব সহজেই বছরের তারকা।’ গত বছর ১৩ টেস্টে ৭১ উইকেট নেন বুমরা। পাশাপাশি গত জুনে ভারতকে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতাতেও বড় অবদান ছিল তাঁর। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে ১৮ রানে ২ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি এ টুর্নামেন্টে ৮ ম্যাচে ১৫ উইকেট নেন বুমরা।
অস্ট্রেলিয়া সফরে বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফিতে ভারতের বোলিংকে প্রায় একাই টেনেছেন ৩১ বছর বয়সী এই ফাস্ট বোলার। গত বছর নভেম্বরে শুরু হয়ে জানুয়ারিতে শেষ হওয়া এই সিরিজে ৫ টেস্টে ৩২ উইকেট নেন বুমরা। সিরিজে তিনিই সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। বুথ তাঁকে নিয়ে লিখেছেন, ‘সে খুবই ভয়ংকর, চ্যালেঞ্জ হিসেবে অনন্য, তার বিপক্ষে করা রানগুলোকে দ্বিগুণ করে বিবেচনা করা উচিত.
গত বছর তিন সংস্করণ মিলিয়ে মেয়েদের ক্রিকেটে ১৬৫৯ রান করেন মান্ধানা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক বর্ষপঞ্জিতে কোনো নারী ক্রিকেটারের এটাই সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর মধ্যে চারটি সেঞ্চুরি, যা আরেকটি রেকর্ড। গত জুনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে ভারতের ১০ উইকেটের জয়ে ১৪৯ রানের ইনিংসও খেলেন মান্ধানা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরানকে লিডিং টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটার হিসেবে বেছে নিয়েছে উইজডেন অ্যালমানাক। উইজডেনের সবচেয়ে পুরোনো পুরস্কার বছরের সেরা পাঁচ ক্রিকেটারে সারের ক্রিকেটারদের আধিক্য। সারেকে টানা তৃতীয় কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ জেতানো গাস অ্যাটকিনসন, জেমি স্মিথ ও ড্যান ওরাল বছরের সেরা পাঁচ ক্রিকেটারের মধ্য তিনজন। বাকি দুজন হলেন হ্যাম্পশায়ারের লিয়াম ডসন ও ইংল্যান্ড নারী দলের বাঁহাতি স্পিনার সোফি একলেস্টন।
অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া পেসার ওরেল এ মৌসুমে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। এবার সারের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের মূল নায়ক ছিলেন ৩৩ বছর বয়সী এই বোলার। ১১ ম্যাচে ১৬.১৫ গড়ে ৫২ উইকেট নেন। অ্যাটকিনসন ও স্মিথ টেস্টে ভালো করেছেন। গত বছর জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লর্ডসে টেস্ট অভিষেকে ১২ উইকেট নেন অ্যাটকিনসন। সেপ্টেম্বরে সেই লর্ডসেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি আটে নেমে সেঞ্চুরিও করেন এই পেস অলরাউন্ডার। ডিসেম্বরে ওয়েলিংটন টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করেন হ্যাটট্রিক। টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে নিজের প্রথম বছরে ১১ ম্যাচে ৫২ উইকেট নেন অ্যাটকিনসন। গত বছর বুমরার পর টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট নেন এই ডানহাতি পেসার।
ডসন কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে বাঁহাতি স্পিনে ৫৪ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ৯৫৬ রান করেন। বুথের ভাষায়, ডসনের চেয়ে ‘কাউন্টি ক্রিকেটে কার্যকর অলরাউন্ডার আর নেই।’ একলেস্টন টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হন এবং সব সংস্করণ মিলিয়ে নেন ২৬ উইকেট।
বছরের সেরা পারফরম্যান্সের জন্য উইজডেন ট্রফি উঠেছে নিউজিল্যান্ডের স্পিনার মিচেল স্যান্টনারের হাতে। গত বছর অক্টোবরে পুনেতে ভারতের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের ১১৩ রানের জয়ে ১৩ উইকেট নেন স্যান্টনার। এতে নিউজিল্যান্ড তিন টেস্টের সেই সিরিজে ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর হোয়াইটওয়াশও করেছিল ভারতকে। ২০১২ সালের ডিসেম্বরের পর সেটা ছিল ঘরের মাঠে ভারতের প্রথম সিরিজ হার।
উইজডেন সম্পাদক বুথ তাঁর বার্ষিক নিবন্ধে খেলাটির বৈশ্বিক পরিচালকদের প্রতি তোপ দেগেছেন। ২০২৪ সাল তাঁর চোখে, ‘ক্রিকেট ভালোভাবে পরিচালিত হয় এই দাবি তুলে নেওয়ার’ বছর। গত বছর ডিসেম্বরে বিসিসিআই সচিব থেকে জয় শাহর আইসিসি প্রধানের পদে আসীন হওয়া এবং চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ভেন্যু নিয়ে ভারত ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যকার ঝামেলা উঠে এসেছে তাঁর এ নিবন্ধে।
এ বছরের অ্যালমানাকে ইংল্যান্ডের সাবেক পেসার জেমস অ্যান্ডারসনকেও বিশেষ সম্মান দেওয়া হয়েছে। টেস্টে ২১ বছর খেলার পর গত জুলাইয়ে অবসর নেন অ্যান্ডারসন। ১৮৮ টেস্টে ৭০৪ উইকেট নিয়ে এই সংস্করণে পেসারদের মধ্যে অ্যান্ডারসনই সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। গত বছর না ফেরার দেশে পাড়ি জমানো ইংল্যান্ডের দুই সাবেক ক্রিকেটার ডেরেক আন্ডারউড ও গ্রাহাম থর্পকেও শ্রদ্ধা জানানো হয় এ বছরের অ্যালমানাকে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স স করণ গত বছর বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
দুই মিনিটের বিতর্কিত দৃশ্য দিয়ে আলোচনায়, পরে বলিউডকে বিদায় জানান সেই অভিনেত্রী
বলিউডের ইতিহাসে এমন অনেক অভিনেত্রী আছেন, যাঁরা শূন্য থেকে শুরু করে রাতারাতি পরিচিতি পেয়েছেন; পরে আবার হঠাৎই হারিয়ে গেছেন। কিমি কাতকার তেমনই একজন। ১৯৮০-এর দশকে বলিউডে তিনি ছিলেন আলোচিত ও সাহসী অভিনেত্রীদের একজন।
কিমির উত্থান
আশির দশকটি বলিউডে সৃজনশীল ও পরিবর্তনের সময় ছিল, যেখানে অনেক প্রতিভাবান অভিনেতা-অভিনেত্রী তাঁদের ছাপ ফেলেছেন। কিমি ছিলেন সেই সময়ের অন্যতম উদীয়মান নায়িকা। পর্দায় সাহসী দৃশ্যের জন্য তিনি ব্যাপক পরিচিতি পান। যদিও তাঁর চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত; কিন্তু এর মধ্যেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন।
মুম্বাইতে জন্ম নেওয়া কিমি ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মডেল হিসেবে, পরে তিনি চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। ১৯৮৫ সালে ‘অ্যাডভেঞ্চার অব টারজান’ দিয়ে আলোচিত হন তিনি। সিনেমার সাফল্য তাঁকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে। হেমন্ত বীরজের সঙ্গে জুটি বেঁধে তিনি দর্শকদের মন মাতিয়ে দেন। তবে এ ছবিতেই একটি নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করে রাতারাতি আলোচনায় আসেন। দৃশ্যটি নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘সেই সময় আমি জানতাম না এই দৃশ্য কতটা বিতর্কিত হবে। কিন্তু অভিনয় আমার জন্য সব সময় ছিল সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জ।’ এরপর ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে অমিতাভ বচ্চন, অনিল কাপুর, গোবিন্দ ও আদিত্য পঞ্চোলির সঙ্গেও সিনেমা করেন তিনি। তাঁর নাচ ও অভিনয়ের দক্ষতা দর্শকদের কাছে তাঁকে প্রিয় করে তোলে।
‘অ্যাডভেঞ্চার অব টারজান’-এ কিমি কাতকার। আইএমডিবি