কুয়েটে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে দ্বিতীয় দিনে শিক্ষার্থীদের অনশন, কয়েকজন অসুস্থ
Published: 22nd, April 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে শুরু হওয়া অনশনের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। অনশনরত শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ অসুস্থ হয়েছেন। দাবি পূরণে অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে তাকিয়ে আছেন তাঁরা।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের একজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এক দফা এক দাবি, ভিসির পদত্যাগ। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে। আমাদের চারজন এরই মধ্যে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।’
এদিকে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে তৎপর আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তর। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে তারা। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি শিক্ষক প্রতিনিধিদল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে আসে। তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করে এবং অসুস্থ শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেয়।
আলোচনার বিষয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘আলোচনার সময় এখন আর নেই। আমরা অনেক দিন ধরে আমাদের পরিস্থিতির কথা বলেছি। আমরা স্যারদের সঙ্গে বসার অনেক চেষ্টা করেছি। আমরা বলেছি সমঝোতার সুযোগ আছে, হলগুলো খুলে দেন। আমাদের কথা শোনা হয়নি।’
এ বিষয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক এম এম এ হাসেম বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে এসেছি। একই সঙ্গে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি, এভাবে অসুস্থ হয়ে নয়, তোমরা এসো আমরা বসে বিষয়টির সুরাহা করি।’
ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার একটি সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা তাদের বলেছি, আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।’
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে আন্দোলন আবার দানা বাঁধতে থাকে। গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবির ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা কুয়েটের ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে হলগুলোতে অবস্থান নেন। বুধবার দুপুরে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পদত য গ র উপ চ র য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
নারায়ণগঞ্জ শহরের শায়েস্তা খান সড়কে অবস্থিত জনতা ব্যাংক বিবি রোড কর্পোরেট শাখার এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রাহককে হয়রাণির অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী ওই নারী গ্রাহক খুরশিদা জানান, বড় বোনকে সঙ্গে নিয়ে ডিপিএসের টাকা তুলতে গেলে নানা টালবাহানা করেন ওই কর্মকর্তা। এর আগে বড় বোনের ডিপিএস ভাঙ্গানোর সময়ে টাকা চেয়ে না পেয়ে ক্ষিপ্ত ছিলেন তিনি। গুণধর ওই কর্মকর্তার নাম আশরাফ। তিনি ওই শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জনতা ব্যাংকের ভিজিল্যান্স ডিপার্টমেন্টের উপ মহাব্যবস্থাপক বরাবর ইমেইলে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে খুরশিদা জানান, গত ১৪-০৯-২০২৫ তারিখে আমি আমার ডিপিএস ৮৩০০০০৯৯ নম্বর এর টাকা আমার বড় বোনকে সঙ্গে নিয়ে উত্তোলন করতে যাই। আমার বোনকে দেখে একজন কর্মকর্তা আমাকে পরে আসতে বলে। অনেকক্ষন পর আমার বোন জামাই এসে ওই কর্মকর্তাকে বললে তিনি বলেন, দরখাস্ত করতে হবে। জবাবে আমার বোন জামাই বলেন, দরখাস্ত দেন, সবতো আপনাদের কাছে। এরও কিছুক্ষন পর তিনি একটি কাগজ দিয়ে বলেন আমি পূরণ করতে পারবো না। পরে আমি অন্য একজনকে দিয়ে পূরণ করে তার কাছে জমা দিলে তিনি খুব ধীরলয়ে কাগজটি নাড়াচাড়া করতে থাকেন। বিভিন্ন কিছু গুছাতে থাকেন।
এরপর বলেন, কাকে দিয়ে ফিলাপ করিয়েছেন। আমি একজনের নাম বলি। ওই সময়ে আমার বোন জামাই বলে, কে ফিলাপ করলো এটা জানার কি খুব দরকার। সঠিক হয়েছে কি-না তা দেখেন।
এ নিয়ে আমার বোন জামাইয়ের সঙ্গে তার তর্ক হলে তিনি এক পর্যায়ে কাগজ নিয়ে ম্যানেজার সাহেবের রুমে ঢুকেন। তখন ম্যানেজার সাহেব আমাদের ডেকে নেন, ঘটনা শুনেন। পরে তিনি বলেন, আজ হিসেব করে আপনার সেভিংস একাউন্টে টাকা জমা হবে আপনারা চলে যান।
ম্যানেজার সাহেবের কাছে ওই কর্মকর্তার পরিচয় জানতে পারি, ওনার নাম আশরাফ উনি ওই ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার।
এখানে উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১০ জুলাই আমার বড় বোন পারভীন ডিপিএসের টাকা তুলতে গেলে ওই কর্মকর্তা আশরাফ সাহেব তার কাছে টাকা চান। বিষয়টি আমার বোন জামাই শুনতে পেয়ে তার কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি (আশরাফ সাহেব) তখন বলেন, টাকা চাই নাই পেয়ারা খেতে চেয়েছি। তখন তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ওই ঘটনার কারনেই তিনি আমার বোনকে দেখে সেদিন আমাকে নূন্যতম সহযোগীতা না করে হয়রাণি করতে চেয়েছেন।