সংবিধান সংশোধনের প্রতিটি প্রস্তাবে গণভোট আয়োজনের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তবে সংবিধানের নির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ নিয়ে গণভোটের উদ্যোগ নিতে চাইলে, তা পরবর্তী সংসদে আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা যেতে পারে বলেও মত দেন তিনি।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের লেডিস ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংলাপের তৃতীয় দফা বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী পদে টানা দুই মেয়াদের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না— এমন প্রস্তাবে আমরা ভিন্নমত দিয়েছি। আমাদের প্রস্তাব হলো, টানা দুই মেয়াদের বেশি না থাকলেও এক মেয়াদ বিরতি দিয়ে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ রাখা যেতে পারে।”

আরো পড়ুন:

শেখ হাসিনা-রেহানা-জয় ও পুতুলসহ ১০ জনের ‘এনআইডি লক’

ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা

রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদের পর নতুন একটি ধারা সংযোজনের পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে সংসদে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া, রাষ্ট্রপতি সংসদের উভয়কক্ষের সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার প্রস্তাবে বিএনপি একমত বলেও জানান সালাহউদ্দিন।

ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব—একই ব্যক্তি সরকারপ্রধান, দলপ্রধান ও সংসদ নেতা হতে পারবেন না—বিষয়ে বিএনপি দ্বিমত জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি উন্মুক্ত রাখার প্রস্তাব দিয়েছি। কারণ, একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান ও সরকারপ্রধান হতে পারবেন না—এমন চর্চা বিশ্বের কোথাও দেখা যায় না।”

বিএনপি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বলেও জানান তিনি। সালাহউদ্দিন বলেন, “পঞ্চদশ সংশোধনীতে ধর্মনিরপেক্ষতা বা বহুত্ববাদ কোনোটিই নেই। তবে কমিশনের প্রস্তাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার যুক্ত করার বিষয়টি আমরা সমর্থন করেছি।”

তথ্যপ্রযুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সংবিধানে জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে ইন্টারনেট প্রাপ্তির প্রস্তাবের সঙ্গে বিএনপি একমত। তবে একে শুধু অন্তর্ভুক্ত করলেই হবে না, রাষ্ট্র যেন এই ইন্টারনেট সুবিধা থেকে জনগণকে বঞ্চিত করতে না পারে— সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।”

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ স ল হউদ দ ন র প রস ত ব ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ ১১ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন ও এবি পার্টির ঐকমত্য

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনপদ্ধতি চালুসহ ১১টি বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে এবি পার্টি। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছে দল দুটি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এবি পার্টির মধ্যে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। আজ বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার পরিবেশ তৈরি হবে। সম্প্রতি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা ধর্মবিরোধী, ইসলামবিরোধী ও দেশবিরোধী। কমিশনের প্রস্তাবগুলো বাতিল করতে হবে। এ বিষয়ে এবি পার্টিও একমত।

বৈঠক সম্পর্কে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, তাঁরা এই বৈঠকের মাধ্যমে দেশবাসীকে বার্তা দিতে চান, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন। বাংলাদেশকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বানানো পর্যন্ত এই ঐক্য টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।

দুই দলের বৈঠকে আরও যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত স্বাধীন–সার্বভৌম টেকসই কল্যাণকর বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা; দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা; ভোটাধিকারসহ সব নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা; দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করে নিয়ে আসা; আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে দেশ পুনর্গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা; আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে আঘাত করে কথা না বলা এবং প্রশাসনে এখনো বিদ্যমান আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্রুত অপসারণ করা; আগামীতে যাতে আওয়ামী লীগের মতো আর কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা; দেশের স্থায়ী শান্তি ও মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে সংবিধানে বিদ্যমান শরিয়াহবিরোধী আইন বাতিল এবং ইসলামসহ সব ধর্মের প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য পরিহার করা, কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে কোনো কথা বা বক্তব্য না দেওয়া।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতেয়াজ আলম, মাওলানা সৈয়দ এসহাক মু. আবুল খায়ের ও মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম।

অপর দিকে এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম ও বি এস নাজমুল হক, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ ভূইয়া, আবদুল্লাহ আল মামুন, আনোয়ার সাদাত, এ বি এম খালিদ হাসান, শ্যাডো অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি আব্বাস ইসলাম খান, সংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) গাজী নাসির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ ১১ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন ও এবি পার্টির ঐকমত্য
  • চলছে বৈঠকের রাজনীতি
  • বৈঠকে আওয়ামী লীগের বিচার ও মৌলিক সংস্কার প্রশ্নে একমত এনসিপি ও গণসংহতি আন্দোলন
  • কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নিকে অভিনন্দন জানালেন ট্রাম্প
  • জাতীয় স্বার্থে আমরা কি একমত হতে পারি না
  • গণভোটে সংস্কার চায় নুরের গণঅধিকার
  • সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর বয়স ন্যূনতম ২৩ করার প্রস্তাব গণ অধিকার পরিষদের