ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলা শুক্রবার
Published: 23rd, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলা শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে। লালদীঘি মাঠে এটি হবে বলীখেলার ১১৬তম আসর। এ উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে তিন দিনের মেলা। বলীখেলার মূল পর্বের উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। বিজয়ী বলীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা.
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিবছর নগরের আন্দরকিল্লা থেকে কোতোয়ালি মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে প্রধান সড়কের দুই পাশে মেলা বসে। এ ছাড়া কেসি দে রোড ও লয়েল রোডের পুরো অংশে বৈশাখী মেলার পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। এবার নগরের আন্দরকিল্লা থেকে কোতোয়ালি মোড় পর্যন্ত প্রধান সড়কে বৈশাখী মেলার পসরা না বসানোর পরামর্শ দিয়েছে সিএমপি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আবদুল জব্বার সওদাগরকে নিয়ে গবেষণা, লালদীঘি চত্বরকে আবদুল জব্বার সওদাগরের নামে নামকরণ, বলীখেলা চর্চায় একাডেমি প্রতিষ্ঠা, আবদুল জব্বার সওদাগরকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান ও ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি নিয়ে শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গ্রামীণফোনের রিজিওনাল হেড মোহাম্মদ মোরশেদ আহমেদ বলেন, জব্বারের বলীখেলার মতো একটি ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় আয়োজনে অংশ হতে পেরে গ্রামীণফোন গর্বিত। গ্রামীণফোন আগেও এই আয়োজনের পৃষ্ঠপোষক ছিল। স্থানীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃষ্টির প্রতি শ্রদ্ধাশীল গ্রামীণফোন সমাজ ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এমন আয়োজনের পাশে থাকতে চায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, ব্রিটিশ শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে ১৯০৯ সালে স্থানীয় আবদুল জব্বার সওদাগর লালদীঘি মাঠে কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের মানুষের কাছে এটি ‘জব্বারের বলীখেলা’ নামে পরিচিতি পায়। লালদীঘি ময়দানে প্রতিবছর ১২ বৈশাখ অনুষ্ঠিত হয় এই বলীখেলা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বলীখেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও প্রধান বিচারক হাফিজুর রহমান, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি ও মো. শাহনেওয়াজ, গ্রামীণফোনের চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল রিজিয়নের রিজিওনাল হেড মোহাম্মদ মোরশেদ আহমেদ এবং সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল বালী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বল খ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।