Samakal:
2025-09-18@04:52:51 GMT

সজনে' র যত উপকারিতা

Published: 24th, April 2025 GMT

সজনে' র যত উপকারিতা

গরমে সজনে ডাল বা তরকারি কম বেশি সবারই পছন্দ। সুস্বাদু এই সবজির রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। সজনে একটি ওষুধি গুণে ভরপুর অন্যতম ভেষজ উদ্ভিদ। সজনের ডাঁটা যেমন সুস্বাদু একটি সবজি, তেমনি এটি পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতার দিক থেকেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয়, আয়ুর্বেদিক ও প্রাকৃতিক চিকিৎসায় সজনের বহুল ব্যবহার রয়েছে।

সজনে বা মরিঙ্গা একটি ‘সুপারফুড’ হিসেবে বিবেচিত হয় কারণ এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সজনে পাতায় ভিটামিন এ, সি ও ই, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন ও ফাইবার পাওয়া যায়। এতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী এবং ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত করে। তাই প্রতিদিনের খাবারে সজনে যুক্ত করলে শরীর প্রয়োজনীয় অনেক পুষ্টি পায়। এছাড়াও সজনা খেলে আরও উপকার পাওয়া যায়। যেমন_

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
সজনে পাতায় থাকা কিউয়ারসেটিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রক্তচাপ কমাতে কার্যকর। এটি রক্তনালীর উপর চাপ কমিয়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। যারা হাই ব্লাড প্রেশারে ভোগেন, তাদের জন্য সজনে খুবই উপকারী একটি খাবার।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
সজনে পাতা ও ডাঁটা ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, সাজনের নির্যাস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায়। নিয়মিত সজনে খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
সজনেয় রয়েছে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে এবং নানা ধরনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি
সজনের পাতায় থাকা ফাইবার হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এটি পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং বদহজম, গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা কমায়। সজনে পাতা বা ডাঁটার তরকারি নিয়মিত খেলে হজম ভালো হয়।

ত্বক ও চুলের যত্নে
সজনের তেল এবং পাতার গুঁড়া ত্বকের যত্নে বহুল ব্যবহৃত। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ব্রণ, র‍্যাশ ও চুলকানি প্রতিরোধে সাহায্য করে। চুল পড়া কমাতে এবং চুলের গোড়া মজবুত করতেও সজনের তেল কার্যকর।

রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ
সজনে পাতায় উচ্চমাত্রার আয়রন রয়েছে, যা হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে নারীদের জন্য আয়রনের ঘাটতি পূরণে সজনা একটি প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে। নিয়মিত সজনে খেলে রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়ার সমস্যা কমে।

অ্যান্টিক্যান্সার গুণ
গবেষণায় দেখা গেছে, সজনেতে উপস্থিত কিছু যৌগ যেমন নিইজিমাইসিন এবং গ্লুকোসাইনোলেট, ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধে সাহায্য করে। যদিও এখনো এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবে প্রাথমিকভাবে এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক বলে মনে করা হয়।

মাতৃদুগ্ধ বাড়ায়
সজনে গাছকে "গ্যালাক্টাগগ" বলা হয়, অর্থাৎ এটি মায়ের দুধ উৎপাদনে সহায়ক। গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য সজনার পাতা বা ডাঁটার তরকারি খুবই উপকারী।

তবে যারা কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ খান বা গর্ভবতী, তারা সাজনে খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ য য কর দ র জন য সজন র উপক র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ