নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ওলামা সমাজ: মামুনুল হক
Published: 24th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব দেশের ধর্মপ্রাণ আলেম-ওলামা সমাজ প্রত্যাখ্যান করেছে। ‘ইসলামবিরোধী’ এই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন করলে তা রুখে দেওয়া হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এ কথা বলেন।
মামুনুল হক বলেন, সংবিধানে বহুত্ববাদ নয়, আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক। একই সঙ্গে তৌহিদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ।
বিগত সরকারের প্রসঙ্গ টেনে মামুনুল হক বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পাখির মতো মানুষ হত্যা করে বিগত ১৫ বছরে এ দেশে গুম-খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। হেফাজতের সমাবেশে ও ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিরীহ মানুষকে খুন করে তিনি উপহাস করেছিলেন। শেখ হাসিনা কোনো স্বাভাবিক মানুষ ছিলেন না। একজন বিকারগ্রস্ত মানুষ ছিলেন। গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিচার না করলে অন্তর্বর্তী সরকারকে ইতিহাস ক্ষমা করবে না।’
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ছাত্র–জনতার প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা গণহত্যার বিচার চাই এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাস্তি চাই। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুততম সময়ে জাতীয় নির্বাচন চাই।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ফেনী জেলার সভাপতি মাওলানা জসিম উদ্দিন। গণসমাবেশের বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমির মাওলানা আফজালুর রহমান, মহাসচিব জালালুদ্দিন আহম্মেদ, যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক, আবু সাঈদ নোমান ও কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে সভায় বক্তব্য দেন ফেনী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াকুব নবী, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মুফতি আবদুল হান্নান, সেক্রেটারি মাওলানা আবদুর রহিম, ইসলামী আন্দোলন ফেনী জেলা সেক্রেটারি মাওলানা একরামুল হক, হেফাজতে ইসলামের ফেনী জেলা সভাপতি মাওলানা ওমর ফারুক প্রমুখ।
গণসমাবেশে দলীয় নেতারা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন, আলেম-ওলামাসহ সর্বস্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক প রস ত ব ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ