বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব দেশের ধর্মপ্রাণ আলেম-ওলামা সমাজ প্রত্যাখ্যান করেছে। ‘ইসলামবিরোধী’ এই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন করলে তা রুখে দেওয়া হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এ কথা বলেন।

মামুনুল হক বলেন, সংবিধানে বহুত্ববাদ নয়, আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক। একই সঙ্গে তৌহিদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ।

বিগত সরকারের প্রসঙ্গ টেনে মামুনুল হক বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পাখির মতো মানুষ হত্যা করে বিগত ১৫ বছরে এ দেশে গুম-খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। হেফাজতের সমাবেশে ও ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিরীহ মানুষকে খুন করে তিনি উপহাস করেছিলেন। শেখ হাসিনা কোনো স্বাভাবিক মানুষ ছিলেন না। একজন বিকারগ্রস্ত মানুষ ছিলেন। গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিচার না করলে অন্তর্বর্তী সরকারকে ইতিহাস ক্ষমা করবে না।’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ছাত্র–জনতার প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা গণহত্যার বিচার চাই এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাস্তি চাই। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুততম সময়ে জাতীয় নির্বাচন চাই।’

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ফেনী জেলার সভাপতি মাওলানা জসিম উদ্দিন। গণসমাবেশের বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমির মাওলানা আফজালুর রহমান, মহাসচিব জালালুদ্দিন আহম্মেদ, যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক, আবু সাঈদ নোমান ও কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া।

আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে সভায় বক্তব্য দেন ফেনী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াকুব নবী, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মুফতি আবদুল হান্নান, সেক্রেটারি মাওলানা আবদুর রহিম, ইসলামী আন্দোলন ফেনী জেলা সেক্রেটারি মাওলানা একরামুল হক, হেফাজতে ইসলামের ফেনী জেলা সভাপতি মাওলানা ওমর ফারুক প্রমুখ।

গণসমাবেশে দলীয় নেতারা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন, আলেম-ওলামাসহ সর্বস্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক প রস ত ব ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের

গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।

শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। 

আরো পড়ুন:

জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা

হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‍“আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”

জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।” 

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।” 

আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।” 

ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।

গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি। 

গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার। 

ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত
  • বিশ্বনেতাদের সতর্ক দৃষ্টির সামনেই ঘটছে গণহত্যা
  • আ.লীগের নামে কোনো দল রাজনীতি করতে পারবে না: ভিপি নুর
  • ইসলামবিরোধী প্রস্তাবনা রুখে দেওয়া হবে: মামুনুল হক
  • শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
  • ‘বিশ্বের নজরদারির মধ্যেই ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল’
  • রাখাইনে করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ হেফাজতের
  • ইয়েমেনে মার্কিন হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা ইরানের
  • নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি
  • নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিল করতে হবে: মামুনুল হক