Samakal:
2025-07-31@15:59:14 GMT

‘বড় দল’ হতে চাই জিম্বাবুয়ে

Published: 25th, April 2025 GMT

‘বড় দল’ হতে চাই জিম্বাবুয়ে

বাংলাদেশ ক্রিকেটের ছেলেবেলার সেই খেলার সাথিরা! পাঁচ বারের বিশ্বকাপ খেলা সেই কেনিয়া হারিয়ে গেছে। খোঁজ নেয় না কেউ। তারা এখন টি২০ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের জন্য নাইজেরিয়ার সঙ্গে তুমুল লড়াই করে। ছিল জিম্বাবুয়ে, দেশের রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে তারা এখনও ক্রিকেটটা ধরে রেখেছে। তবে ‘বড়’ আর হয়ে ওঠা হয়নি। 

আফগানিস্তান আর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় টেস্ট সিরিজ খেলা হয় তাদের। সেখানেও লাস্ট বেঞ্চের ছাত্র তারা। র‍্যাঙ্কিংয়ে দশে আইরিশরা, এগারো নম্বরে আফগান। তার পরই বারোতে জিম্বাবুয়ে। সে তারাই কিনা সিলেটে হারিয়ে দিল বাংলাদেশকে। তাও আবার সাড়ে তিন দিনে!

যে জিম্বাবুয়ে ছিল বাংলাদেশ দলের ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’, তারাই কিনা এখন হোয়াইট ওয়াশের আতঙ্কে! যদিও সিরিজ জয়ের স্বপ্নের কথাটি জোর গলায় বলেননি জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেগ আরভিন। একটি আকুতি উঠে এসেছে তাঁর কণ্ঠে। ‘আমরা টেস্ট জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত এবং উপভোগ করছি। আপনি যত বেশি টেস্ট জিতবেন, তত আপনার সামনে সুযোগ আসবে। ক্রিকেটের সেরা ভার্সন টেস্ট। আমরাও বেশি বেশি টেস্ট খেলতে চাই। আমাদের মতো ছোট দলের জন্য এক একটা টেস্ট ম্যাচ প্রমাণের সুযোগ। আমরা সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। টেস্ট জিতলে ওই আত্মবিশ্বাস চলে আসে। মানসিকভাবে জয়ের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা চিটাগং যাব।’

গত দশ বছরে জিম্বাবুয়ের টেস্ট
ম্যাচ: ২৫ 
জয়: ৩
হার: ১৮
ড্র: ৪

সাদা জার্সি গায়ে জড়িয়ে বাংলাদেশের মতো বড় দলের (আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলে বিধায় বলা যায়) সঙ্গে নিয়মিত টেস্ট খেলার প্রবল ইচ্ছা এই জিম্বাবুয়ানদের মধ্যে। তবে র‍্যাঙ্কিংয়ে ৯টি দল নিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ হওয়ায় বাংলাদেশ বছরে যতগুলো টেস্ট খেলার সুযোগ পায়, সেটি নেই জিম্বাবুয়ের। তারা শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ার‍ল্যান্ড আর আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার সুযোগ পায়। 

মুজারাবানিরা এমনিতে লাল বলে মাত্র একটি ঘরোয়া লিগ খেলার সুযোগ পায়। লোগান কাপ নামের প্রথম শ্রেণির ওই টুর্নামেন্টে খুব বেশি আর্থিক সুবিধা পায় না তারা। এ জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডের মতো দেশেও লাল বলে খেলতে চলে যায় অনেকে। একটা পরিসংখ্যান বলে সিলেট টেস্ট খেলা জিম্বাবুয়ে দলের সবাই মিলে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা ৮১ ম্যাচের; যেখানে বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিমের একারই রয়েছে ৯৪ টেস্টের অভিজ্ঞতা।

দশ বছরে বাংলাদেশের টেস্ট
ম্যাচ: ৬৩
জয়: ১৫
হার: ৪১
ড্র: ৭

গেলো দশ বছরে জিম্বাবুয়ে মোট টেস্ট খেলেছে ২৫টি; যার মধ্যে জয় মাত্র তিনটিতে। তাও এর মধ্যে আবার মাঝে ২০১৯ এবং ২০২২ সালে কোনো টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ মেলেনি তাদের। তুলনায় বাংলাদেশ, গত দশ বছরে তারা টেস্ট খেলেছে মোট ৬৩টি; যার মধ্যে জয় ছিল ১৫টি। কালেভদ্রে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে পায় তারা। 

ভারতের সঙ্গে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছে জিম্বাবুয়ে কুড়ি বছর আগে, বাইশ বছর আগে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল। তাই অনভ্যস্ততার কারণে সিলেটে রান তাড়া করতে গিয়ে ৩৪ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারানোর নার্ভাসে ভুগতে হয়। আসলে বাংলাদেশের মতো দলকে হারানোটা তাদের কাছে ‘বড় দল’ হয়ে ওঠার প্রেরণা দেয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার

দেশের প্রতি চারজনের একজন মানুষ এখনো বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) বিষয়ক এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিকল্পনা কমিশনে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশের জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন জিইডির সদস্য (সচিব) মনজুর হোসেন। আলোচক ছিলেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক এ কে এনামুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আখতার এবং বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিবিএসের ২০১৯ সালের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের (এমআইসিএস) তথ্য ব্যবহার করে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) নিরূপণ করা হয়েছে।  বহুমাত্রিক দারিদ্র্য হলো দারিদ্র্য পরিমাপের একটি বিস্তৃত পদ্ধতি, যা শুধু আয় বা ভোগের মতো একক মাত্রার বাইরে গিয়ে দারিদ্র্যকে তার বিভিন্ন দিক থেকে বুঝতে সাহায্য করে। বাংলাদেশের এ সূচকে তিনটি মাত্রা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যাতে জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই মাত্রাগুলোকে ১১টি আলাদা সূচকে ভাগ করা হয়েছে। যেমন জীবনযাত্রার মানের মধ্যে রয়েছে—বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন, খাওয়ার পানি, বাসস্থান, রান্নার জ্বালানি, সম্পদ এবং ইন্টারনেট সংযোগ।

এমপিআই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে ২৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে রয়েছে, যা সংখ্যায় প্রায় ৩ কোটি ৯৮ লাখ। গ্রামীণ এলাকায় এই হার ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ, আর শহরে ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে এই দারিদ্র্যের হার সর্বোচ্চ, ৩৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর পাঁচটি জেলায় ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার। জেলাগুলো হলো—বান্দরবান, কক্সবাজার, সুনামগঞ্জ, রাঙামাটি ও ভোলা। শিশুদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এ হার ২১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

প্রধান অতিথি আনিসুজ্জামান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে এমপিআই-কে দারিদ্র্য দূরীকরণের একটি নতুন ও উদ্ভাবনী কৌশল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই পদ্ধতি সর্বাধিক ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করতে সহায়তা করবে। তিনি এ সূচককে নীতিনির্ধারণ ও পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। এ ছাড়া কিছু জেলায় দারিদ্র্যের হার বেশি হওয়ার পেছনের কারণ অনুসন্ধানে আরও গবেষণা করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এমপিআই ব্যবস্থাটি আয়ভিত্তিক দারিদ্র্য মাপকাঠিকে সম্পূরকভাবে সহায়তা করবে এবং এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে। সভাপতির বক্তব্যে মনজুর হোসেন জানান, জিইডি ভবিষ্যতেও নিয়মিত এই সূচক প্রকাশ করবে এবং নীতিনির্ধারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ