বাংলাদেশ ক্রিকেটের ছেলেবেলার সেই খেলার সাথিরা! পাঁচ বারের বিশ্বকাপ খেলা সেই কেনিয়া হারিয়ে গেছে। খোঁজ নেয় না কেউ। তারা এখন টি২০ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের জন্য নাইজেরিয়ার সঙ্গে তুমুল লড়াই করে। ছিল জিম্বাবুয়ে, দেশের রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে তারা এখনও ক্রিকেটটা ধরে রেখেছে। তবে ‘বড়’ আর হয়ে ওঠা হয়নি।
আফগানিস্তান আর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় টেস্ট সিরিজ খেলা হয় তাদের। সেখানেও লাস্ট বেঞ্চের ছাত্র তারা। র্যাঙ্কিংয়ে দশে আইরিশরা, এগারো নম্বরে আফগান। তার পরই বারোতে জিম্বাবুয়ে। সে তারাই কিনা সিলেটে হারিয়ে দিল বাংলাদেশকে। তাও আবার সাড়ে তিন দিনে!
যে জিম্বাবুয়ে ছিল বাংলাদেশ দলের ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’, তারাই কিনা এখন হোয়াইট ওয়াশের আতঙ্কে! যদিও সিরিজ জয়ের স্বপ্নের কথাটি জোর গলায় বলেননি জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেগ আরভিন। একটি আকুতি উঠে এসেছে তাঁর কণ্ঠে। ‘আমরা টেস্ট জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত এবং উপভোগ করছি। আপনি যত বেশি টেস্ট জিতবেন, তত আপনার সামনে সুযোগ আসবে। ক্রিকেটের সেরা ভার্সন টেস্ট। আমরাও বেশি বেশি টেস্ট খেলতে চাই। আমাদের মতো ছোট দলের জন্য এক একটা টেস্ট ম্যাচ প্রমাণের সুযোগ। আমরা সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। টেস্ট জিতলে ওই আত্মবিশ্বাস চলে আসে। মানসিকভাবে জয়ের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা চিটাগং যাব।’
গত দশ বছরে জিম্বাবুয়ের টেস্ট
ম্যাচ: ২৫
জয়: ৩
হার: ১৮
ড্র: ৪
সাদা জার্সি গায়ে জড়িয়ে বাংলাদেশের মতো বড় দলের (আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলে বিধায় বলা যায়) সঙ্গে নিয়মিত টেস্ট খেলার প্রবল ইচ্ছা এই জিম্বাবুয়ানদের মধ্যে। তবে র্যাঙ্কিংয়ে ৯টি দল নিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ হওয়ায় বাংলাদেশ বছরে যতগুলো টেস্ট খেলার সুযোগ পায়, সেটি নেই জিম্বাবুয়ের। তারা শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড আর আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার সুযোগ পায়।
মুজারাবানিরা এমনিতে লাল বলে মাত্র একটি ঘরোয়া লিগ খেলার সুযোগ পায়। লোগান কাপ নামের প্রথম শ্রেণির ওই টুর্নামেন্টে খুব বেশি আর্থিক সুবিধা পায় না তারা। এ জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডের মতো দেশেও লাল বলে খেলতে চলে যায় অনেকে। একটা পরিসংখ্যান বলে সিলেট টেস্ট খেলা জিম্বাবুয়ে দলের সবাই মিলে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা ৮১ ম্যাচের; যেখানে বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিমের একারই রয়েছে ৯৪ টেস্টের অভিজ্ঞতা।
দশ বছরে বাংলাদেশের টেস্ট
ম্যাচ: ৬৩
জয়: ১৫
হার: ৪১
ড্র: ৭
গেলো দশ বছরে জিম্বাবুয়ে মোট টেস্ট খেলেছে ২৫টি; যার মধ্যে জয় মাত্র তিনটিতে। তাও এর মধ্যে আবার মাঝে ২০১৯ এবং ২০২২ সালে কোনো টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ মেলেনি তাদের। তুলনায় বাংলাদেশ, গত দশ বছরে তারা টেস্ট খেলেছে মোট ৬৩টি; যার মধ্যে জয় ছিল ১৫টি। কালেভদ্রে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে পায় তারা।
ভারতের সঙ্গে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছে জিম্বাবুয়ে কুড়ি বছর আগে, বাইশ বছর আগে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল। তাই অনভ্যস্ততার কারণে সিলেটে রান তাড়া করতে গিয়ে ৩৪ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারানোর নার্ভাসে ভুগতে হয়। আসলে বাংলাদেশের মতো দলকে হারানোটা তাদের কাছে ‘বড় দল’ হয়ে ওঠার প্রেরণা দেয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ বছর
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধা স্টেশন মাস্টারকে কিলঘুষি মারা যুবক স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার
গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আবুল কাশেমকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে আনোয়ারুল হক ও তার স্ত্রী মহিমা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ে পুলিশ।
রবিবার (১৫ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম তালুকদার।
আনোয়ারুল হক কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তারা কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকায় যাচ্ছিলেন।
জানা যায়, শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে ঢাকাগামী লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মেটাতে গেলে স্টেশন মাস্টার আবুল কাশেম ও এক যুবকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার ৩৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র আলোচনা, সমালোচনা শুরু হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, স্টেশনের প্লাটফর্মের নিচে রেললাইনের উপর ট্রেনের পাশে এক যুবক ও স্টেশন মাস্টার একে অপরকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারছেন। এসময় ওই যুবকের স্ত্রীও সেখানে এগিয়ে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রকাশ্যে এমন মারধরের ঘটনার পর অভিযোগ উঠেছে, ঘটনাটি স্টেশনে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের সামনে ঘটলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে এগিয়ে আসেননি। স্টেশন মাস্টার ও রেলওয়ে পুলিশের গায়ে পোশাক থাকলে হয়তো এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না।
একজন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে এ ধরনের আচরণ অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য। তারা তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
বোনারপাড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম তালুকদার মুঠোফোনে জানান, ঘটনার পর স্টেশন মাস্টার একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করলে অভিযুক্ত আনোয়ারুল হক ও তার স্ত্রীকে বগুড়া-সান্তাহার রুটে চলন্ত লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সকাল ১১টার দিকে তাদেরকে গাইবান্ধা আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
বিষয়টি জানতে স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ঢাকা/মাসুম/এস