সম্প্রীতির বন্ধনে দেশটাকে এগিয়ে নিতে চাই: পার্বত্য উপদেষ্টা
Published: 25th, April 2025 GMT
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, “সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষাসহ অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে তোলাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য।”
তিনি বলেন, “সম্প্রীতির বন্ধনে মিলেমিশে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে সাথে নিয়ে দেশটাকে এগিয়ে নিতে চাই।”
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাঙ্গামাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের হলরুমে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্ট ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং মোনঘরের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও বৌদ্ধ সংস্কৃতি বিকাশে করণীয় শীর্ষক দিনব্যাপী সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরো বলেন, “বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের জন্য সব দরজা খুলে রেখেছে।পাহাড়িরা কৃষি বিভাগের উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে রয়েছে। আমাদের গরীব থাকার কথা না। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে।”
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার কফি ও কাজুবাদাম ফলনকে ব্যাপকভাবে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই।”
প্রয়োজনে সমতল থেকে এক্সপার্ট এনে কাজ করানো হবে বলে জানান উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “আমরা পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ আর পিছনে থাকতে চাই না। দেশের মেইনস্ট্রিমের সাথে মিশে যেতে চাই।”
তিনি বলেন, “সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমাজের প্রতি অবদান রাখতে হবে। সমাজ ধর্ম ও রাষ্ট্রকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাপ্রধান সম্প্রীতির বন্ধনে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এখানে সবাইকে একাত্ম হতে হবে। মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যেই এ সরকার কাজ করে যাচ্ছে।”
পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাধের মাধ্যমে পার্বত্য এলাকার জনগণের যে ক্ষতি হয়েছে তা ভুলে গিয়ে সম্ভাবনাময় কাপ্তাই লেককে কাজে লাগাতে হবে।কাপ্তাই লেককে ডেভেলপ করতে হবে। কাপ্তাই লেকের মাছ আহরণ করে অর্থনৈতিকভাবে দেশের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।
বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৌদ্ধ তত্ত্ববিদ প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, মং সার্কেল রাজা সাচিং প্রু চৌধুরী। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্ট বোর্ডের ট্রাষ্টি রাজিব কান্তি বড়ুয়া।
সেমিনারে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্যামল মিত্র চাকমা প্রমুখ।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট কল য ণ
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা
ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।
ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।
ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।
গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে। এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।