মিয়ানমারে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর ২০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল জান্তা সরকার। সেই ঘোষণার মধ্যেও রাখাইন ও কাচিন রাজ্যে ব্যাপক বিমান ও স্থল হামলা চালিয়েছে তারা। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৮০ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।

রাখাইনের নিয়ন্ত্রণে থাকা আরাকান আর্মির তথ্যমতে, ২ থেকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে তাদের দখলে থাকা এলাকাগুলোতে জান্তা বাহিনী যুদ্ধবিমান, ড্রোন, নৌকা, আর্টিলারি এবং আত্মঘাতী ড্রোন ব্যবহার করে ৪০৯টি হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় দু’জন নিহত এবং পাঁচ শিশুসহ অন্তত ২৮ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংস হয়েছে অন্তত ২৫টি ভবন, যার মধ্যে একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

বিশেষ করে গত ১৯ এপ্রিল কিয়াউকটাউ শহরের আবাসিক এলাকায় তিনটি যুদ্ধবিমানের সাহায্যে রকেট, ক্লাস্টার বোমা ও ৫০০ পাউন্ডের বেশি বোমা ফেলা হয়। এতে একজন নিহত ও ২০ জন আহত হন। এ ছাড়া ২২ এপ্রিল জান্তা বাহিনী যুদ্ধবিরতির সময় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বললেও, রাখাইনের কিয়াউকফিউ শহরের একটি গ্রামে তাদের আত্মঘাতী ড্রোন হামলায় এক নারী নিহত হন। আরাকান আর্মি জানিয়েছে, তারা রাখাইনের ১৭টির মধ্যে ১৪টি উপজেলা এবং পাশের চিন রাজ্যের পলেটোয়া শহর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

অন্যদিকে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যের জেড (পান্না) খনির কেন্দ্র হপাকান্ত শহর পুনর্দখলের জন্য বড় ধরনের অভিযান চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী। কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি জানিয়েছে, প্রায় এক হাজার জান্তা সেনা দু’দিক থেকে শহরটির দিকে এগোচ্ছে। সেখানে বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল হামলাও চালানো হচ্ছে। বর্তমানে ভামো ও হপাকান্ত শহরে নিয়মিত সংঘর্ষ চলছে বলে জানিয়েছে বিদ্রোহীরা।

গত ২৮ মার্চের শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠী মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে একতরফা অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করলেও, তা মানেনি জান্তা বাহিনী। বরং তারা রাখাইনের বাইরেও মিয়ানমারের অন্তত ১১টি রাজ্য ও অঞ্চলে ১৫০টির বেশি বিমান ও আর্টিলারি হামলা চালিয়েছে। এই হামলার বেশির ভাগই হয়েছে বেসামরিক জনগণের ওপর, এমনকি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাও রেহাই পায়নি। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১২০ জন। খবর ইরাবতীর।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র খ ইন র

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয় দেওয়ায় তাঁতী দলের নেতা বহিষ্কার

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত মোহাম্মদ সৈকত উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি ছিলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ইকবাল করিম সোহেল ও সদস্যসচিব মোরশেদ আলমের যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি মূল্যায়নে ব্যর্থ হওয়ায় হাতিয়া উপজেলা তাঁতী দলের দক্ষিণ কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে সৈকতের বাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা–পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ১০টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ সৈকত সম্পর্কে ফুফা–ভাগনে।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো পরিবার থাকে। আমি ব্যবসার কাজে দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকি। আলাউদ্দিন কখন বাড়িতে এসেছেন, তা আমার জানা নেই। আমাদের ঘর থেকে তাঁর শ্বশুরদের ঘর অনেক দূরে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে।’

নোয়াখালী জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম বলেন, আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকে আত্মগোপনে থাকার সুযোগ করে দেওয়ায় মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তাঁতী দল কমিটিকেও সতর্ক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনহাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার৩১ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ