টিকটকে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে নতুন ভূমিকম্পের ভবিষ্যদ্বাণী করে আতঙ্ক সৃষ্টি করায় এক জ্যোতিষীকে গ্রেপ্তার করেছে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ।

গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম জন মো থে। মিয়ানমারের সাগাইংয়ে তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার ‘জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ার’ অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জন মো থে ৯ এপ্রিল ভূমিকম্পের ভবিষ্যদ্বাণী করে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। এমন এক সময় তিনি ওই ভবিষ্যদ্বাণী করলেন, যার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশটিতে সাড়ে তিন হাজার মানুষ নিহত হন এবং শতাব্দীপ্রাচীন বিভিন্ন মন্দির–মসজিদ ধ্বংস হয়ে যায়।

জন মো থে সতর্ক করেছিলেন যে ২১ এপ্রিল একটি ভূমিকম্প ‘মিয়ানমারের প্রতিটি শহর কাঁপিয়ে দেবে।’ কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়া অসম্ভব।

জন মো থের ভিডিওটি টিকটকে ৩০ লাখের বেশি মানুষ দেখেছেন। সেখানে তিনি মানুষকে ভূমিকম্পের সময় গুরুত্বপূর্ণ জিনিস নিয়ে দৌড়ে বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘লোকদের দিনের বেলায় উঁচু ভবনে থাকা উচিত নয়।’

ইয়াঙ্গুনের এক বাসিন্দা এএফপিকে বলেন, তাঁর অনেক প্রতিবেশী ওই ভবিষ্যদ্বাণীতে বিশ্বাস করেছেন। জন মো থে যেদিন বলেছিলেন ভূমিকম্প হবে, সেদিন তাঁরা নিজ ঘরে না থেকে বাইরে তাঁবু খাটিয়ে ছিলেন।

আরও পড়ুনমিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে কী কারণে এত শক্তিশালী ভূমিকম্প হলো২৯ মার্চ ২০২৫

জন মো থের টিকটক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁর তিন লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে। টিকটকে তিনি দাবি করেন, জ্যোতিষশাস্ত্র ও হস্তরেখা বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করে থাকেন।

গত ২৮ মার্চ ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল মিয়ানমার। দেশটির প্রাচীন রাজধানী মান্দালয় ও ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল সাগাইংয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের জান্তা সরকার বিদেশি সাহায্যের অনুরোধ জানায়, যা বিরল।

মিয়ানমার থেকে এক হাজার কিলোমিটার দূরে থাইল্যান্ডের ব্যাংককেও ভূমিকম্প ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সেখানে একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ে এবং ডজনখানেক মানুষ নিহত হয়।

আরও পড়ুন‘এমন ভূমিকম্প গত ২০ বছরে দেখা যায়নি মিয়ানমারে’২৮ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ ম কম প র ট কটক

এছাড়াও পড়ুন:

‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন

সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।

প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট। 

ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”

স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান

সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”

ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”

জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।

ডা. জয়নব

তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ