গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগের এক নেতা দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে নিজ বাড়িতে নৌকার প্রতিকৃতি ভেঙে ফেলেছেন। আজ রোববার সকালে উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়নের কাকডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ওই আওয়ামী নেতার নাম আবু ছাইদ শিকদার। তিনি পিঞ্জুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ভাগনে। আবু ছাইদ শিকদার প্রায় ৩০ বছর পিঞ্জুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন।

আবু ছাইদ শিকদার কাকডাঙ্গা গ্রামে তাঁর বাড়ির সামনের পুকুরপাড়ে কয়েক বছর আগে ইট, বালু, সিমেন্ট ও রড দিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন নৌকার প্রতিকৃতি নির্মাণ করেন। আজ সকালে তাঁর লোকজন ওই প্রতিকৃতি ভেঙে ফেলেন। এ সময় চেয়ারম্যান আবু ছাইদ শিকদার সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

নৌকার প্রতিকৃতি ভাঙার পর আবু ছাইদ শিকদারের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ১ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘যার দল করি (শেখ হাসিনা), সেই গেছে পালাইয়া। আদর্শচ্যুত হইছে, সে পালায় গেছে। ওই দল আর করতে রাজি না। সে আসলেও (শেখ হাসিনা) করব না। এই জন্য ভাইঙ্গা ফেলাইছি।’

পরে এ ব্যাপারে জানতে আবু ছাইদ শিকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি।  

এ ব্যাপারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কাজী মুক্তা বলেন, ‘আবু ছাইদ শিকদার দীর্ঘ ৩০ বছর পিঞ্জুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি তাঁর মামা প্রয়াত সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর প্রভাব খাটিয়ে পিঞ্জুরী ইউনিয়নের নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। এরপর তিনি দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন আওয়ামী লীগের এই দুর্দিনে এসে আবু ছাইদ শিকদারের এমন কাণ্ডে আমরা হতবাক হয়েছি। আমরা এই নৌকা ভাঙার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ঐক্য অটুট রাখা জরুরি, ফ্যাসিবাদ ফিরে এলে কেউই রেহাই পাবে না: এবি পার্টি

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাইয়ের পক্ষের শক্তিদের আত্মঘাতী সংঘাতে জড়ানোর সুযোগ নেই। মত ও পথ ভিন্ন হতে পারে, সমালোচনাও হবে, তবে ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ঐক্য অটুট রাখা জরুরি। কারণ, ফ্যাসিবাদ ফিরে এলে জুলাই আন্দোলনের পক্ষে থাকা কেউই রেহাই পাবে না।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে দলীয় কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে জুলাই–২৪ গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানেই মজিবুর রহমান এ কথাগুলো বলেন।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘যদি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সফল না হতো তাহলে আমাদের কারাগারে কাটাতে হতো, নেমে আসত অবর্ণনীয় নির্যাতন। যেসব পুলিশ কর্মকর্তা লাশের স্তূপ তৈরি করেছিল, তারা পেত রাষ্ট্রীয় খেতাব।’

গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতাসহ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের ফলেই সফল হয়েছে জানিয়ে মজিবুর রহমান বলেন, সবার অবদানকেই স্বীকৃতি দিতে হবে। এটা নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই। অনেক কিছুই পাইনি। তবে স্বাধীনভাবে যে কথা বলছি, লিখছি, বক্তব্য দিচ্ছি, সেটা গণ-অভ্যুত্থানেরই ফসল।

সংবর্ধনা পাওয়া জুলাই যোদ্ধা আসিফ বলেন, ‘আমার পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে পুলিশ গুলি করেছে। মনে হচ্ছিল মৃত্যু উপত্যকায় পড়ে আছি। এবি যুব পার্টির আহ্বায়ক টুটুল ভাই আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।’

আরেক জুলাই যোদ্ধা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘১৮ জুলাই আমি ছিলাম ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। পুলিশ ছিল দুই পাশে। আমরা ছিলাম ৬ জন। কিন্তু তারা (পুলিশ) ছিল ৮৬ জন। ওই দিন জীবিত ফিরব কখনো কল্পনা করিনি।’

অনুষ্ঠানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আতিকুর রহমান, রহমত উল্লাহ, অধ্যাপক হুমায়ুন কবির, শাখাওয়াত হোসেন, আকিব হাসান, আশরাফুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, হেদায়েত উল্লাহ, রোমান মিয়া, সিফায়েত হোসাইন, মোহাম্মদ হোসাইন আহমেদ, মোহাম্মদ আমিন, নাবিল, মুস্তাফিজ বিল্লাহ হাবিবী, হাবিবুর রহমান, ফয়েজ আকাশ, নুরুল হুদা, ইকবাল হোসেন, রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এবি পার্টির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল। দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক  আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এবি পার্টির নেতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুব পার্টির সদস্যসচিব হাদিউজ্জামান খোকন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ