কত নাটক, কূটকৌশল, এমনকি চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে এক বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে খেলেছিলেন তাওহিদ হৃদয়। অথচ ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, যে ম্যাচে তাকে সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল, সেই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে অধিনায়ক হৃদয়কে পেল না মোহামেডান। তার অনুপস্থিতির সুযোগ ভালো মতোই নিয়েছে আবাহনী। ৯.

২ ওভার থাকতে ৬ উইকেটের বড় জয়ে লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবাহনী। এ নিয়ে টানা তিনবার ডিপিএলের চ্যাম্পিয়ন হলো দলটি।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৪০ রান তোলে মোহামেডান। ওপেনার রনি তালুকদার ৪৫ রান করেন। চারে নামা ফরহাদ হোসেন ৪২ রানের ইনিংস খেলেন। মোহামেডান ১২৪ রানে ৪ উইকেট হারায়। সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহ ও আরিফুল ইসলাম ৯০ রানের জুটি গড়েন। তারা করে ৫০ রান তুলে আউট হন।

জবাবে ১০৮ রানে আবাহনীর ৪ উইকেট নিলেও জয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি মোহামেডান। পাঁচে নামা মোহাম্মদ মিঠুন হার না মানা ৬৬ ও অধিনায়ক মোসাদ্দেক ৬৫ বলে অপরাজিত ৭৮ রান করে দলকে জয় এনে দেন। তিনি ছয়টি চার ও পাঁচটি ছক্কা মারেন। এর আগে তিনে নামা জিসান আলম ৫৩ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন।

এই ম্যাচের আগে ১৫ রাউন্ড শেষে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে ছিল আবাহনী। সমান ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ছিল মোহামেডান। জিতেই ৪ পয়েন্টে এগিয়ে তাই ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল আবাহনী। মোহামেডান জিতলে দুই দলের পয়েন্ট সমান হতো। সেক্ষেত্রে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় শিরোপা জিতত মোহামেডান।

শেষ হওয়া মৌসুমে আবাহনীর হেড কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন জাতীয় দলের সাবেক টপ অর্ডার ব্যাটার হান্নান সরকার। তিনি আবাহনীর কোচের দায়িত্ব নেওয়ার আগে বিসিবির নির্বাচক প্যানেলের সদস্য ছিলেন। কিন্তু ওই চাকরি ছেড়ে কোচিংয়ে নাম লেখান তিনি। দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম মৌসুমেই দলকে চ্যাম্পিয়ন করলেন হান্নান সরকার। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড প এল উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ