ইসলামবিরোধী প্রস্তাবনা রুখে দেওয়া হবে: মামুনুল হক
Published: 29th, April 2025 GMT
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের কুরআন-সুন্নাহবিরোধী প্রতিবেদনসহ কমিশন বাতিল, সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল, ফ্যাসিবাদের আমলে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যাসহ সব হত্যার বিচার এবং ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে ৩ মে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। মহাসমাবেশের জন্য প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। হেফাজত নেতাদের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং ইসলাম বিরোধী সব প্রস্তাবনা বাতিল করতে হবে। অন্যথায় দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এসব প্রস্তবনা রুখে দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর খিলগাঁওয়ে মাখজুনুল উলুম মাদরাসা প্রাঙ্গনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এসব কথা বলেন।
সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক বলেন, “নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাবনা দিয়েছে তা দেশের পারিবারিক ব্যবস্থা ধ্বংসের টার্গেটে করা হয়েছে। ইসলাম বিরোধী এসব প্রস্তাবনা যেকোন মূল্যে রুখে দেওয়া হবে।”
আরো পড়ুন:
নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ ৫ দাবি, হেফাজতের মহাসমাবেশ ৩ মে
শহীদের রক্তের দায় ক্ষমা করা যায় না: ইউনুস আহমাদ
হেফাজতের নেতাদের নামে দায়ের করা মামলা এখনো প্রত্যাহার না করার ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “চার মাস আগে মামলার তালিকা আইন উপদেষ্টার কাছে দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সাথেও এ বিষয়ে দেখা করে দাবি জানানো হয়েছে। তারপরও এখনো মামলা প্রত্যাহার না করা দুঃখজনক।”
মামলা না তোলায় হেফাজত নেতাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, “৩ মে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ সফলে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, ড.
এদিকে মহাসমাবেশ সফল করতে মাদরাসায় বাস্তবায়ন কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। হেফাজতের মহাসচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মীর ইদ্রিস, সহকারী মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা মুসা বিন ইজহার, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারী, মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা রাশেদ বিন নুর, মাওলানা আফসার মাহমুদ প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ত র রহম ন হ স ইন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)