গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভের পরদিন দুটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা
Published: 30th, April 2025 GMT
গাজীপুর নগরের কোনাবাড়ী এলাকার শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে দুটি তৈরি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আজ বুধবার সকাল ৮টার দিকে সংশ্লিষ্ট কারখানার ফটকে এ–সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কারখানা দুটির শ্রমিকেরা।
বন্ধ কারখানা দুটি হলো ‘এম এম নিটওয়্যার লিমিটেড’ ও ‘মামুন নিটওয়্যার লিমিটেড’। কারখানা দুটি একই শিল্পপ্রতিষ্ঠানের।
কারখানা দুটির সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগ) আরিফুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত সব কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, ২৯ এপ্রিল সকাল ৮টার সময় কারখানা চালু হলে গার্মেন্টস ডিভিশন, স্ক্রিন প্রিন্টিং ও এমব্রয়ডারি বিভাগের শ্রমিকেরা কারখানায় প্রবেশ করে নিজেদের কাজের প্রতি ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা প্রকাশ করেন। অবৈধভাবে কাজ বন্ধ করে উচ্ছৃঙ্খলতা করেন। একপর্যায়ে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করে কারখানা থেকে তাঁরা বেরিয়ে যান। এ অবস্থায় কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে সব সেকশন (শাখা) বন্ধ ঘোষণা করল। পরবর্তী সময়ে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে কারখানার সংশ্লিষ্ট বিভাগের সেকশনগুলো খোলার তারিখ জানানো হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এম এম নিটওয়্যার লিমিটেডের এক সুইং অপারেটর জানান, কারখানায় কিছু শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। মালিকপক্ষের লোকজন ছাঁটাই করা শ্রমিকদের মধ্যে কয়েকজনকে মারধর করেন। এর প্রতিবাদে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
তবে অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন। তিনি জানান, শ্রমিকদের মারধরের বিষয়টি গুজব, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন বলেন, দুটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলেও শ্রমিকেরা শান্ত আছেন। কিছু শ্রমিক সকালে কারখানার গেটে জড়ো হয়েছিলেন। তবে পরিবেশ শান্ত আছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?