শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার করার দাবি টিইউসির
Published: 1st, May 2025 GMT
শ্রমিকদের জন্য স্থায়ী মজুরি কমিশন গঠন করে ৩০ হাজার টাকা জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন নিশ্চিত ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)।
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) আয়োজিত এক সমাবেশে এসব দাবি করেন টিইউসির নেতারা।
সমাবেশ শুরুর আগে র্যালি ও গণসংগীত পরিবেশন করা হয়। গণসংগীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
সমাবেশে টিইউসির নেতারা বলেন, ১৮৮৬ সালের ঐতিহাসিক লড়াইয়ের ১৩৯ বছর পরেও দেশে শ্রমজীবী মানুষকে ন্যায্য মজুরি ও আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে হচ্ছে। দৈনিক কর্মসময় ৮ ঘণ্টা সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে কার্যকর হলেও বেসরকারি খাতের শ্রমিকেরা এখনো পুরোপুরি সে সুফল পাচ্ছেন না। ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তন হলেও শ্রমজীবী মানুষের ওপর শোষণ–নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। চাঁদাবাজি, হয়রানি, নির্যাতন অহরহ ঘটছে।
বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকেরা কলকারখানা ও অঞ্চলভিত্তিক রেশনের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল, আটা ও শিশুখাদ্য সরবরাহের দাবি করলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেই। বিভিন্ন সেক্টরভিত্তিক শ্রমিকদের ঘোষিত মজুরি রোয়েদাদ কার্যকর হচ্ছে না। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও নারী শ্রমিকেরা সমকাজে সমমজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিয়োগের সমতা ও সবেতন মাতৃত্বকালীন ছুটি না পাওয়াসহ নানা ধরনের শোষণ, বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
সমাবেশে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়ন, স্থায়ী মজুরি কমিশন গঠন করে ৩০ হাজার টাকা জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা এবং সস্তা ও বাঁধামূল্যে রেশন, স্বল্পমূল্যে বাসস্থান ও বিনা মূল্যে চিকিৎসাসহ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান বক্তারা।
টিইউসির সহসভাপতি মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সহসভাপতি আবদুর রাজ্জাক, অর্থ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন, দপ্তর সম্পাদক সাহিদা পারভীন, প্রচার সম্পাদক মোবারক হোসেন, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক আসলাম খান, গার্মেন্টস শ্রমিকনেতা ইদ্রিস আলী, হকার্স নেতা মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যের ওপর নির্ভর করবে সংলাপের সাফল্য: আলী রীয়াজ
গণতান্ত্রিক দলগুলোর ঐক্যের ওপর নির্ভর করবে সংলাপের সাফল্য। এ মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, অনেক বিষয়ে ঐকমত্য আছে। বিভিন্ন বিষয়ে ভিন্ন মত দেখতে পাই, সেগুলো আলোচনার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হব। গণতান্ত্রিক সমাজ অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন মতের সমাজ। আমরা সকলেই এক ভাষায় কথা বলব না। তবে আমাদের লক্ষ্য এক। সেই জায়গায় ঐক্যবদ্ধ আছি, থাকব। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যের ওপর নির্ভর করবে আমরা কতটুকু সাফল্য অর্জন করতে পারব।
সংলাপের অংশ নেওয়া সকলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অভিন্ন উল্লেখ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, আমরা চাই, দেশের মানুষ চায়, যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের কাছে আমাদের অঙ্গীকার ও দায় হচ্ছে, যেন সুযোগকে হাতছাড়া না করি। আমরা প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্র বিনির্মাণে প্রক্রিয়া শুরু করতে পারি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্যের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে যে গণতন্ত্রের সংগ্রাম, বিশেষ করে ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন দেশের প্রাতিষ্ঠানিক সমস্ত রকম সম্ভাবনাকে প্রায় তিরোহিত করে দিয়েছিল। যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো লড়াই করেছে, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি অন্যতম অংশীদার থেকেছে। সেই প্রক্রিয়াকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া কমিশনের লক্ষ্য।
আলী রীয়াজ বলেন, সকলে মিলে আমরা একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে চাই। এটা কেবল ঐকমত্য কমিশনের আকাঙ্খার বিষয় নয়, এটি কেবল সরকারের বিষয় নয়। আজকে আমরা যে কথা বলতে পারছি, স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্র বিনির্মাণে সকলে মিলে, সকলে একত্রে বসে কথা বলতে পারছি। পথ খুঁজবার চেষ্টা করছি। সেটা সম্ভব হয়েছে কমপক্ষে ১৪ শ’ মানুষের রক্তপাত ও প্রাণনাশের মধ্য দিয়ে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।