শ্রমিকদের জন্য স্থায়ী মজুরি কমিশন গঠন করে ৩০ হাজার টাকা জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন নিশ্চিত ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)।

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) আয়োজিত এক সমাবেশে এসব দাবি করেন টিইউসির নেতারা।

সমাবেশ শুরুর আগে র‍্যালি ও গণসংগীত পরিবেশন করা হয়। গণসংগীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

সমাবেশে টিইউসির নেতারা বলেন, ১৮৮৬ সালের ঐতিহাসিক লড়াইয়ের ১৩৯ বছর পরেও দেশে শ্রমজীবী মানুষকে ন্যায্য মজুরি ও আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে হচ্ছে। দৈনিক কর্মসময় ৮ ঘণ্টা সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে কার্যকর হলেও বেসরকারি খাতের শ্রমিকেরা এখনো পুরোপুরি সে সুফল পাচ্ছেন না। ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তন হলেও শ্রমজীবী মানুষের ওপর শোষণ–নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। চাঁদাবাজি, হয়রানি, নির্যাতন অহরহ ঘটছে।

বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকেরা কলকারখানা ও অঞ্চলভিত্তিক রেশনের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল, আটা ও শিশুখাদ্য সরবরাহের দাবি করলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেই। বিভিন্ন সেক্টরভিত্তিক শ্রমিকদের ঘোষিত মজুরি রোয়েদাদ কার্যকর হচ্ছে না। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও নারী শ্রমিকেরা সমকাজে সমমজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিয়োগের সমতা ও সবেতন মাতৃত্বকালীন ছুটি না পাওয়াসহ নানা ধরনের শোষণ, বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।

সমাবেশে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়ন, স্থায়ী মজুরি কমিশন গঠন করে ৩০ হাজার টাকা জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা এবং সস্তা ও বাঁধামূল্যে রেশন, স্বল্পমূল্যে বাসস্থান ও বিনা মূল্যে চিকিৎসাসহ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান বক্তারা।

টিইউসির সহসভাপতি মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সহসভাপতি আবদুর রাজ্জাক, অর্থ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন, দপ্তর সম্পাদক সাহিদা পারভীন, প্রচার সম্পাদক মোবারক হোসেন, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক আসলাম খান, গার্মেন্টস শ্রমিকনেতা ইদ্রিস আলী, হকার্স নেতা মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট ইউস র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার

স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার।

আজ শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামি সরকার। যাঁরা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

গোলাম পরওয়ার বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়ের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে, আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।’

চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।

উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি দেব প্রসাদ মন্ডলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের গোঁসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন সভাপতি তন্ময় মন্ডল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।

হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

হিন্দু সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মতুয়া সংঘের সভাপতি সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে, হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রদলের কমিটি নেই ১৪ মাস, স্থবির কার্যক্রম
  • মামলায় ঝুলে গেছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন
  • গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আদিবা হোসেন
  • সম্মেলনের প্রায় তিন মাস পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটি
  • হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার