চট্টগ্রাম সফর করলেন তিন রাষ্ট্রদূতসহ ইউএনডিপির প্রতিনিধি
Published: 1st, May 2025 GMT
ডেনমার্ক, নরওয়ে এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি আবাসিক প্রতিনিধি) ২৭ থেকে ৩০ এপ্রিল পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর করেন। সফরকালে তারা এই অঞ্চলের টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার (১ মে) ইউএনডিপির ঢাকা কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলারের নেতৃত্বে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিয়ান ব্রিক্স মোলার, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস রাঙামাটি ও বান্দরবানের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সাথে মতবিনিময় করেন। এদের মাঝে ছিলেন আদিবাসী সম্প্রদায়, স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা, নারী কমিটি এবং জুব সম্প্রদায়।
এই সফরে ইউএনডিপি ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগ এবং নর্ডিক দেশগুলোর সহযোগিতায় পরিচালিত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোর পরিদর্শন করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জলবায়ু সহিষ্ণুতা, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং জীবিকা উন্নয়নভিত্তিক প্রকল্পসমূহ।
“ডেনমার্ক পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউএনডিপির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে এবং এই অঞ্চলের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন দেখতে পেয়ে গর্বিত,” বলেন ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিয়ান ব্রিক্স মোলার।
“যদিও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, তবে আমরা ইকো-টুরিজম এবং কৃষির মতো খাতে টেকসই উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি, যা এই অঞ্চলের মানুষকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। ডেনমার্ক জলবায়ু অভিযোজন, টেকসই কৃষি এবং আদিবাসী জনগণের অধিকার রক্ষায় একযোগে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
সফরকালে তারা রাঙামাটি ও বান্দরবন জেলার কিছু গ্রাম পরিদর্শন করেন। যেখানে তারা নারী নেতৃত্বাধীন জলবায়ু সহিষ্ণুতা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন, সৌরশক্তি দ্বারা চালিত স্কুল পরিবহন ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন এবং কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যকর্মী এবং শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণ, বিশেষত মহিলাদেরকে নিজেদের উন্নয়নে নেতৃত্ব দিতে দেখেছি যা অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক।”
তিনি আরো বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন, পানির সংকট এবং শিক্ষার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তাদের সংগ্রাম সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বিষয়ে সহায়তা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি যাদের প্রতিশ্রুতি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এমন গুরুত্বপূর্ণ সেবা পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষদের নিরাপদ এবং শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।”
প্রতিনিধিদলটি সংরক্ষিত বন এবং তার ফলে প্রাপ্ত সেবাগুলোও পরিদর্শন করেন।
“পার্বত্য চট্টগ্রামে চার দিন কাটানো এবং এখানকার মানুষের সাথে মিশতে পারাটা ছিল এক বিশেষ অভিজ্ঞতা,” বলেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস।
“এই অঞ্চলের জনগণ যেভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছে এবং উন্নয়নের ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সুইডেন এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে গভীরভাবে মূল্যায়ন করে। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউএনডিপির সাথে দীর্ঘ সময় কাজ করতে পেরে গর্বিত, যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, জলবায়ু সহনশীলতা ও জেন্ডার সমতার ইত্যাদি বিষয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি।”
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, “ডেনমার্ক, নরওয়ে এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামে আমাদের এ যৌথ সফরটি, এই অঞ্চলে আমাদের অনেক দিনের একসাথে কাজ করার সুফল মনে করিয়ে দেয়।”
তিনি আরো বলেন, “নর্ডিক দেশগুলোর সহায়তায় গত ২০ বছর ধরে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই উন্নয়নের উদ্দেশ্যে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে এই অঞ্চলের মানুষদের নিয়ে একযোগে কাজ করছি।”
ঢাকা/হাসান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএনড প র ক জ কর ট কসই জলব য়
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপগঞ্জে লিফলেট বিতরণ
আওয়ামীলীগ দেশের মানুষের অধিকার হনন করেছে। তাই, দেশে এক গণবিপ্লবের সৃষ্টি হয়েছে। ২৪এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ এ দেশ থেকে বিতারিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও রূপগঞ্জ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ দুলাল হোসেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভোলাব ইউনিয়নের আতলাপুর বাজার এলাকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণকালে মোহাম্মদ দুলাল হোসেন এসব কথা বলেন।
লিফলেট বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ, বিএনপি-যুবদলসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মোহাম্মদ দুলাল হোসেন আরও বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে এ দেশের জনগণ একদলীয় শাসন ও ফ্যাসিবাদের শিকার হয়ে জিম্মি হয়ে ছিল। মানুষের বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের গণজাগরণের মধ্য দিয়ে জনগণ আবারও তাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে। এখন সময় এসেছে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার, একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার।”
তিনি আরও বলেন, “তারেক রহমানের ৩১ দফা দেশের পুনর্গঠনের পথনির্দেশনা। এই দফাগুলোতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”
এসময় স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদল নেতৃবৃন্দও লিফলেট বিতরণে অংশগ্রহণ করেন। তারা সাধারণ মানুষকে বিএনপির পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করেন যে, দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে তারা রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত এবং জনগণের পাশে থাকবে।
স্থানীয়রা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার। একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা করছেন তারা। এ ধরনের লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমে জনগণ আরও বেশি সচেতন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
প্রসঙ্গত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চলতি বছরের শুরুতে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যেখানে রাষ্ট্র সংস্কার ও জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্য তুলে ধরা হয়।