মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহায়তা পৌঁছানোর জন্য মানবিক করিডর নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তাতে ‘ফুল স্টপ’ মারতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেন, ‘আর এক পাও আগাবেন না। আপনাদের প্রতি আমাদের সমর্থন আছে, ভালোবাসা আছে। তার মানে এটা নয় যা ইচ্ছা তাই করবেন, আমরা মেনে নেব।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদ আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে এসব কথা বলেন নুরুল হক।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘আমরা একটি কথা বলতে চাই, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর ঝুঁকি তৈরি হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার কিংবা কোনো সরকারকেই নিতে দেওয়া হবে না।’

জাতীয় নির্বাচনের সময় নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে নুরুল হক বলেন, ‘নির্বাচন কবে হবে আমরা কিন্তু জানি না। আমরা রাষ্ট্র সংস্কার চাই। অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি আমাদের পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা-ভালোবাসা রয়েছে। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমার কাছে বেশি সুবিধার মনে হচ্ছে না। নির্বাচনের তাল ঠিক নেই। নির্বাচন কবে হবে কেউ জানে না। আমরা সবাই বলছি, সংস্কারের পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। কিন্তু আপনাদের বুঝতে হবে এই দাবি মাঠে কেন এসেছে। এর পেছনে ঘটনা রয়েছে।’

নুরুল হক বলেন, ‘যে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা ঘটাল, এত মানুষকে পঙ্গু করল, এখন পর্যন্ত তাদের নিষিদ্ধের বিষয়ে আমরা কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত দেখি নাই। আমরা পরিষ্কারভাবে সরকারকে বলতে চাই, অনতিবিলম্বে এই গণহত্যাকারী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’

কোনো কোনো উপদেষ্টার মধ্যে আপসকামী মনোভাব লক্ষ করা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা। তিনি বলেন, ‘কথা সত্য, কোনো কোনো উপদেষ্টার মধ্যে আপসকামী মনোভাব আমরা লক্ষ করছি। তাঁরা ওই প্রশাসনের সঙ্গে মিলে রি-ফাইন্ড আওয়ামী লীগ নামে একটি আওয়ামী লীগ আনতে চাচ্ছেন। আমরা বলতে চাই, আগুন নিয়ে খেলবেন না। একটি বিষয় পরিষ্কার, আওয়ামী লীগের প্রশ্নে গণ অধিকার পরিষদ বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি তৈরি হয়েছে। সেটি বিনষ্ট হলে ওই ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ঝুঁকিতে পড়বে। আবার এখানে একটা ভারতীয় তাঁবেদার শ্রেণি তৈরি হবে।’

বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে শ্রমিক সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো.

রাশেদ খান, আইনবিষয়ক সম্পাদক শেখ শওকত হোসেন ফরহাদ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ল হক সরক র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ‘কঠোরতম ভাষায়’ নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি’