জয়পুরহাটে সাবেক বিজিবি সদস্যকে মারপিটের অভিযোগ
Published: 2nd, May 2025 GMT
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা এলাকায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে অহিদুজ্জামান (৪৮) নামে সাবেক বিজিবি সদস্যকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাগজানা বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় আজ শুক্রবার আহত বিজিবি সদস্য পাঁচবিবি থানায় অভিযোগ করেছেন। আহত সাবেক বিজিবি সদস্য উপজেলার বাগজানা গ্রামের মৃত হালিম মুন্সির ছেলে। বর্তমানে তিনি মাইক্রোবাসের চালক হিসেবে নিয়োজিত আছেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাবেক বিজিবি সদস্য অহিদুজ্জামান বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রংপুর থেকে মাইক্রোবাস চালিয়ে এসে বাগজানা বাজারে একটি গ্যারেজে মাইক্রোবাসটি রেখে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় একই গ্রামের কালু মিয়া (২৫), বুলু মিয়া (৩০), আফজাল হোসেন (৬০) এবং সাখাওয়াত হোসেন (৫৫) মিলে তার পথ রোধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা সবাই মিলে বাঁশ ও কাঠের বাটাম দিয়ে বেদম মারপিট করে। মাটিতে পড়ে গেলে সবাই চলে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করায়।
আহত অহিদুজ্জামান বলেন, ওদের সাথে আমার পরিবারের জমি নিয়ে বিরোধ লেগেই আছে। গত রাতে ওরা চারজন মিলে আমাকে হত্যার উদ্দেশে লাঠি দিয়ে মারপিট করেছে। আমি যখন মাটিতে পড়ে যাই, তখন ওরা চলে যায়। আমি ওদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছি।
অভিযুক্ত সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কে কাকে মারপিট করেছে, এসবের কিছুই জানি না। আমার সাথে তাদের বিরোধ আছে এটা সত্য, তবে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা মিথ্যা। এ ঘটনায় আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়ানো হচ্ছে।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।