পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর সময় ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।

পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরে (আইএসপিআর) মহাপরিচালক ও সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে এই তথ্য দিয়েছেন। 

সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ছয়টি স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কোটলি, বাহাওয়ালপুর, মুজাফ্‌ফরাবাদ, বাঘ এবং মুরিদকে। এর আগে তারা পাঁচটি স্থান আক্রান্ত হওয়ার কথা স্বীকার করছিলেন।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করেছে দিল্লি

বিবিসির বিশ্লেষণ: ভারত-পাকিস্তানের নেতাদের ‘বড় জুয়া’

অবশ্য ভারত সরকার বলছে, পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের ৯টি সন্ত্রাসী স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে তারা। কোনো বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়নি। যদিও পাকিস্তানের আইএসপিআর বলছে, আক্রান্ত স্থাপনার মধ্যে একটি মসজিদ রয়েছে। 

বুধবার (৭ মে) ভোরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আহমেদ শরিফ জানান, হামলায় আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩৩ জন।

তিনি বলেন, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী একটি জবাবদিহিমূলক ও সমন্বিত পাল্টা হামলা পরিচালনা করেছে।

নিরাপত্তা সূ্ত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন লিখেছে, পাকিস্তান আত্মরক্ষায় পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এসব বিমান পাকিস্তানি ভূখণ্ডে হামলার সময় ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহার করছিল বলে দাবি করা হয়েছে।

ভূপাতিত বিমানগুলোর মধ্যে তিনটি রাফায়েল জেট, একটি মিগ-২৯ ও একটি সু-৩০। এ ছাড়া একটি ভারতীয় হেরন ড্রোনও গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী। 

আহমেদ শরিফ বলেছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বেশ কয়েকটি ভারতীয় পোস্ট ধ্বংস করা হয়েছে। নিরাপত্তা সূত্র বলছে, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী এখন ‘চূড়ান্ত ও শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া’ দিচ্ছে।

সূত্রগুলো আরও জানায়, ভারতের ১২তম ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার, যা ১৫ কোরের অধীনে নবম ডিভিশনের অংশ, সেটি পাকিস্তানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে।

এ ছাড়া দুধনিয়াল সেক্টরে এক শত্রু পোস্ট ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তানের আইএসপিআর।

পাকিস্তানের দাবি, তারা শুধু নিজস্ব সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা করছে এবং এই আগ্রাসন সম্পূর্ণভাবে ভারতের উস্কানিমূলক পদক্ষেপের ফল।

আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ারুল হক ভারতের রাতের আক্রমণকে ‘কাপুরুষোচিত এবং অতীতের ধারার পুনরাবৃত্তি’ বলে বর্ণনা করে এর নিন্দা জানান। তিনি বলেন,
“ভারত তার পুরোনো কৌশল অনুযায়ী রাতে আজাদ কাশ্মীরের কোটলি ও মুজাফ্‌ফরাবাদে হামলা চালিয়েছে।”

ঢাকা/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ প ত ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন আসিম মুনির

ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের মধ্যে ফের যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। 

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ডন ডটকম লিখেছে, চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফর করবেন আসিম মুনির। যেখানে তিনি মার্কিন সেনাপ্রধান ও পদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার ঘনিষ্ট বন্ধু হিসেবে বারবার ট্রাম্পের নাম নিলেও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ট্রাম্প যে একেবারে আলাদা, সেটি তার শুল্ক চাপানোর ঘোষণায় স্পষ্ট। 

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত

সেনাঘাঁটিতে সহকর্মীদের গুলি করলেন মার্কিন সার্জেন্ট, আহত ৫

ভারতের ওপর বর্ধিতসহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপালেন ট্রাম্প। অথচ পাকিস্তানের ওপর ট্রাম্পের চাপানো পাল্টা শুল্কের পরিমাণ মাত্র ১৯ শতাংশ। সম্প্রতি পাকিস্তানের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের সুনজর সব দিক থেকেই প্রকাশ পাচ্ছে। প্রথম সফরের দুই মাস না যেতেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের আবার যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ তার আরেকটি প্রমাণ বলা যায়।

আসিম মুনিরের এবারের সফর একটি পাল্টা সফর হবে জানিয়ে ডন ডটকম বলেছে, এর আগে জুলাইয়ের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) প্রধান জেনারেল মাইকেল এরিক কুরিলা পাকিস্তান সফর করেছিলেন।

৪ আগস্ট প্রকাশিত এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেন্ট্রাল কমান্ড তাদের প্রধান জেনারেল কুরিলার সাম্প্রতিক পাকিস্তান ও অঞ্চলটির অন্যান্য দেশ সফরের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

সফরকালে পাকিস্তান সরকার জেনারেল কুরিলাকে ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ (সামরিক)’ খেতাব প্রদান করে।

আসিম মুনির এর আগে জুনে ওয়াশিংটন সফর করন, তখন তিনি হোয়াইট হাউসে এক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে স্বাগত জানান। এটি একটি নজিরবিহীন সম্মান, যা সাধারণত কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানদের জন্য সংরক্ষিত থাকে।

ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) অথবা ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ সফর নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে তার আগের সফরে সেনাপ্রধান ইঙ্গিত দিয়েছিলেন,, তিনি বছরের শেষ দিকে আবার যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রত্যাশা করছেন।

এই ঘটনাপ্রবাহ এমন এক সময় ঘটছে যখন এর এক মাস আগেই এক কংগ্রেশনাল শুনানিতে মার্কিন জেনারেল পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় ‘চমৎকার অংশীদার’ হিসেবে অভিহিত করেন। একই সঙ্গে তিনি অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় পাকিস্তানের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

‘প্রেসিডেন্ট হওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই’
ডন ডটকম জানিয়েছে, সেনাপতি আসিম মুনিরের প্রেসিডেন্ট হওয়ার গুজবকে সম্পূর্ণভাবে উড়িয়ে দিয়েছেন আইএসপিআর প্রধান।

এর আগে জুলাইয়ের শুরুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভিও স্পষ্ট করেছিলেন, প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগে বাধ্য করার বা সেনাপ্রধানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কোনো পরিকল্পনার কথা সরকারের মধ্যে নেই।

দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, তার বসের (আসিম মুনিরের) প্রেসিডেন্ট হওয়ার আলোচনাকে তিনি ‘নিরর্থক’ মনে করেন।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেজর সাদিকুলের স্ত্রী জাফরিন ৫ দিনের রিমান্ডে
  • ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন আসিম মুনির
  • সেনা হেফাজতে থাকা মেজর সাদিকুলের স্ত্রী এখন ডিবি হেফাজতে