ভারতের হামলার জবাব দিতে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

পাকিস্তান বলেছে, জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের আওতায় তাদের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। দেশটি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন এবং বেসামরিক প্রাণহানির প্রতিশোধ নিতে ‘নিজস্ব সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে’ ভারতের হামলার জবাব দেওয়ার অধিকার তারা রাখে।

পাকিস্তানের বিবৃতির বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পূর্ণ অনুমোদন’ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) এক বৈঠকের পর এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে পাকিস্তান ভারতের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।

গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এখন তা পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে। পেহেলগামে হামলার ১৫ দিনের মাথায় বুধবার প্রথম প্রহরে পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে ভারত। দেশটি এ অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের ৪২% মানুষ ব্যক্তিগত তথ্য চুরির শঙ্কায় থাকেন

বাংলাদেশে প্রতি ১০ জনের সাতজনই অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এটি সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার তুলনায় বেশি। পাশাপাশি দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির শঙ্কায় থাকেন। সংবাদের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৫৪ শতাংশ মানুষ। বহুজাতিক মোবাইল কোম্পানি টেলিনর এশিয়া প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ডিজিটাল লাইভস ডিকোডেড বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

২০২৪ সালের মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে গবেষণাটি করে টেলিনর এশিয়া। ১৬ থেকে ৬৪ বছর বয়সী এক হাজার ব্যবহারকারীর ওপর জরিপ চালানো হয়। টেলিনর এশিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মনীষা ডোগরা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেনসহ টেলিনর ও গ্রামীণফোনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। প্রতি ১০ জনের ৯ জন মোবাইল ব্যবহারকারী আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স টুল ব্যবহার করে। ৬৩ শতাংশ মানুষ অনলাইন লার্নিংকে উপকারী মনে করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৭০ শতাংশ অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। উদ্বেগ থাকলেও নিরাপত্তাচর্চায় ব্যক্তিগত সচেতনতা কম। ব্যবহারকারীদের ৫০ শতাংশ মনে করেন, অনলাইনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। এক-তৃতীয়াংশ ব্যবহারকারী মনে করেন, সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব রয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে আছে নিজস্ব সচেতনতা। উত্তরদাতাদের ৪২ শতাংশ পরিচয় জালিয়াতি এবং ৪০ শতাংশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বানানো ডিপফেক নিয়ে উদ্বিগ্ন।

জরিপে বলা হয়, জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্ম ডিপফেক নিয়ে বেশি চিন্তিত। এআইভিত্তিক স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহারে ৪৩ শতাংশ মানুষ ব্যক্তিগত তথ্য অপব্যবহারের আশঙ্কা করে। ৫৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা কোম্পানিগুলোকে বিভিন্ন অফারের বিনিময়ে নিজের ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশাধিকার দেবে। আর ৪৯ শতাংশ এআই ছবি বা ফিল্টারের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাপগুলোকে ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশাধিকারের সুযোগ দেবে। তবে বাংলাদেশি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা গোপনীয়তা সুরক্ষা টুলের চেয়ে ওয়েবসাইটের নিরাপত্তার ওপর বেশি ভরসা করে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, এ দেশের মানুষ লোকেশন ট্র্যাকিং নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও, প্রযুক্তিনির্ভর সুবিধা ছাড়তে রাজি নন। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা কমই আনসাবস্ক্রাইব করেন, ব্রাউজিং ইতিহাস মুছে ফেলেন, ওয়েবসাইট কুকিজ কম প্রত্যাখ্যান করেন এবং অ্যাড-ব্লকার ব্যবহার করেন। 

অনুষ্ঠানে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক বলেন, মানুষের হাতে সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তারা যেন নিরাপদ ও দায়িত্বশীল হয়ে মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করেন, তা নিশ্চিত করাটা সবার সম্মিলিত অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ