শাহবাগ ব্লকেড, বিকল্প কোন পথে কোন বাস চলছে
Published: 10th, May 2025 GMT
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানী ঢাকার শাহবাগ মোড়ে ব্লকেড চলছে। শাহবাগ হয়ে যে বাসগুলো যাতায়াত করে, সেগুলো চলছে বিকল্প পথে।
গতকাল শুক্রবার রাত থেকেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ মোড়ে ব্লকেড শুরু হয়। আজ শনিবার দুপুরে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবরোধ চলছে। একই দাবিতে আজ বেলা তিনটায় শাহবাগে গণজমায়েত কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শাহবাগ দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা বাসগুলো বিকল্প পথে চলছে। আজ ছুটির দিন। তবে শাহবাগে যান চলাচল বন্ধ থাকা ও বিকল্প পথে বাস চলার কারণে আশপাশের রাস্তাগুলোতে সকাল ১০টার পর থেকে কিছুটা যানজট দেখা গেছে।
মিরপুর–১২ নম্বর থেকে শাহবাগ-যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত শিকড় পরিবহনের বাস চলে। এটি প্রেসক্লাব-মৎস্য ভবন-মগবাজার-বাংলামোটর পথে চলছে। মিরপুর–১২ নম্বর থেকে শাহবাগ হয়ে সদরঘাট পর্যন্ত পথের বিহঙ্গ পরিবহন, তানজিল পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি বাস একই পথে চলছে।
ফুলবাড়িয়া থেকে সাভার-আশুলিয়া পর্যন্ত চলা এয়ারপোর্ট পরিবহন, চন্দ্রা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলা ওয়েলকাম পরিবহনসহ শাহবাগ হয়ে চলা বেশ কয়েকটি বাস চলছে মগবাজার-বাংলামোটর পথে।
অন্যদিকে শাহবাগ হয়ে মোহাম্মদপুর থেকে চিটাগাং রোড হয়ে চলা রজনীগন্ধা পরিবহন, চন্দ্রা থেকে সদরঘাট পর্যন্ত চলা সাভার পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি বাস চলছে মগবাজার-বাংলামোটর-কারওয়ান বাজার-পান্থপথ পথে।
আজিমপুর থেকে শাহবাগ হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত চলে দেওয়ান পরিবহন। এটি চলছে বাংলামোটর- মোতালেব প্লাজা-কাঁটাবন মোড় হয়ে সায়েন্স ল্যাব পথে। একই পথে চলছে বনশ্রী থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত চলা রমজান পরিবহন, যাত্রাবাড়ী থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত চলার ট্রান্স সিলভা পরিবহনের বাসগুলো।
আরও পড়ুনচলছে শাহবাগ ব্লকেড, অন্যান্য মহাসড়কে ব্লকেড না দেওয়ার আহ্বান হাসনাতের৩ ঘণ্টা আগেকমলাপুর থেকে বাংলামোটর মোড় হয়ে মিরপুর–১২ চিড়িয়াখানা পর্যন্ত চলে আয়াত পরিবহন। এই পথের নিয়মিত যাত্রী শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব ইসলাম। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনে থেকে আগারগাঁওয়ের উদ্দেশে বাসে ওঠেন তিনি। তিনি বলেন, ‘যেহেতু আজকে শনিবার, সেহেতু যানজট কম থাকার কথা ছিল, কিন্তু এই পথে সব বাস চলার কারণে যানজট। মগবাজার সিগন্যালে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়েছে, এখন বাংলামোটর সিগন্যালে বসে আছি।’
ফুলবাড়িয়া থেকে শাহবাগ রুট হয়ে আশুলিয়া পর্যন্ত চলা এয়ারপোর্ট পরিবহন বাসের চালক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মগব জ র পর বহন ব কল প ব লক ড য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’
তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’
ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।
ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’
পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।
গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।
তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।
দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫