কর্মক্ষেত্রে নিজের দোষে আত্মবিশ্বাস হারাবেন না
Published: 18th, May 2025 GMT
মনোবিদরা বলেন, ‘‘সাধারণত সমালোচনা কিংবা নেতিবাচক আলোচনা তারাই করেন যাদের মধ্যে এক ধরণের নেতিবাচক কনফিডেন্স থাকে।’’ সুতরাং কোনো সহকর্মীকে নিয়ে অন্য সহকর্মীর কাছে দিনের পর দিন নেতিবাচক সমালোচনা করছেন মানে আপনি আপনার নেতিবাচক আত্মবিশ্বাসকে আরও বেশি জাগিয়ে তুলছেন।
ডা. মেখলা সরকার, সাইকিয়াট্রিষ্ট একটি পডকাস্টে বলেন, ‘‘কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীকে খোঁচাখুচি করা, সমালোচনা করা কিংবা পেছনে কথা বলা ইত্যাদি আচরণ থেকে বিরত থাকুন। অন্যের সমালোচনা বা নেতিবাচক কমেন্ট কিন্তু আপনারই পজিশনকে নেতিবাচক করে তুলছে। এবং যার কাছে আপনি অন্য একজনকে নিয়ে সমালোচনা করছেন তার কাছেও আপনার নেতিবাচক একটা অবস্থান তৈরি হচ্ছে।’’
‘‘এই নেতিবাচক সমালোচনা বা এই পরষ্পর সমালোচনা বা তার প্রতি যে এক ধরণের নেতিবাচক চর্চা সেটা কিন্তু কর্মক্ষেত্রের পরিবেশটাকে অনেক নেগেটিভ করে থাকে। এর ফলে শুধু যে কর্মপরিবেশ নষ্ট হচ্ছে তা না, অন্যের চোখে আপনার অবস্থানও নেতিবাচক হয়ে যায়। যাকে নিয়ে আপনি কথা বলছেন, যা বলছেন সেটা কিন্তু ঠিকই তার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। কাজেই আপনি কিন্তু এক ধরণের অপ্রয়োজনীয় শত্রু তৈরি করছেন।’’—যোগ করেন মেখলা সরকার
আরো পড়ুন:
‘ইমোশনালি ম্যাচিউর’ বাবা মায়েরা শিশুর সঙ্গে যে পাঁচ আচরণ করেন
বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের ‘রিকশা গাউন’
মেখলা সরকারের পরামর্শ— কর্মক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন একটা বাউন্ডারি সেট করতে। সেই বাউন্ডারির ভেতরে থেকে অন্যকে নিয়ে নেতিবাচক সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকবেন।
এসব পরামর্শ মেনে চলতে পারলে আপনার অবস্থান অন্যদের কাছে নেতিবাচক হবে না, আপনার অপ্রয়োজনীয় শত্রু তৈরি হবে না এবং আপনার ইতিবাচক আত্মবিশ্বাস বাড়তে থাকবে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’