সেনা কর্মকর্তাদের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করলেন সশস্ত্র বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুতরা
Published: 18th, May 2025 GMT
চাকরি ফিরে পাওয়াসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দিনভর বিক্ষোভ শেষে আজ রোববার সন্ধ্যায় কর্মসূচি স্থগিত করেছেন বিভিন্ন সময় সশস্ত্র বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হওয়া একদল ব্যক্তি। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভেতরে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক শেষে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তাঁরা কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাঁদের দাবিগুলো শুনেছেন। দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁরা আশ্বস্ত হয়ে আন্দোলন আপাতত স্থগিত করেছেন। এ বিষয়ে আগামীকাল সোমবার তাঁরা একটি বিবৃতি দিয়ে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে জানাবেন। এই সময় পর্যন্ত ঢাকার বাইরে থেকে আসা আন্দোলনকারীদের ঢাকায় অবস্থান করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে আলোচনা শেষে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার পর কিছু ব্যক্তি গাড়িবহরের পেছন পেছন গিয়ে নানা ধরনের ‘উসকানিমূলক স্লোগান দেন’। এ সময় প্রেসক্লাবের উল্টো দিকের সড়কে গাড়িবহরের পিছু নেওয়া ব্যক্তিদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেন সেনাসদস্যরা।
আন্দোলনকারীরা জানান, ‘বাংলাদেশ সহযোদ্ধা প্ল্যাটফর্ম’–এর ব্যানারে আজ সকাল সাতটার পর থেকেই তাঁরা প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন। বেলা ১১টার দিকে প্রেসক্লাব এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর গেটের দিকে যাওয়ার জন্য রওনা দেন। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাধা দেওয়ায় এগোতে পারেননি। বেলা দুইটার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আসেন সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমান। পরে দুই দফা তিনি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্বিতীয় দফা বৈঠক শেষে তিনি গাড়িবহর নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
বিভিন্ন সময় সশস্ত্র বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত ব্যক্তিদের সংগঠন বাংলাদেশ সহযোদ্ধা প্ল্যাটফর্মের (বিসিপি) সদস্যরা সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পথ আটকে বিক্ষোভ করছেন। আজ রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন কর মকর ত
এছাড়াও পড়ুন:
ছেলের গলায় ছুরি ধরে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় দুই বছর বয়সী ছেলের গলায় ছুরি ধরে এক গৃহবধূকে (২৮) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার একটি চা-বাগান সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা ওই গৃহবধূকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেন। পরে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই গৃহবধূ ও তার ছেলেকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে ওই গৃহবধূ পঞ্চগড় সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। এর আগে, এদিন সকালে উপজেলার জগদল বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে পুলিশ।
আরো পড়ুন:
তালাক দেওয়ার পর আটকে রেখে প্রাক্তন স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
মুরাদনগরে পর্নোগ্রাফি মামলায় ৪ যুবক ৩ দিন রিমান্ডে
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের জগদল বাজার এলাকার জনি ইসলাম (২৭), বিপ্লব হোসেন (২৫), মকছেদুল ইসলাম (৩৩) এবং সাতমেড়া ইউনিয়নের বদিনাজোত এলাকার সাদেকুল ইসলাম (২৮)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার একটি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন ওই গৃহবধূ। শুক্রবার রাতে বাসা থেকে ইজিবাইকযোগে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি। সদর ইউনিয়নের তিনমাইল সুরিভিটা এলাকায় পৌঁছলে তার ইজিবাইকের পেছনে থাকা আরেকটি ইজিবাইকের পরিচিত চালক নাম ধরে ডাকতে থাকেন। পরে থামতেই তাকে জনিসহ ছয়জন সড়কের পাশের একটি চা-বাগান সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে শিশু সন্তানের গলায় ছুরি ধরে ওই গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন তারা। ধর্ষণের একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়ে থাকেন ওই গৃহবধূ। পরে স্থানীয় একটি সড়কের পাশে তাকে ফেলে পালিয়ে যান ধর্ষকেরা। ৯৯৯-এ খবর পেয়ে পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আমার ছোট্ট ছেলের গলায় ছুরি ধরেছিল তারা। তখন আমি নিরুপায় হয়ে পড়ি। চিৎকার করতে চাইলে আমাকে তারা ভয়ভীতি দেখায়। পরে একে একে ছয়জন আমাকে ধর্ষণ করে। চারজন পরিচিত আর দুইজন অপরিচিত। আমি ধর্ষণের শিকার হলাম এখন আমার কাছের লোকজন আপসের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আবুল কাশেম বলেন, ‘‘রাতে পুলিশ অচেতন অবস্থায় এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। ধর্ষণের বিষয়টি পরীক্ষার পরে জানা যাবে। আপাতত তিনি শারীরিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছেন।’’
পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, ‘‘৯৯৯-এ খবর পেয়ে পুলিশের একটি টহল দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানে অচেতন অবস্থায় এক নারী এবং তার সঙ্গে থাকা একটি শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ওই নারীর জ্ঞান ফিরলে তিনি ঘটনার বিস্তারিত জানান। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’’
ঢাকা/নাঈম/রাজীব