ইসি পুনর্গঠন ছাড়া কোনো ভোট করতে দেবে না এনসিপি: নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী
Published: 21st, May 2025 GMT
বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ইসি পুনর্গঠন ছাড়া এনসিপি কোনো ভোট করতে দেবে না। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে। আমরা যতদিন বেঁচে আছি, এই কমিশন পুনর্গঠন করে ছাড়বই।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন এবং অবিলম্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এ কথা বলেন তিনি। সমাবেশে দেড় শতাধিক এনসিপি নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আগের দিন মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা দেন সংগঠনের মহাসচিব আখতার হোসেন। এনসিপি ঢাকা মহানগর এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে আগতরা বক্তব্য রাখেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
সন্দ্বীপে খালের দখল নিয়ে বিরোধে দশম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু, পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে খালের দখলকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার দশম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম মো. রিফাতুর রহমান (১৭)। সে উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জামসেদুর রহমানের ছেলে। রিফাত মগধরা ইউনিয়নের দক্ষিণ-পূর্ব সন্দ্বীপ উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ত। সে স্থানীয় কোরাইল্যা খালে বাঁধ দেওয়ার বিরোধিতা করেছিল।
ছেলের ওপর হামলা ও মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় এক বিএনপি নেতাকে দায়ী করেছেন রিফাতের বাবা জামসেদুর রহমান। পুলিশের মিথ্যা তথ্যের জন্য ছেলেকে উদ্ধার এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তিনি ছেলে হত্যার বিচার চেয়েছেন।
জানা গেছে, গত সোমবার (১৯ মে) উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের একটি খালের দখল নিয়ে বিএনপি ও যুবদলের কর্মীদের হামলায় গুরুতর জখম হয় রিফাত। মঙ্গলবার বেলা একটায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে।
রিফাতের বাবার অভিযোগ, চিহ্নিত কিছু সন্ত্রাসী তাঁর ছেলেকে বাড়ির কাছ থেকে ধরে নিয়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের দুই সদস্য তাঁকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।
প্রথম আলোকে রিফাতের বাবা জামসেদুর রহমান বলেন, ‘ছেলেকে রাজু বাহিনী আটকে রাখলেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ আমাকে বলেছে, তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে আরও অনেক পরে।’
রিফাতের বাবার অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল ইসলাম চৌধুরী।
ছেলের ওপর হামলা ও মৃত্যুর জন্য সারিকাইত ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীকে দায়ী করেন রিফাতের বাবা। তাঁর অভিযোগ, শওকত আলীর নেতৃত্বে তাঁর ছেলের ওপর হামলা হয়েছে। রিফাতকে আটকে রাখার স্থানে তিনি শওকত আলীকে দেখেছেন।
অভিযুক্ত শওকত আলীর বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি কল ধরেননি।
এলাকায় মাদক, দখলবাজি ও জনদুর্ভোগের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছেলে প্রাণ হারিয়েছে জানিয়ে জামসেদুর রহমান বলেন, ‘রাজু বাহিনী (শওকত আলী) ১৯ মে রাত আটটায় আমার বাড়ির কাছে থেকে আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে চার ঘণ্টা আটকে রাখে। তার অপরাধ, সে বাড়ির পাশের খাল দখলের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। ছেলেকে আটকে মারধর করা হচ্ছে শুনে আমি মগধরা-সারিকাইত সীমান্তে বেড়িবাঁধে যাই। তখন সেখানে উপস্থিত পুলিশের একজন কর্মকর্তা আমাকে বলেন, রিফাতকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অথচ আমার ছেলে তখনো সেখানে আটক ছিল।’
পুলিশ কেন এমনটা বলেছে? আপনার কী মনে হয়? এমন প্রশ্নের জবাবে জামসেদুর রহমান বলেন, ‘কেন এমন মিথ্যা তথ্য দিয়েছে, আমি বুঝতে পারতেছি না। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মাথার গভীর আঘাতে দীর্ঘ সময় রক্তক্ষরণে রিফাতের মৃত্যু হয়েছে। সময়মতো চিকিৎসা করা হলে ছেলেকে বাঁচানো যেত। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে সন্দ্বীপ থানার ওসি এ কে এম সফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এই দাবি সঠিক নয়। পুলিশের দায়িত্ব ভুক্তভোগীকে (ভিকটিমকে) দ্রুত হাসপাতালে পাঠিয়ে চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। এ ক্ষেত্রেও তা–ই হয়েছে। খবর পাওয়ার পর পুলিশ সদস্যরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মগধরা ইউনিয়নের কোরাইল্যা খাল নামে পরিচিত একটি খালের দখল নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের কিছু কর্মীর মধ্যে রেষারেষির সৃষ্টি হয়। খালটি শওকত আলীর অনুসারী আলমগীর নামের এক যুবদল নেতা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ইজারা নেন। স্কুলপড়ুয়া রিফাত খালে বাঁধ দেওয়ার বিরোধিতা করলে তার সঙ্গে কয়েকজনের তর্ক হয়।
প্রতিবেশীরা জানান, রিফাতের বাবা জামসেদুর রহমান ও তাঁর পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। স্থানীয় রাজনীতিতে জামসেদুর রহমান ও শওকত আলী ভিন্ন ভিন্ন নেতার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।