অডিও ফাঁস: মিরপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে বদলি
Published: 22nd, May 2025 GMT
কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে বদলি করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সংযুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আদালতের রায়ে মিরপুর পৌরসভায় নির্বাচিত মেয়রের গেজেট প্রকাশ আটকাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়ার জেরে তাকে বদলি করা হয়েছে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) নির্বাচন কমিশনের সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমানের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে মিরপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.
আরো পড়ুন:
চবিসাসের নেতৃত্বে জানে আলম-মাহফুজ
রাজনীতির ফাঁদে পড়ে শিল্পীরা বিপদে, মন্তব্য বাপ্পারাজের
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাঈফ আহমেদ নাসিমকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বদলি করা হয়েছে। মো. সাঈদ আহমেদ নাসিমকে বৃহস্পতিবারের (২২ মে) মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হতে বলা হয়েছে। অন্যথায়, আগামী শনিবার (২৪ মে) তাৎক্ষণিক অবমুক্ত মর্মে গণ্য হবেন।
অভিযোগ রয়েছে, গেজেট প্রকাশ ঠেকাতে ইউএনও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে (ইউএনও অফিসের অধীন নির্বাচন অফিসার) প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র সরবরাহের নির্দেশ দেন। তবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাঈফ আহমেদ নাসিমের কাছে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র না থাকায় তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. এনামুল হকের কাছ থেকে সেগুলো সংগ্রহের চেষ্টা করেন।
তবে এই কাজ করতে গিয়ে তিনি একটি ভুল করে বসেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. এনামুল হককে টেলিফোন করতে গিয়ে ভুলবশত আদালতের রায়ে বিজয়ী ‘মোবাইল’ প্রতীকের প্রার্থী আরিফুর রহমানকে ফোন করে ফেলেন। এরপর গেজেট আটকাতে ইউএনওর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আরিফুর রহমানের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চান তিনি। এছাড়া ‘ফরম-চ’ দিয়ে সহায়তা করতে বলেন।
ঢাকা/হাসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএনও আহম দ ন স ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি
ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।
শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।
ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।
কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলাশিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।
শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’
শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী