কাঁচা চামড়া নিতে চীনকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ
Published: 22nd, May 2025 GMT
কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চায় সরকার। এ জন্য কাঁচা চামড়া রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে কাঁচা চামড়া আমদানির অনুরোধ জানিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতকে চিঠি পাঠানো হবে। একইসঙ্গে চামড়া আমদানি ও রপ্তানিবিষয়ক সুনির্দিষ্ট তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোতে (ইপিবি) চিঠি দিবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আজ বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্য সচিব মহাবুবুর রাহমানের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, আসন্ন কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বৈঠক উপস্থিত না হতে পারায় দাম চূড়ান্ত হয়নি। আগামী রোববার দাম ঘোষণা করা হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কোরবানির ঈদের পর অন্তত ১৫ দিন স্থানীয় পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়ে আধা-সরকারি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংসহ দেশব্যাপী ৭০ হাজার টন লবণ সরবরাহ করবে শিল্প মন্ত্রণালয়। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ হাজার টন লবণ বিনামূল্যে দেওয়া হবে। গত বুধবার এ সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে বিষয়টি জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয় ১৬ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলার। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানি বেড়ে দাঁড়ায় ১ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারে। তবে গত অর্থবছরে আয় কমে দাঁড়ায় ১ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ কম। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ৯৩২ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাজ্যের পাওনা আটকে রাখায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুর মামলা
প্রাপ্য অর্থ আটকে রাখার অভিযোগ এনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে তামিলনাড়ু সরকার। রাজ্য সরকারের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি মানেনি বলে রাজ্যের পাওনা টাকা আটকে রাখা হয়েছে। এর জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজ্যে পুরো শিক্ষা প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে তামিলনাড়ুর ডিএমকে-কংগ্রেস জোট সরকারের সম্পর্ক বেশ কিছুদিন ধরেই খারাপ। রাজ্যপাল আর এন রবির সঙ্গে রাজ্য সরকারের ঝগড়া চলছে নিত্য। একাধিক বিলে সম্মতি না দিয়ে ফেলে রাখার জন্য তামিলনাড়ু সরকার এর আগে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল।
সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিলেন, রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতি কেউই অনির্দিষ্টকাল বিলে সই না করে থাকতে পারেন না। তিন মাসের মধ্যে বিলে সম্মতি না দিলে সেই বিল পাস হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে। ওই রায় ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে নতুন জটিলতা। রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের কাছে রায়ের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন।
এবারের মামলা নিয়ে সমস্যার সূত্রপাত ২০২০ সালে। ওই বছর নরেন্দ্র মোদির সরকার নতুন কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি চালু করে। সেই নীতিতে প্রতি রাজ্যের সরকারি বিদ্যালয়ে তিনটি ভাষা শেখার ওপর জোর দেওয়া হয়। স্থানীয় ভাষা ও ইংরেজির সঙ্গে হিন্দি শেখা বাধ্যতামূলক করা হয়। তামিলনাড়ু সরকার এভাবে জবরদস্তি হিন্দি চাপানোর বিরোধিতা করে। ত্রিভাষা নীতি রূপায়ণের মধ্য দিয়ে জোর করে হিন্দি চাপানোর অভিযোগ আনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। এই হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন অন্য অহিন্দিভাষী রাজ্যগুলোকেও শামিল করেন।
তামিলনাড়ু সরকারের অভিযোগ, জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর না করায় কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষা বিস্তারে তামিলনাড়ুকে আর্থিক অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে। পুরো শিক্ষা প্রকল্পে প্রাপ্য ২ হাজার ১৫১ কোটি রুপি মোদি সরকার দিচ্ছে না। তামিলনাড়ুর অভিযোগ, এর ফলে রাজ্যের স্কুলপড়ুয়ারা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টে তামিলনাড়ু সরকার এ কথাও জানিয়েছে, গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রের প্রকল্প অনুমোদন বোর্ডের বৈঠক বসেছিল। বৈঠকের পর বোর্ড জানিয়েছিল, তারা তামিলনাড়ু সরকারের প্রয়োজন সম্পর্কে অবহিত আছে। ওই বৈঠকের পর রাজ্যের জন্য ২ হাজার ৫৮৫ কোটি ৯৯ লাখ রুপি শিক্ষা খাতে বরাদ্দ হয়।
মোট বরাদ্দের ৬০ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদান, বাকি ৪০ শতাংশ রাজ্যের খরচ করার কথা। সেই অনুপাতে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ ২ হাজার ১৫১ কোটি। ওই টাকা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। সর্বোচ্চ আদালতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যের অভিযোগ, জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতার জন্যই ওই টাকা আটকে রাখা হয়েছে। অন্যায়ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।