সাড়ে তিন বছরের যুদ্ধের ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিলো রাশিয়া ও ইউক্রেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার উভয় দেশই সামরিক-বেসামরিক মিলে ৭৮০ জন যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। খবর রয়টার্সের।

শুক্রবার মুক্তি পাওয়া এই যুদ্ধবন্দিদের ৩৯০ জন ইউক্রেনের, বাকি অর্ধেক রাশিয়ার। উভয় দেশই ২৭০ জন করে সামরিক এবং ১২০ জন করে বেসামরিক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।

সম্প্রতি তুরস্কে দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে হওয়া সংলাপে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে যেসব সমঝোতা হয়েছে, সেসবের আওতায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এই যুদ্ধবন্দিদের। তুরস্কের বৈঠকে উভয় দেশের ৫০০ জন করে মোট ১ হাজার যুদ্ধবন্দির মুক্তির ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। তাদের মধ্যে শুক্রবার মুক্তি পেলেন ৭৮০ জন। আজ শনিবার ও আগামীকাল রোববার বাকি ২২০ জনকে ছেড়ে ও দেওয়া হবে।

গতকাল যে ৩৯০ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে মস্কো, তাদের একজন ওলেক্সান্দার নেহির ইউক্রেনীয় বাহিনীর একজন সেনা সদস্য। তার স্ত্রী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তির পর ইউক্রেনের সুমি শহরের বাসিন্দা নেহির বলেন, আমাকে যে আজ মুক্তি দেওয়া হচ্ছে—আমার স্ত্রীকে জানানো হয়নি। এমনিতে কারা কর্তৃপক্ষ প্রতি শুক্রবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ করতে দেয়। সে আমার সঙ্গে আজ ওই সাপ্তাহিক সাক্ষাৎ করতেই এসেছিল। এসে যখন দেখল যে আমি মুক্তি পেয়েছি, সে খুশিতে প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি ঠিক কেমন—আপনি যদি কখনও এ ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে না যান, তাহলে আপনাকে তা বলে বোঝানো কঠিন। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, কখনও বিশ্বাস হারানো চলবে না, নিরাশ বা হতাশ হওয়া চলবে না।

যুদ্ধবন্দিদের মুক্তিদানের ব্যাপারটিকে স্বাগত জানিয়েছেন এ যুদ্ধের প্রধান মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। শুক্রবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, মস্কো-কিয়েভ উভয়পক্ষের সমঝোতাকে স্বাগত। এই সমঝোতা কি অদূর ভবিষ্যতে আমাদেরকে বড় কোনো সুসংবাদের দিকে নিয়ে যাবে?

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র শ য় ইউক র ন য দ ধ বন দ য দ ধবন দ ক শ ক রব র ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘রব্বানা হাবলানা’: পরিবারের জন্য এক অমূল্য দোয়া

‘হে আমাদের রব! আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্য থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান করো এবং আমাদের নেককারদের নেতা বানাও।’ এই কথাগুলো কোরআনের সুরা ফুরকানের ৭৪ নম্বর আয়াতে লিপিবদ্ধ আছে।

মূল আরবি দোয়াটির উচ্চারণ হলো, ‘রব্বানা হাবলানা মিন আযওয়াজিনা ওয়া জুররিয়্যাতিনা কুররাতা আ’ইয়ুন ওয়াজাআলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা।’

এটি শুধু একটি দোয়া নয়, বরং পরিবারের কল্যাণ, সন্তানের নেক আমল এবং নিজের নেতৃত্বের জন্য আল্লাহর কাছে এক হৃদয়গ্রাহী প্রার্থনা।

আরও পড়ুননবী সুলাইমান (আ.)–এর দোয়া১৪ মার্চ ২০২৪দোয়ার তাৎপর্য

পবিত্র কোরআনের সুরা ফুরকানে আল্লাহ তাঁর নেক বান্দাদের গুণাবলি বর্ণনা করেছেন। এই আয়াতে তাঁদের একটি আকাঙ্ক্ষা কথা প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে তাঁরা আল্লাহর কাছে এমন একটি পরিবারের প্রার্থনা করেন, যাঁরা তাঁদের চোখের শীতলতা এবং হৃদয়ের শান্তির উৎস হবে।

আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ শফী বলেন, এই দোয়া মুমিনকে তাঁর পরিবারের জন্য দায়িত্বশীল হতে শেখায়। এটি কেবল স্ত্রী-সন্তানের ভালো থাকার প্রার্থনা নয়, বরং নিজেকে এমন একজন নেতা হিসেবে গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা, যিনি নেককারদের পথ দেখাতে পারেন।

এই দোয়ার দ্বিতীয় অংশ, ‘আমাদের মুত্তাকিদের নেতা বানাও,’ বোঝায় যে একজন মুমিনের উচিত নিজের পরিবারকে নেক পথে পরিচালিত করা এবং সমাজে ন্যায় ও সত্যের পথপ্রদর্শক হওয়া। (মাআরিফুল কোরআন, পৃষ্ঠা ৬৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ১৯৯৮)

আরও পড়ুনদোয়া কীভাবে করতে হয়২০ এপ্রিল ২০২৫এটি কেবল স্ত্রী-সন্তানের ভালো থাকার প্রার্থনা নয়, বরং নিজেকে এমন একজন নেতা হিসেবে গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা, যিনি নেককারদের পথ দেখাতে পারেন।কখন এই দোয়া করতে হয়

‘রব্বানা হাবলানা’ দোয়াটি পড়ার নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই। যেকোনো সময় পড়া যায়—নামাজের পর, সিজদায় বা দৈনন্দিন জীবনে যখন ইচ্ছা। বিশেষ করে বিবাহিত জীবনে শান্তি, সন্তানের নেক আমল বা পারিবারিক সুখ কামনায় এই দোয়া অত্যন্ত ফলপ্রসূ। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে সব সময় দোয়া করো, কারণ দোয়া ইবাদতের মূল।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩,৩৭১)

এই দোয়া স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা, সন্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং পারিবারিক শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে।

আল্লামা শানকিতি বলেন, এই দোয়া মুমিনকে তাঁর পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার পাশাপাশি সমাজে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রস্তুত করে। একটি নেককার পরিবারই সমাজের মূল ভিত্তি এবং এই দোয়া সেই ভিত্তি মজবুত করার জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। (শানকিতি, মুহাম্মদ আল-আমীন, আদ্বাউল বায়ান ফি ঈযাহিল কোরআন, পৃষ্ঠা ৪৭৮, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়া, ২০০৫)

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সেই, যে তার পরিবারের জন্য সর্বোত্তম।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১,৯৭৭)

আরও পড়ুনসন্তানকে বদ দোয়া করবেন না২১ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বিশ্ব আর কোনো সম্রাট চায় না’, ট্রাম্পকে লুলার হুঁশিয়ারি
  • ঠিকাদার উধাও, থমকে গেছে হাই-টেক পার্ক নির্মাণকাজ
  • ওয়েবসাইটের তথ্য জালিয়াতি প্রতারণার ফাঁদে ৭০০ শিক্ষক
  • নবীগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় আটক ৫
  • সুইমিংপুলের পানি সরিয়ে তৈরি হলো অফিস
  • বৃদ্ধ দম্পতিকে কুপিয়ে ঘরে লুট, একজনের মৃত্যু
  • খুলনায় মেলা ঘিরে চাঁদাবাজির অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী দুই নেতাকে শোকজ
  • টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়াল
  • রাহুল-শ্রদ্ধার ছবি ভাইরাল, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
  • ‘রব্বানা হাবলানা’: পরিবারের জন্য এক অমূল্য দোয়া