সিলেটের বিয়ানীবাজার ও মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১৫৩ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল শনিবার গভীর রাত থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত বড়লেখার শাহবাজপুর চা-বাগান ও লাতু সীমান্ত থেকে ১২১ জনকে এবং বিয়ানীবাজারের নয়াগ্রাম এলাকার একটি বিল থেকে ৩২ জনকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিএসএফ তাঁদের সীমান্তে একত্রিত করে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি। আটক সবাই বাংলাদেশের নাগরিক এবং বেশির ভাগের বাড়ি কুড়িগ্রামে। তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হবে বলে বিজিবি জানিয়েছে।

বড়লেখায় ১২১ জন আটক

বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাত আড়াইটা থেকে আজ সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত বড়লেখার শাহবাজপুর চা-বাগান ও লাতু সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে নারী-শিশুসহ ১২১ জনকে আটক করেছে বিজিবি। শাহবাজপুর চা-বাগান ও লাতু সীমান্ত দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ। আটক সবার বাড়ি বাংলাদেশে। বেশির ভাগই কুড়িগ্রামের বাসিন্দা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ৫২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আটক ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। বেশির ভাগের বাড়ি কুড়িগ্রামে। দু-একজনের বাড়ি কুমিল্লা ও খুলনায়। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কাছে তাঁদের হস্তান্তর করা হবে।

সিলেট সীমান্তে আটক ৩২

এদিকে সিলেটের বিয়ানীবাজারের নয়াগ্রাম এলাকার একটি বিল থেকে ২৩ নারী ও শিশুসহ ৩২ জনকে আটক করেছে বিজিবি। বিএসএফ তাঁদের সীমান্তে জড়ো করে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছে। আজ সকালে তাঁদের আটক করা হয়। তাঁরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক এবং কুড়িগ্রামের বাসিন্দা। এ নিয়ে গত ১২ দিনে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ৬৯ জনকে ঠেলে পাঠানো হলো।

বিজিবি সূত্র জানায়, বিজিবির বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়নের (৫২ বিজিবি) নয়াগ্রাম বিওপির সদস্যরা আজ সকালে নয়াগ্রাম এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় ওই ৩২ জনকে একটি বিল থেকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদের বরাতে বিজিবি জানায়, বিএসএফ তাঁদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি বিলে নামিয়ে দেয়।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.

মেহেদী হাসান বলেন, আটক সবাই বাংলাদেশি বলে প্রাথমিকভাবে জানান গেছে। তাঁদের কেউ কেউ এক থেকে ১০ বছর পর্যন্ত ভারতে অবস্থান করছিলেন। তাঁরা ভারতের গুজরাট ও বিহারে ইটের ভাটা, গৃহস্থালি ও রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। তাঁদের বাড়ি কুড়িগ্রামে। তিনি বলেন, তাঁদের একটি বিদ্যালয়ের কক্ষে রাখা হয়েছে। বিস্তারিত নাম ও পরিচয় সংগ্রহ করা হচ্ছে। পরে বিয়ানীবাজার থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নয় গ র ম ব এসএফ বড়ল খ

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের বিএসএফের হাতে আটক ১৯ বাংলাদেশি মৎস্যজীবী

অবৈধভাবে ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশের অভিযোগে ১৯ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের উত্তাল নদীতে দীর্ঘক্ষণ ধাওয়া করে তাদের আটক করা হয়।  ধৃত মৎসজীবীরা বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলার পুরালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। মাছ ধরার ট্রলার ও জালসহ তাদেরকে আটক করা হয়। 

আরো পড়ুন:

কলকাতায় সম্মিলিত সেনা সম্মেলন উদ্বোধন নরেন্দ্র মোদির

অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি নরম হওয়ার দিন শেষ: ট্রাম্প

বিএসএফ জানায়, রবিবার সীমান্তের সুন্দরবন অংশে রুটিন টহল দেয়ার সময় গোসাবা রেঞ্জের বাঘমারি জঙ্গল এলাকায় বাংলাদেশি অবৈধ ট্রলারের উপস্থিতি নজরে আসে বিএসএফ জওয়ানদের। বিএসএফ জওয়ানদের পেট্রোল বোট ট্রলারটির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতেই ট্রলারটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। দ্রুততার সঙ্গে ট্রলারের পিছু ধাওয়া করা হয়। দীর্ঘক্ষণ ধাওয়া করে পরবর্তীতে পাকড়াও করা হয় বাংলাদেশি ট্রলারটিকে। অবৈধ অনুপ্রবেশ এর অভিযোগে আটক করা হয় এতে থাকা ১৯ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে। বাজেয়াপ্ত করা হয় ট্রলারটি।

বিএসএফ আরো জানায়, আটকের পর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগের বিপরীতে কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারেনি। ফলে জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাদের স্থানীয় সুন্দরবন কোস্টাল থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আজ সোমবার তাদের আলিপুর আদালতে তোলা হবে।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ
  • সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
  • সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের বিএসএফের হাতে আটক ১৯ বাংলাদেশি মৎস্যজীবী